রবিবার, ১৩ জুলাই, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


মেহ্দী আজাদ মাসুম

প্রকাশিত: নভেম্বর ১০, ২০২৪, ১২:০৭ এএম

নিরাপদেই চার মন্ত্রীর সম্পদ

মেহ্দী আজাদ মাসুম

প্রকাশিত: নভেম্বর ১০, ২০২৪, ১২:০৭ এএম

ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

# কাদের, কামাল, হাছান ও বিপুর ব্যাংক হিসাব জব্দ হলেও বসানো হয়নি রিসিভার
# ছাত্র-জনতার ক্ষোভ-অসন্তোষ
# দোষী সাব্যস্ত না হওয়া পর্যন্ত সম্পদ ক্রোক নয়, রিসিভার বসাতে পারে: শাহদীন মালিক


ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর স্থল ও আকাশপথে পালিয়ে যান দেশের আলোচিত-সমালোচিত দুর্নীতিবাজ মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও সংসদ সদস্যরা।

এদের কেউ কেউ আবার পালাতে গিয়ে ধরাও পড়েন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে। রিমান্ড শেষে তারা আছেন কারাগারে। এই দুর্নীতিবাজদের অন্যতম সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ভারতে ও সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহামুদ আছেন বেলজিয়ামে। তারা গত ৫ থেকে ১০ আগস্টের মধ্যে পালিয়ে দেশ ছাড়েন। তবে এখনো খোঁজ মেলেনি পতিত সরকারের সাবেক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এবং জ্বালানি ও  বিদ্যুৎ খাত লুটপাটের বরপুত্র নসরুল হামিদ বিপুসহ আরও অনেক দুর্নীতিবাজের। পালিয়ে থাকা সাবেক এই চার মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীর দুর্নীতির অর্থে গড়ে তোলা বিত্তবৈভব এখনো রয়েছে নিরাপদে সুরক্ষিত।

পলাতক অবস্থায়ই পাচ্ছেন ব্যবসা-বাণিজ্যের লভ্যাংশ। এদের ব্যাংক হিসাব জব্দের নির্দেশ দেওয়া হলেও অঢেল সম্পদ দেখভালে বসানো হয়নি রিসিভার বা প্রশাসক। এ নিয়ে ক্ষোভ ও অসন্তোষ সৃষ্টি হয়েছে সরকার পতনের আন্দোলনে অংশ নেওয়া ছাত্র-জনতার মাঝে। অনুসন্ধানে নেমে এসব তথ্য জানা যায়।

গণঅভ্যুত্থানে পতন হওয়া আওয়ামী লীগ সরকারের লুটপাট ও দুর্নীতিবাজদের মধ্যমণি ওবায়দুল কাদের, আসাদুজ্জামান খান কামাল, হাছান মাহামুদ ও নসরুল হামিদ বিপু ওয়ান ইলেভেনের পর শেখ হাসিনা সরকারের সাড়ে ১৫ বছরে তারা কত হাজার কোটি টাকা ও সম্পদের মালিক হয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্র-কানাডা-দুবাই-বেলজিয়াম-ইতালি ও ভারতে কত টাকা পাচার করেছেন, তার হিসাব কষা মুশকিল। পলাতক এই চার দুর্নীতিবাজের জব্দ করা ব্যাংকে কত টাকা আছে, প্রকৃতপক্ষে তা জানা না গেলেও রাজধানী ঢাকাসহ দেশের অভ্যন্তরে যে পর্বত সমান সম্পদ গড়েছেন, তা বেরিয়ে আসছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ও গণমাধ্যমের অনুসন্ধানে।

বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে সংবিধান বিশেষজ্ঞ ও বিশিষ্ট আইনজীবী ড. শাহদীন মালিক রূপালী বাংলাদেশকে বলেন, দোষী সাব্যস্ত না হওয়ার আগে কারো সম্পদ সরকার ক্রোক করতে পারে না। শাস্তি হওয়ার পর এটা পারে। ব্যাংক হিসাব জব্দ করতে পারে বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স উইং (বিএফআইইউ), কারণ সেটা তাদের একটা আইন আছে, সেই আইনের বলেই এটা করে। তবে সরকার প্রতিষ্ঠান বন্ধ না করে চলমান রাখতে রিসিভার বসাতে পারে।

ওবায়দুল কাদের: সাবেক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের আওয়ামী লীগের তিনবারের সাধারণ সম্পাদক। ক্ষমতার দিক থেকে ছিলেন শীর্ষে। ক্ষমতাধর এই মন্ত্রী শুধু নিজেই নন, অবৈধ আয়ে তার আশপাশের সবাই অঢেল অর্থের মালিক হয়েছেন। এপিএস, পিআরও, বাসা এবং অফিসের দুজন পিও, গাড়িচালক, বাসার পিয়ন সবাই শতকোটি টাকার অর্থ-সম্পদের মালিক হয়েছেন। আর বড় স্যার ওবায়দুল কাদের কত অর্থ-সম্পদের মালিক তা স্বাভাবিকভাবেই অনুমেয়। তবে তিনি যে শুধু একাই অবৈধ সম্পদের মালিক হয়েছেন তা নয়, দলীয় নেতাকর্মী, ক্যাডার সাদ্দাম বাহিনী, চ্যালা-চামুন্ডা, নায়িকা বান্ধবীদেরও সচ্ছল-স্বাবলম্বী করে দিয়েছেন। দুদক ইতিমধ্যেই ওবায়দুল কাদেরের অবৈধ সব অর্থ সম্পদের তদন্ত শুরু করেছে।

দুদকের অনুসন্ধান বলছে, ওবায়দুল কাদের রাজধানীর ধানমন্ডিতে যে বাড়িটিতে থাকেন, সেটি ছাড়াও সরকারি আটটি প্লট স্ত্রী, ভাগ্নে ও নিজের নামে করেছেন। এ ছাড়া ধানমন্ডি উত্তরা ও খিলগাঁওয়ে তিনটি ফ্ল্যাট, ঝিলমিল প্রকল্পে চারটি প্লট ও উত্তরায় একটি বাড়ি রয়েছে তার নিজের নামে। সবচেয়ে বেশি প্লট ১১টি রয়েছে নসরুল হামিদ বিপুর সাম্রাজ্য কেরানীগঞ্জে প্রিয় প্রাঙ্গণ প্রকল্পে। এই প্লটগুলো সব ৫ কাঠার। আছে বসুন্ধরায়ও একটি ফ্ল্যাট। 

অনুসন্ধান সূত্রে আরও জানা গেছে, ব্র্যাক ব্যাংক ও সিটি ব্যাংকসহ তার ৯টি ব্যাংক হিসাবে রয়েছে অঢেল টাকা। যুক্তরাষ্ট্র ও দুবাইতে অর্থ পাচারের অভিযোগ রয়েছে। তবে এমন অবস্থা বুঝতে পারলে ব্যাংক থেকেও সরিয়ে ফেলতেন অবৈধ টাকা। তার ৯টি ব্যাংক হিসাবই জব্দ করা হয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, সিঙ্গাপুর ও ব্যাংককের পাতায়ায় ওবায়দুল কাদের তার ভাগ্নের নামে করেছেন মদের বার ও শপিং জোন। তবে দেশের বাড়ি নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে তেমন কোনো সম্পদ গড়েননি এই ক্ষমতাধর আওয়ামী লীগ নেতা। তদন্ত সংশ্লিষ্টরা বলেছেন, দেশে ওবায়দুর কাদেরের যত অবৈধ সম্পদ রয়েছে, তার দলিলের সব কপি অনুসন্ধানে নামা দুদক কর্মকর্তাদের হাতে আছে।

আসাদুজ্জামান খান কামাল: তেজগাঁও-ফার্মগেট এলাকার ফুটপাতের ব্যবসায়ী থেকে ওয়ার্ড কাউন্সিলর এবং সব শেষে হাতিরঝিল-তেজগাঁও নির্বাচনি এলাকা থেকে বিনা ভোটের নির্বাচনে পরপর তিনবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এলাকায় তার তেমন জনপ্রিয়তা না থাকলেও শেখ কামালের বন্ধু হিসেবে ২০১৫ সালে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পেয়ে মন্ত্রী ছিলেন টানা ৯ বছর। ৪ আগস্ট গভীর রাত পর্যন্ত ছিলেন মন্ত্রণালয়ে তার কার্যালয়ে। সরকারের পতনের পর ভারতে পালিয়ে যান বলে অভিযোগ রয়েছে। এর পরই ভাগ্যের চাকা ঘুরতে শুরু করে ঘোড়দৌড়ের গতিতে। মন্ত্রণালয়ের সব অনিয়ম, দুর্নীতি আর লুটপাট সিন্ডিকেটের নেতৃত্বেও ছিলেন তিনি। তার বিরুদ্ধে ওঠা দুর্নীতির সব অভিযোগের প্রমাণ পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

দুর্নীতির বরপুত্র আসাদুজ্জামান খান কামালকে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পক্ষ থেকে দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হলেও নিষেধাজ্ঞার আগেই তিনি ভারতে পালিয়ে যান বলে অভিযোগ উঠেছে। তবে দেশে তার অবৈধ আয়ের হাজার হাজার কোটি টাকার সম্পদ রয়েছে সুরক্ষিত। অভিযোগ রয়েছে, সাবেক এই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী দুর্নীতি, অনিয়ম আর লুটপাটে গা ভাসিয়েছিলেন। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রধান হিসেবে পঞ্চপাণ্ডবের নেতৃত্ব দিয়ে আসাদুজ্জামান খান কামাল গড়েছেন অন্তত ১০ হাজার কোটি টাকার সম্পদ। তার ক্ষমতার ব্যবহার করে ছেলে সাফি মুদ্দাসির খান জ্যোতিও হাজার কোটি টাকার মালিক হয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্রে পুরোনো ভবন কিনে সংস্কার করে বিক্রির ব্যবসায় লগ্নি করেছেন অন্তত ৫০০ কোটি টাকা।

আসাদুজ্জামান খান কামালের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও দুবাইয়ে অর্থ পাচারের অভিযোগ রয়েছে। দুবাইয়ে স্বর্ণের ব্যবসায় রয়েছে অর্থলগ্নী। এ ছাড়া ঢাকার তেজগাঁও ছাড়া দাউদকান্দি ও কুমিল্লায় গড়েছেন সম্পদের পাহাড়। তার শ্যালক লতিফ ভূঁইয়া দুলাভাইয়ের ক্ষমতায় হাজার কোটি টাকার সম্পদের মালিক হয়েছেন। তবে লুটপাট আর অবৈধ আয়ে হাতে হাত ধরে এগিয়েছেন ঢাকা থেকে কুমিল্লায়। লতিফ ভূঁইয়া নিজেও সাম্রাজ্য গড়ে তুলেছেন তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল, ধানমন্ডি, বরুড়া ও মনোহরপুরে। তদন্তে নামা দুদকের কর্মকর্তারাও শালা-দুলাভাইয়ের অবৈধ সম্পদের তালিকা তৈরিতে হিমশিম খাচ্ছেন।

ঢাকা ও কুমিল্লায় অনুসন্ধান থেকে জানা যায়, আসাদুজ্জামান খান কামাল, লতিফ ভূঁইয়া কামালসহ তাদের পরিবারের অবৈধ আয়ের মূল উৎস্যই ছিল পুলিশে নিয়োগ, বদলি, পদায়ন ও পদোন্নতি, ফায়ার সার্ভিস ও জেল পুলিশে নিয়োগ, অস্ত্র ও মদের বারের লাইসেন্স, নতুন গাড়ি আমদানি, দখল বাণিজ্য, নির্মাণকাজের ঠিকাদারি, কারওয়ান বাজার, তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল ও বাস টার্মিনাল নিয়ন্ত্রণ। অভিযোগ রয়েছে, প্রতিদিন বস্তায় ভরে টাকা যেত কামালের ধানমন্ডির বাসায়।

হাছান মাহামুদ: ড. হাছান মাহামুদ পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী। ৫ আগস্টের অভ্যুত্থানের পর দেশ থেকে পালিয়ে যান বেলজিয়ামে। চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ায় তিনি ছিলেন অঘোষিত রাজা। তারা তিন ভাই। এই তিন ভাইয়ের কথার বাইরে যাওয়ার সুযোগ ছিল না উপজেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসনের। ইউপি চেয়ারম্যানরাও ছিলেন একান্ত অনুগত। বন বিভাগের অবস্থা ছিল খুবই শোচনীয়। চোখের সামনে প্রকাশ্যে হাছান মাহমুদের ভাইয়েরা জমি দখল করলেও কিছুই করতে পারেনি। মামলা-হামলা থেকে নির্যাতনের যত মাধ্যম আছে প্রতিপক্ষের প্রতি সবই অবলম্বন করতেন তারা। আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনকালে বনের রাজা বনে যান তিন ভাই। একের পর এক দখলে নেন বন বিভাগের দুই শতাধিক একর জায়গা। বনের জায়গা দখলে মূল কারিগর হিসেবে ছিলেন হাছান মাহমুদ। দখল করা জায়গায় গড়ে তোলেন রেস্টুরেন্ট থেকে শুরু করে মাছ ও গয়াল খামার। গড়ে তোলা হয় মাল্টাসহ বিভিন্ন ফলের বাগান। নিজ নির্বাচনি এলাকা চট্টগ্রাম-৭ (রাঙ্গুনিয়া-বোয়ালখালী আংশিক) এলাকায় বনের জায়গা কব্জায় নেওয়ার পরও থামেননি। পাশের ফটিকছড়ি উপজেলার শ্বশুরবাড়িতে বন বিভাগের জমি দখলে নেন। বনের গাছ কেটে নিয়ে স্তূপ করে রাখেন ফটিকছড়ির শ্বশুরবাড়িতে। বেপরোয়া বনের জায়গা দখলের মাধ্যমে তিনি ও পরিবারের সদস্যরা পরিচিতি লাভ করেন ‘বনখেকো’ হিসেবে। ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় টুঁ শব্দ করতে না পারলেও পট পরিবর্তনের পর বেরিয়ে আসছে দখল বাণিজ্যের নানা তথ্য। 

নসরুল হামিদ বিপু: পলাতক সাবেক বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপুর হাজার কোটি টাকার ব্যবসা-বাণিজ্য রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও সিঙ্গাপুরসহ কয়েকটি দেশে। বিদ্যুৎ খাত থেকে দুই হাতে হরিলুট করে হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছেন তিনি। বিদেশে টাকা পাচার ছাড়াও  ঢাকার কেরানীগঞ্জে তার মালিকানাধীন আবাসন প্রকল্প ‘প্রিয় প্রাঙ্গণ’ টিকিয়ে রাখতে সরকারি আবাসন ‘ঝিলমিল’ প্রকল্পের কার্যক্রম বছরের পর বছর ঝুলিয়ে রাখেন তিনি। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) তদন্তকারী কর্মকর্তারা তার অবৈধ সম্পদের তথ্যে অবাক হয়েছেন।

আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে বিদ্যুৎ খাতের হরিলুটের অন্যতম উৎস ছিল কুইক রেন্টাল পাওয়ার প্ল্যান্ট বা ভাড়ার বিদ্যুৎকেন্দ্র। বিনা টেন্ডারে প্রয়োজনের চেয়ে দ্বিগুণের বেশি পাওয়ার প্ল্যান্টের অনুমোদন দেওয়া হয়। এসব উচ্চমূল্যের বিদ্যুৎকেন্দ্র বসিয়ে রেখে চুক্তি অনুযায়ী বছরের পর বছর ক্যাপাসিটি চার্জ দিতে হয়েছে হাজার কোটি টাকা। ২০০৮-০৯ থেকে ২০২৩-২৪ অর্থবছর পর্যন্ত ১৬ অর্থবছরে পরিশোধ করা হয়েছে এক লাখ ৪০ হাজার কোটি টাকা।

এর সিংহভাগই গেছে জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী ও জ্বালানি উপদেষ্টাসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের পকেটে। এই ধরনের তথ্য পেয়ে তদন্ত শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। দুদকের তদন্তসংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা বলেছেন, সাবেক বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপুর বিরুদ্ধে এতদিন কেউ মুখ খুলতে সাহস না পেলেও আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর এখন তার ভয়াবহ দুর্নীতির নানা তথ্য ফাঁস হতে শুরু করেছে।

দুদকের তদন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে একটি কোম্পানি খুলে ওই কোম্পানির মাধ্যমে নসরুল হামিদ বিপুর হাজার কোটি টাকা পাচারের অভিযোগও পাওয়া গেছে। ওই কোম্পানি প্রতিষ্ঠাকালে বিপু তার নিজের যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডায় অবস্থিত বাসভবনের ঠিকানা ব্যবহার করেছেন। পাঁচ বেডরুমের ওই বাসার বাজারমূল্য ৩৬ লাখ ১৭ হাজার ৪১৫ মার্কিন ডলার।

বাংলাদেশি টাকায় এর মূল্য ৪২ কোটি ৩৪ লাখ টাকা। সেখানে শরীফ হায়দার নামে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে স্ত্রী সীমা হামিদকে নিয়ে ‘পাথ ফাইন্ডার ইন্টারন্যাশনাল’ নামে একটি ট্রেড করপোরেশনের লাইসেন্স নেন। এই করপোরেশনের আওতায় মোবিল গ্যাস স্টেশনসহ দেড় ডজনের মতো ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন। ফ্লোরিডায় অবস্থিত ওই গ্যাস স্টেশনটি কেনা হয় কয়েক মিলিয়ন মার্কিন ডলার দিয়ে। আর শরীফ হায়দারের মাধ্যমেই হাজার কোটি টাকা যুক্তরাষ্ট্রে পাচার করেছেন বিপু।

দুদক সূত্র জানায়, কক্সবাজারের মাতারবাড়িতে দেশের বৃহত্তম এলপিজি টার্মিনাল নির্মাণের কাজে জাল-জালিয়াতি ও দুর্নীতির চাঞ্চল্যকর তথ্য পাওয়া গেছে।

পাওয়ারকো ইন্টারন্যাশনাল নামে একটি কোম্পানির যৌথ ব্যবসায়িক জোট বা কনসোর্টিয়াম কক্সবাজারের মাতারবাড়িতে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অধীন বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) সঙ্গে পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপের ভিত্তিতে ৩০৫ মিলিয়ন ডলার (আড়াই হাজার কোটি টাকা) ব্যয়ে টার্মিনালটি নির্মাণে অংশ নেয়। মাত্র ১০০ ডলার পরিশোধিত মূলধনের একটি কোম্পানি পাওয়ারকো ইন্টারন্যাশনাল কীভাবে ৩০৫ মিলিয়ন ডলারের কাজ পায় তা নিয়ে তখনই প্রশ্ন ওঠে।

আরবি/জেডআর

Shera Lather
Link copied!