বৃহস্পতিবার, ০১ মে, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


মাইনুল হক ভূঁঁইয়া

প্রকাশিত: ডিসেম্বর ১৬, ২০২৪, ০১:০২ এএম

বিজয় দিবসের ভাতা পাননি বীর মুক্তিযোদ্ধারা

মাইনুল হক ভূঁঁইয়া

প্রকাশিত: ডিসেম্বর ১৬, ২০২৪, ০১:০২ এএম

বিজয় দিবসের ভাতা পাননি বীর মুক্তিযোদ্ধারা

ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

ঊনিশ দিন পেরিয়ে গেলেও বীর মুক্তিযোদ্ধারা বিজয় দিবসের ভাতা পাননি। প্রতি বছর এ উপলক্ষে জীবিত মুক্তিযোদ্ধাদের উৎসাহিত করার জন্য জনপ্রতি পাঁচ হাজার টাকা ভাতা হারে দিয়ে থাকে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়। এবার গত ২৭ নভেম্বর ২০২৪ এই অর্থ ছাড় করে মন্ত্রণালয়। যার স্মারক নং- ৪৮.০০.০০০০.০০৬.২০.০৫৪.২৩.১৬৭। ভাতা না পেয়ে বেশ ক’জন বীর মুক্তিযোদ্ধা অভিযোগ করে বলেন, মঞ্জুরি যখন দেওয়াই হলো, সেটি বিজয় দিবসের আগে না পেলে পুরো উদ্দেশ্যই তো ব্যাহত হলো। আনন্দের পরিবর্তে পরিণত হলো নিরানন্দে।

সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয়, ঊনিশ দিনের মাথায়ও বীর মুক্তিযোদ্ধারা যখন বিজয় দিবসের ভাতাটি পেলেন না মন্ত্রণালয়ের সেদিকে বিন্দুমাত্র ভ্রুক্ষেপ নেই। তারা অর্থ ছাড় করেই দায়িত্ব সারেন, কখনো সামান্যতম তদারকিটুকুও করেন না। ফলে, দায়িত্বশীল জায়গাগুলোতে তৈরি হয় দীর্ঘসূত্রতা। তারা তাদের খেয়ালখুশি মতো প্রার্থিত অর্থ ব্যাংকগুলোতে পাঠান। এ অবস্থা পনেরো বছর চলেছে, চলছে এখনো।

পতিত আওয়ামী সরকারের আমলে এই বিশেষ ভাতাটি ছাড়করণের এক মাস পর বীর মুক্তিযোদ্ধারা পেয়েছেন এমন নজির ভূরিভূরি। কখনো কখনো এ ভাতা পেতে পেতে জানুয়ারির মাঝামাঝি অব্দি হয়ে গেছে। কিন্তু সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের যেমন মাথাব্যথা ছিল না, তেমনি কেউ টুঁ শব্দটি করতে পারেননি। এই ২০২৪ সালে বৈষম্যবিরোধী অন্তর্বর্তী সরকারের আমলে এসেও একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হলো। উদ্বিগ্ন বীর মুক্তিযোদ্ধারা সংবাদকর্মীদের কাছে এবং সংশ্লিষ্ট ব্যাংকে খোঁজ-খবর নিতে নিতে হয়রান-পেরেশান। 

মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপসচিব (বাজেট) ডা. মো. আসাদুজ্জামানের কাছে সার্বিক বিষয়ে জানতে চেয়েছিল রূপালী বাংলাদেশ। তিনি বললেন, ‘আমরা তো বহু আগেই অর্থ ছাড় করে দিয়েছি। কোথায় বিলম্ব হচ্ছে, তা তো বলতে পারব না, বলে দিন ডিসি-ইউএনও সাহেবদের কাছে খোঁজ নিতে।’ 

এ বিষয়ে মন্ত্রণালয়ের সচিব ইশরাত চৌধুরী রূপালী বাংলাদেশকে বলেন, বিষয়টি দুঃখজনক। কেউ ভাতা না পেয়ে থাকলে পেয়ে যাবেন।

তালিকা সংস্কার: এদিকে বর্তমান সরকার মুক্তিযোদ্ধা তালিকা সংস্কারের ঘোষণা দিয়ে কাজে হাত দেয়। কিন্তু কিছুদিন একটু একটু করে এগিয়ে আপাতত থেমে গেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক উপদেষ্টা বীর মুক্তিযোদ্ধা ফারুক-ই আজম গত ১১ ডিসেম্বর এক সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন, নতুন করে আর মুক্তিযোদ্ধা তালিকা হবে না। এটি অত্যন্ত দুরূহ কাজ। তবে যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ পাওয়া যাবে তাদের গেজেট বাতিল হবে, ভাতা বন্ধ হবে এবং আদালতের পরামর্শ অনুযায়ী শাস্তির আওতায় আনা হবে।

তিনি আরও বলেন, এখানে নানা রকমের তালিকা আছে, অনেক অভিযোগ আছে, একটু সময় তো লাগবেই।

উপদেষ্টা পরিসংখ্যান তুলে ধরে বলেন, বর্তমানে ভাতাভোগী বীর মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা ১ লাখ ৯৬ হাজার ৪৫৪। এর মধ্যে বীরাঙ্গনা ৪৬৪ জন। যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা ৫ হাজার ৮৯৫ জন। শহিদ বীর মুক্তিযোদ্ধা ৫ হাজার ৩৩৩ এবং খেতাবপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা ৩৬৮। সব মিলিয়ে মোট ভাতাপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা ২ লাখ ৮ হাজার ৫০ জন।

তিনি জানান, ২ হাজার ১১১ জন মুক্তিযোদ্ধা তালিকা থেকে বাদ যাবেন। মন্ত্রণালয় থেকে ১২ বছর ৬ মাস বয়স নির্ধারণ করা আছে। কিন্তু তাদের বয়স এর চেয়েও কম।

উপদেষ্টা বলেন, এটি জাতির সঙ্গে প্রতারণা। এদের শাস্তি হওয়া উচিত।

তিনি আরও জানান, আমাদের চেষ্টা থাকবে প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের মর্যাদা যেন ক্ষুণ্ন না হয়। তবে তাদের একটি সুযোগ দিতে ইনডেমনিটি দেওয়া হতে পারে। তারা যদি স্বেচ্ছায় দোষ স্বীকার করে চলে যান, তাহলে সাধারণ ক্ষমা পেতে পারেন। নাহলে অভিযুক্ত করা হবে।

মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বশীলদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, নতুন করে চেষ্টার পরিবর্তে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের নোটিশ বোর্ডে টানিয়ে দেওয়া হবে জনগণের জ্ঞাতার্থে। জনগণ তালিকা দেখে কাউকে ভুয়া বলে শনাক্ত করলে তদন্তসাপেক্ষে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

কোটায় সরকারি চাকরি: অন্যদিকে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় সরকারি চাকরিজীবীদের তালিকা প্রণয়নের কাজ চলছে। বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগ থেকে পাঠানো তালিকায় এখনো পর্যন্ত সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় চাকরিতে আছেন ৮৪ হাজার ৫৬ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী।

মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব ইশরাত চৌধুরী এ তথ্য জানিয়ে বলেন, যদি ভুয়া সনদধারী কাউকে পাওয়া যায় তাহলে তাৎক্ষণিক শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আরবি/জেডআর

Link copied!