মঙ্গলবার, ১৩ মে, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


এফ এ শাহেদ

প্রকাশিত: মে ১৩, ২০২৫, ০২:১৩ এএম

জাতীয় পার্টি নিষিদ্ধের দাবি জোরালো হচ্ছে

এফ এ শাহেদ

প্রকাশিত: মে ১৩, ২০২৫, ০২:১৩ এএম

জাতীয় পার্টি নিষিদ্ধের দাবি জোরালো হচ্ছে

জাতীয় পার্টি লোগো ।। ছবি: সংগৃহীত

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকার ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার ৯ মাস পর নিষিদ্ধ হয়েছে আওয়ামী লীগ। এবার আওয়ামী লীগের দীর্ঘদিনের মিত্র জাতীয় পার্টিকেও (জাপা) নিষিদ্ধ করার জোরালো দাবি তুলছে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল। সরকারি উদ্যোগে দলটিকে দ্রুত নিষিদ্ধের দাবিতে নানা কর্মসূচিও দিচ্ছে। এ ছাড়াও জাতীয় পার্টির শীর্ষ নেতাদের গ্রেপ্তারের দাবিও তাদের।

জুলাই অভ্যুত্থানের পর শুরুতে ফুরফুরে মেজাজে ছিল আ.লীগের নির্বাচনি জোটসঙ্গী জাতীয় পার্টি। তবে সেই পরিস্থিতি বদলাতে সময় লাগেনি। দেশের পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে ১৯৮৬ সালের ১ জানুয়ারি নতুন রাজনৈতিক ধারা সৃষ্টির প্রত্যয় নিয়ে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের হাতে গঠিত এই দলটি এখন রাজনীতিতে একঘরে। পাশাপাশি রাজনৈতিক দলগুলোর নিষিদ্ধের চাপে এখন দিশেহারা দলটি। এমন চাপে দলটির রাজনৈতিক কার্যক্রমও নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়েছে। বনানী অফিসের চার দেয়ালের ভেতরে নামমাত্র কর্মসূচি ও প্রেস রিলিজে চলছে তাদের কার্যক্রম।

আওয়ামী লীগের রাজনীতি নিষিদ্ধ ঘোষণার ১২ ঘণ্টা পার না হতেই জাতীয় পার্টির নিবন্ধন বাতিলের দাবি করেছে গণঅধিকার পরিষদ। গতকাল সোমবার জাপাসহ ১৪ দলীয় জোটভুক্ত দলগুলোর নিবন্ধন বাতিলের জন্য প্রধান নির্বাচন কমিশনারের (সিইসি) কাছে দাবি জানিয়েছে গণঅধিকার পরিষদ। 

এ বিষয়ে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেন, আওয়ামী লীগের ফ্যাসিবাদ হয়ে ওঠা কিংবা স্বৈরাচার হয়ে ওঠার জন্য সহযোগিতা করেছে জাতীয় পার্টি। সেই অপরাধে জাতীয় পার্টির বিচার হওয়া উচিত। যারা সরকারের অপকর্মের সাথে জড়িত তাদেরও শাস্তির আওতায় আনা উচিত। তবে নিষিদ্ধের বিষয়টি অনেক গভীর। নিষিদ্ধের বিষয়টি ভেবেচিন্তে নেওয়া প্রয়োজন। ভালো করে চিন্তাভাবনা না করে নিষিদ্ধ করতে থাকলে দেশে তো আর রাজনৈতিক দল থাকবে না। তাতে করে সংকট আরও বাড়বে।

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামের প্রচার-মিডিয়া সম্পাদক মু. আতাউর রহমান সরকার রূপালী বাংলাদেশকে বলেন, রাজনৈতিক দল হিসেবে জাতীয় পার্টি নিষিদ্ধ হবে কি নাÑ এ বিষয়ে জামায়াতের কোনো বক্তব্য নেই। এটি সম্পূর্ণ সরকারের বিষয়।

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সিনিয়র যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক আবদুল হান্নান মাসউদ রূপালী বাংলাদেশকে বলেন, জুলাই-আগস্টের গণআন্দোলন ঠেকাতে আওয়ামী লীগ সরকারের দমনপীড়ন নিয়ে জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক কমিশন প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। সেই প্রতিবেদন ভয়ংকর বীভৎসতার তথ্যসংবলিত। প্রতিবেদনে পরিষ্কারভাবে আওয়ামী লীগের নেতাদের বিরুদ্ধে গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের প্রমাণ উত্থাপন করেছে জাতিসংঘ। সুতরাং আ.লীগের অপকর্ম প্রমাণিত। তবে জাতীয় পার্টির অপকর্ম নিশ্চিতভাবে এখনো প্রমাণিত হয়নি। সেক্ষত্রে, আ.লীগের আমলে জাতীয় পার্টি ১৪, ১৮ এবং ২৪ এর নির্বাচনে কি ধরনের ভূমিকা রেখেছিল এবং তাদের খুন হত্যা নির্যাতনের সঙ্গে সম্পৃক্ততা কতটুকু ছিল যাচাই-বাছাই করতে তদন্ত কমিটি হবে। তদের তথ্য অনুযায়ী যতটা দোষী জাতীয় পার্টি হবে তার বিচার দাবি করবে এনসিপি।

গণ অধিকার পরিষদ সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাসান আল মামুন বলেন, জুলাই গণহত্যায় জড়িত থাকার অভিযোগে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে আওয়ামী লীগের বিষয়ে যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার, একইভাবে তাদের জোটসঙ্গী জাতীয় পার্টিসহ ১৪ দল বাংলাদেশের নাগরিকদের ওপর চালানো গণহত্যাকে পূর্ণ সমর্থন জানিয়ে গণহত্যাকারীদের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে। দেশের গণতন্ত্র ধ্বংস করে গত ১৬ বছর ধরে আওয়ামী লীগ যে একদলীয় ফ্যাসিবাদী শাসন কায়েম করেছে, তার অন্যতম সহযোগী ও বৈধতা প্রদানকারী হিসেবে সক্রিয় ছিল জাতীয় পার্টিসহ জোটভুক্ত অন্যান্য দল। বিগত তিনটি একতরফা নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে সহযোগিতা করেছে ১৪ দল এবং জাতীয় পার্টি। আওয়ামী লীগ ও তাদের জোটসঙ্গী প্রতিটি দল গণহত্যা ও রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে অভিযুক্ত। এসব দলের নিবন্ধন বাতিল করে তাদের নিষিদ্ধ ঘোষণা এবং যথাযথ শাস্তির মুখোমুখি করতে হবে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক কাজী মাহবুবুর রহমান রূপালী বাংলাদেশকে বলেন, বিগত ১৫ বছর আওয়ামী ফ্যাসিবাদের দুঃশাসনের সঙ্গী ছিল এই জাতীয় পার্টি। ফ্যাসিবাদী দুঃশাসনের জন্য আওয়ামী লীগের মতো সমান দায়ী জাতীয় পার্টি। তাদের বিচারের মুখোমুখি করা উচিত রাষ্ট্রের। জনগণ ইতোমধ্যে জাতীয় পার্টিকে প্রত্যাখ্যান করেছে। এখন সরকারের উচিত ফ্যাসিবাদের দোসর হিসেবে জাতীয় পার্টির দায়কে আদালতের মাধ্যমে চিহ্নিত করা।

তিনি আরও বলেন, ফ্যাসিবাদ প্রতিষ্ঠার জন্য আওয়ামী লীগ যতটুকু দায়ী, তার চাইতে কম দায়ী নয় জাতীয় পার্টি। কারণ গত তিনটি নির্বাচন কোন প্রক্রিয়ায় হয়েছে, তা জাতীয় পার্টিও জানে। এর জন্য তারা সরকারের কোনো বিরোধিতা তো করেইনি, বরং তাদের সহযোগিতা করে গেছে।

প্রসঙ্গত, গত ৫ আগস্টের পর জাতীয় পার্টির রাজনীতি অনেকটা বনানীতে দলের চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে চার দেয়ালে বন্দি হয়ে আছে। সেখানে থেকে বিভিন্ন ইস্যুতে গণমাধ্যমে বক্তব্য-বিবৃতি পাঠানো হচ্ছে। এ ছাড়া মাঝেমধ্যে দলের বিভিন্ন ইউনিটের নেতাকর্মীদের সঙ্গে বৈঠক করেন চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের। এর মধ্য গত ১ নভেম্বর দলের চেয়ারম্যান ও মহাসচিবসহ দলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া মামলা প্রত্যাহার এবং  দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণের দাবিতে রাজধানীতে সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েও পালন করতে পারেনি জাতীয় পার্টি। এই কর্মসূচি ঘোষণা দেওয়ার পর জাতীয় পার্টিকে আওয়ামী স্বৈরাচারের দোসর আখ্যা দিয়ে তাদের কার্যালয়ে ভাঙচুর এবং আগুন দেওয়া হয় ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র-শ্রমিক-জনতার ব্যানারে। ওই সময় সারা দেশে দলটির আরও কয়েকটি কার্যালয়ে ভাঙচুর এবং আগুন দেওয়া হয়। মূলত সেই থেকে জাতীয় পার্টির মাঠের রাজনীতিতে এক ধরনের স্থবিরতা চরছে। যদিও ইতিমধ্যে বাংলাদেশে নিযুক্ত কয়েকটি দূতাবাসের হাইকমিশনারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান।

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!