আগামী ১০ জুন ঢাকার বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে এশিয়ান কাপ বাছাইপর্বের গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে মাঠে নামবে বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দল। এই ম্যাচটি কেবল একটি বাছাইপর্বের খেলা নয়, এটি বাংলাদেশের ফুটবল ইতিহাসে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা হতে যাচ্ছে।
কারণ, এই ম্যাচেই লাল-সবুজের জার্সি গায়ে ঘরের মাঠে অভিষেক হচ্ছে ইংল্যান্ড প্রবাসী মিডফিল্ডার হামজা চৌধুরী, কানাডা প্রবাসী ফরোয়ার্ড শমিত সোম এবং ইতালি প্রবাসী ফরোয়ার্ড ফাহমিদুল ইসলামেরও অভিষেকের সম্ভাবনা রয়েছে।
এই তিন প্রবাসী তারকার আগমন দেশের ফুটবলে যে নতুন প্রাণসঞ্চার করেছে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
হামজা চৌধুরীর ঘরের মাঠে অভিষেক
ইংলিশ ক্লাব ফুটবলে নিজেদের জাত চেনানো হামজা চৌধুরী গত ২৫ মার্চ আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের হয়ে অভিষেক করলেও, এবারই প্রথম ঢাকার দর্শকদের সামনে খেলতে নামবেন তিনি।
দর্শকদের প্রত্যাশা অনেক, আর তা পূরণে প্রস্তুত বলেই জানিয়েছেন এই ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার। তার উপস্থিতি নিঃসন্দেহে দলের মাঝমাঠকে আরও শক্তিশালী করবে।
শমিত সোমের লাল-সবুজ যাত্রা শুরু
হামজার পর সেই তালিকায় নাম লেখালেন কানাডা প্রবাসী শমিত সোম। বাংলাদেশের হয়ে খেলার জন্য ফিফার অনুমতিও পেয়ে গেছেন এই তরুণ ফুটবলার। আগামী ১০ জুন সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে ম্যাচটি তার জাতীয় দলের জার্সিতে একেবারেই প্রথম ম্যাচ হতে যাচ্ছে।
বাংলাদেশের হয়ে অভিষেকের আগমুহূর্তে শমিত নিজের উচ্ছ্বাস ও কৃতজ্ঞতার কথা জানিয়েছেন। বাফুফে জানিয়েছে, ফিফার প্লেয়ার্স স্ট্যাটাস কমিটি শমিত সোমকে বাংলাদেশের হয়ে আন্তর্জাতিক ফুটবলে প্রতিনিধিত্ব করার অনুমতি দিয়েছে।
ফাহমিদুল ইসলামের দ্বিতীয় সুযোগ
ইতোমধ্যেই দেশের ফুটবলপ্রেমীদের কাছে পরিচিত নাম ইতালিপ্রবাসী ফুটবলার ফাহমিদুল ইসলাম। গত মার্চে ভারতের বিপক্ষে এশিয়ান কাপ বাছাইয়ের ম্যাচের আগে ক্যাম্পে ডাক পেলেও চূড়ান্ত দলে জায়গা হয়নি তার।
তখন তাকে বাদ দেওয়ায় সমালোচনার ঝড় উঠেছিল। তবে এবার তিনি পেলেন সুখবর। আসন্ন এশিয়ান কাপ বাছাইয়ে সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে ম্যাচের জন্য আবারও বাংলাদেশ দলের ক্যাম্পে ডাক পেয়েছেন ফাহমিদুল।
ডাক পাওয়ার পর ফেসবুকে এক আবেগঘন বার্তায় ফাহমিদুল জানিয়েছেন, তার স্বপ্ন এখনও থেমে যায়নি এবং ভবিষ্যতে লাল-সবুজ জার্সিতে দেশের হয়ে মাঠে নামতে চান তিনি।
তিনি বলেন, ‘দুর্ভাগ্যবশত এবার সবকিছু পরিকল্পনা মতো এগোয়নি। তবে আমি বিশ্বাস করি, যা হয় সেটি কোনো না কোনো কারণে হয় এবং আমার পথচলা কোনোভাবেই শেষ হয়ে যায়নি।
তিনি আরও বলেন, সৃষ্টিকর্তা যদি চান, একদিন আমি লাল-সবুজের জার্সি পরে মাঠে নামব, দেশ ও সমর্থকদের জন্য আমার সবকিছু উজাড় করে দেব। ততদিন পর্যন্ত, সেই স্বপ্ন পূরণের জন্য কঠোর পরিশ্রম এবং প্রচেষ্টা চালিয়ে যাব।’
এদিকে এই তিন তারকার একসাথে সম্ভাব্য অভিষেক দেশের ফুটবলে নতুন উদ্দীপনা তৈরি করেছে। ফুটবলপ্রেমীরা অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন ১০ জুনের ম্যাচের জন্য, যেখানে তারা মাঠে বসে দেখতে পাবেন এই নতুন ত্রয়ীর জাদু।