অলরাউন্ড নৈপুণ্যের স্বীকৃতি এবার এলো নেতৃত্বে। মেহেদী হাসান মিরাজ পেলেন বাংলাদেশের ওয়ানডে দলের পূর্ণকালীন অধিনায়কত্ব।
বৃহস্পতিবার (১২ জুন) বিসিবি তাকে এক বছরের জন্য ওয়ানডে দলের অধিনায়ক হিসেবে ঘোষণা করে।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে তার সাফল্যের পাশাপাশি ঘরোয়া টুর্নামেন্টে অধিনায়কত্বের অভিজ্ঞতা সব মিলিয়ে নেতৃত্বের এই দায়িত্ব এখন স্বাভাবিক হিসেবেই দেখছেন ক্রিকেট বিশ্লেষকরা।
বিপিএলে মিরাজের নেতৃত্বের অভিজ্ঞতা
মেহেদী মিরাজ বিপিএলে অধিনায়কত্ব করেছেন মোট ১৮টি ম্যাচে। রাজশাহী কিংস, চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স এবং ফর্চুন বরিশালের হয়ে তিনি নেতৃত্ব দিয়েছেন।
এই ১৮ ম্যাচের মধ্যে মিরাজের অধীনে দল জয় পেয়েছে ৮টিতে, হারতে হয়েছে ১০টি ম্যাচে। জয়-হার অনুপাতে সাফল্যের হার প্রায় ৪৪ শতাংশ।
বিপিএলের অধিনায়কত্বে মিরাজের পারফরম্যান্স বরাবরই ছিল প্রাণবন্ত। মাঠে সবসময় ইতিবাচক, সতীর্থদের অনুপ্রাণিত করার প্রবণতা এবং নিজের ব্যাট-বল হাতে অবদান রাখার চেষ্টা- এই তিনটি দিকেই তার অবস্থান প্রশংসনীয়।
যদিও ফল সবসময় পক্ষে আসেনি, তবে নেতৃত্বে তার প্রভাব ছিল দৃশ্যমান।
আন্তর্জাতিক অঙ্গনে অভিষেক নেতৃত্ব
জাতীয় দলে মিরাজ এর আগে কয়েকটি ওয়ানডে ম্যাচে ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক হিসেবে মাঠে নামেন। ২০২৪ সালে আফগানিস্তান ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সেসব ম্যাচে তিনি শান্ত অনুপস্থিত থাকায় দায়িত্ব পালন করেন।
সীমিত সুযোগে তার নেতৃত্ব প্রশংসিত এবং তার কৌশলগত সিদ্ধান্তে দলের লড়াকু মনোভাব স্পষ্ট হয়।
অলরাউন্ড পারফরম্যান্সই মূল ভিত্তি
১০৫টি ওয়ানডে ম্যাচে মেহেদী মিরাজের সংগ্রহ ১৬১৭ রান এবং ১১০টি উইকেট।
এই পরিসংখ্যানই বলে দেয়, ব্যাটিং-বোলিং দুই বিভাগেই তিনি দলের জন্য নির্ভরতার নাম।
তার ধারাবাহিকতা এবং মাঠে পেশাদারিত্বই বিসিবিকে তাকে স্থায়ী অধিনায়ক করার সিদ্ধান্ত নিতে সহায়তা করেছে।
চ্যালেঞ্জের সামনে তরুণ অধিনায়ক
বাংলাদেশ ওয়ানডে দলের সামনে শ্রীলঙ্কা, ইংল্যান্ড ও পাকিস্তানের মতো প্রতিপক্ষদের সঙ্গে সিরিজ রয়েছে আগামী এক বছরে।
এই চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলা করে নিজেকে প্রমাণ করতে হবে মিরাজকে।
তার সামনে এখন সুযোগ নেতৃত্বের মধ্য দিয়ে নিজেকে পরিণত করে তোলার।
এদিকে অধিনায়ক হিসেবে মেহেদী মিরাজের প্রথম আন্তর্জাতিক সিরিজ হতে যাচ্ছে বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কা তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ, যা অনুষ্ঠিত হবে জুলাই মাসে কলম্বো ও পাল্লেকেলেতে।
শ্রীলঙ্কার মাটিতে এই সিরিজকে মনে করা হচ্ছে মিরাজের নেতৃত্বগুণ যাচাইয়ের প্রাথমিক মঞ্চ।
এ বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনে মিরাজ বলেন, আমাকে বৃহস্পতিবার ফাহিম স্যার ডেকে নিয়ে বলেছেন, তোমাকে আমরা এ রকম দায়িত্ব দেওয়ার কথা চিন্তা করছি।
আমাদের খুব দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে হবে। যেহেতু সামনে খেলা আছে, ওয়ানডে দলটা ঠিক করতে হবে। আমরা সেভাবে পরিকল্পনা করছি। তখন তিনি আমাকে জানিয়েছেন।’
হ্যাঁ, বাংলাদেশের সামনে আসলেই অনেক খেলা আছে। ২০২৫ সালের বাকি সময়টা ব্যস্ততার মধ্যে দিয়েই যাবে। নাজমুল আবেদীন ফাহিমসহ বাকি বোর্ড পরিচালকরা নিশ্চয়ই এটিও জানেন ২০২৭ সালেই রয়েছে পরবর্তী ওয়ানডে বিশ্বকাপ।
টিম ম্যানেজমেন্ট আশা করছে, তার কৌশলগত পরিকল্পনা, দল গঠনের দৃষ্টিভঙ্গি এবং মাঠের ভেতরের উপস্থিতি নতুনভাবে বাংলাদেশ দলকে সাজিয়ে তুলবে।
আপনার মতামত লিখুন :