আজ ২৭শে আগস্ট ক্রিকেট ইতিহাসের অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যান স্যার ডোনাল্ড জর্জ ব্র্যাডম্যানের জন্মদিন। ১৯০৮ সালে অস্ট্রেলিয়ার কুটামুন্দ্রায় জন্মগ্রহণ করা এই কিংবদন্তি ‘দ্য ডন’ নামেই বেশি পরিচিত। ক্রিকেট মাঠে তার অসাধারণ পারফরম্যান্স এবং অতুলনীয় রেকর্ড আজও তাকে সর্বকালের সেরা ব্যাটসম্যান হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে।
ব্র্যাডম্যানের ক্রিকেট জীবনের সবচেয়ে বড় চমক তার পরিসংখ্যান। মাত্র ৫২টি টেস্ট ম্যাচ খেলে তিনি ৬,৯৯৬ রান করেছেন। তার ব্যাটিং গড় ছিল অবিশ্বাস্য ৯৯.৯৪, যা ক্রিকেট ইতিহাসে আজও অদ্বিতীয়।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে তিনি ২৯টি সেঞ্চুরি এবং ১২টি ডাবল সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছিলেন। এর মধ্যে দুটি ট্রিপল সেঞ্চুরিও রয়েছে। এই পরিসংখ্যানগুলো শুধু সংখ্যা নয়, বরং ব্যাটিংয়ের সর্বোচ্চ দক্ষতার প্রতীক।
ব্র্যাডম্যানের ব্যাটিং কৌশল ছিল তার নিজস্ব সৃষ্টি। ব্যাট না থাকায় ছোটবেলায় তিনি একটি ক্রিকেট স্টাম্প দিয়ে পানির ট্যাঙ্কের গায়ে গলফ বল মেরে অনুশীলন করতেন। সেই অভ্যাস থেকেই জন্ম নিয়েছিল তার অনন্য টাইমিং এবং নিখুঁত শট খেলার ক্ষমতা।
ব্র্যাডম্যান শুধু একজন অসাধারণ ব্যাটসম্যানই ছিলেন না, বরং তিনি ছিলেন এক মানসিক দৃঢ়তার প্রতীক। ১৯৩০-এর দশকে যখন বিশ্বজুড়ে অর্থনৈতিক মন্দা চলছিল, তখন তার সাফল্য অস্ট্রেলিয়ার জনগণের কাছে আশার আলো হয়ে এসেছিল।
তিনি মাঠে তার আগ্রাসী এবং নিয়ন্ত্রিত ব্যাটিং দিয়ে অস্ট্রেলিয়াকে বহু ম্যাচে জয় এনে দিয়েছেন। তার এই পারফরম্যান্স তাকে কেবল একজন খেলোয়াড় হিসেবে নয়, একজন জাতীয় নায়ক হিসেবেও প্রতিষ্ঠা করেছিল।
তার অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে ১৯৪৯ সালে তিনি নাইটহুড উপাধি পান, যা অস্ট্রেলিয়ার ইতিহাসে একমাত্র ক্রিকেটার হিসেবে তারই প্রাপ্য ছিল।
স্যার ডোনাল্ড ব্র্যাডম্যানের অবসর গ্রহণের সাত দশক পরেও তার নাম ক্রিকেট বিশ্বে সমানভাবে প্রাসঙ্গিক। আধুনিক যুগের সেরা ব্যাটসম্যান যেমন শচীন টেন্ডুলকার, রিকি পন্টিং এবং বিরাট কোহলিকেও প্রায়ই ব্র্যাডম্যানের সঙ্গে তুলনা করা হয়।
তার শৃঙ্খলা, রেকর্ড এবং খেলার প্রতি নিবেদন নতুন প্রজন্মের ক্রিকেটারদের আজও অনুপ্রেরণা জোগায়।