ইতিহাসে প্রথমবারের মতো এশিয়া কাপের ফাইনালে মুখোমুখি হতে যাচ্ছে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ভারত ও পাকিস্তান। চলতি আসরে তৃতীয়বারের মতো মাঠে নামবে দুই দল। বৃহস্পতিবার পাকিস্তান-বাংলাদেশ ম্যাচ ছিল কার্যত সেমিফাইনাল।
সেই ম্যাচে বাংলাদেশকে ১১ রানে হারিয়েছে পাকিস্তান। ব্যাটিং ব্যর্থতার খেসারত দিতে হয়েছে টাইগারদের। রোববার এশিয়ার শ্রেষ্ঠত্বের লড়াইয়ে সূর্যকুমার যাদবদের ভারতের মুখোমুখি হবে সালমান আলী আগাদের দল।
বাংলাদেশকে খেলতে হয়েছে টানা দুই দিন। দুবাইয়ে বুধবার ভারতের বিপক্ষে, আর বৃহস্পতিবার পাকিস্তানের বিপক্ষে নেমেছে টাইগাররা। পরপর ম্যাচ খেলার ধকল পড়েছে ক্রিকেটারদের শরীরে। দলের সেরা ব্যাটার লিটন দাস খেলতে পারেননি। ভারতের বিপক্ষে যেমন ছিলেন না, পাকিস্তানের বিরুদ্ধেও ছিলেন না। তার অনুপস্থিতি প্রভাব ফেলেছে ব্যাটিংয়ে। বল হাতে ভালো করলেও ম্যাচ জেতা যায়নি।
টস হেরে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই ধাক্কা খেয়েছে পাকিস্তান। ব্যর্থ হয়েছে টপ ও মিডল অর্ডার। ভারতের বিপক্ষে অর্ধশতরান করা সাহিবজাদা ফারহান ফিরেছেন প্রথম ওভারেই। করেছেন মাত্র ৪ রান। ভারতের বিরুদ্ধেও প্রথম ওভারেই আউট হয়েছিলেন তিনি। সেবার ক্যাচ ছাড়েন অভিষেক শর্মা। আর এবার পয়েন্টে দাঁড়িয়ে থাকা রিশাদ হোসেন ক্যাচ ফেলেননি।
আবারও ব্যর্থ হয়েছেন সাইম আইয়ুব। চলতি আসরে চার ম্যাচ খেলেও রানের খাতা খুলতে পারেননি তিনি। ফখর জামান করেছেন মাত্র ১৩ রান। সালমান আলী আগা করেছেন ১৯। হুসেইন তালাত ফিরেছেন ৩ রানে। ৪৯ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে পাকিস্তান। ম্যাচ জিতলেও দলের ব্যাটিং পারফরম্যান্স বড় প্রশ্ন রেখে গেল।
বাংলাদেশি বোলারদের সামনে পাকিস্তানের ব্যাটিং দেখে মনে হচ্ছিল ১০০ রানও তুলতে পারবে না তারা। কিন্তু ফিল্ডারদের হাতছাড়া করা ক্যাচে ম্যাচে ফিরে আসে পাকিস্তান। শূন্য রানের মাথায় জীবন পান শাহীন আফ্রিদি ও মোহাম্মদ নওয়াজ। শাহীন খেলেছেন ১৯ রানের ইনিংস। নওয়াজ করেছেন ২৫।
ব্যাট হাতে নজর কেড়েছেন মোহাম্মদ হ্যারিসও। করেছেন ৩১ রান। শেষ দিকে ফাহিম আশরাফ করেছেন ১৪ রান। শেষ ৮ ওভারে পাকিস্তান তুলেছে ৮০ রান। লোয়ার অর্ডারের ব্যাটিংয়ে ভর করে ২০ ওভারে ৮ উইকেটে তাদের সংগ্রহ দাঁড়ায় ১৩৫।
লক্ষ্য কম ছিল। জিততে হলে শুরুটা ভালো করতে হতো বাংলাদেশকে। কিন্তু প্রথম বলেই ব্যর্থ হলেন ওপেনার পারভেজ হোসেন ইমন। শাহীন আফ্রিদির প্রথম বলে ছক্কা মারতে গিয়ে ফিরলেন শূন্য রানে। ভালো খেলছিলেন সাইফ হাসান। দুটি ছক্কা মেরেছিলেন তিনি। কিন্তু হ্যারিস রউফের ডেলিভারি বুঝতে না পেরে আউট হন। ভারতের বিপক্ষে একাই লড়েছিলেন সাইফ। তার আউটেই বাংলাদেশ বড় ধাক্কা খায়।
শামীম হোসেন করেছেন সর্বোচ্চ ৩০ রান। বাকিদের কেউই দাঁড়াতে পারেননি। পাকিস্তানের দুই পেসার শাহীন ও রউফ দাপট দেখিয়েছেন। দুজনেই নিয়েছেন তিনটি করে উইকেট। তাদের গতি ও বৈচিত্রের সামনে হার মানতে হয়েছে টাইগারদের। সহায়তা দিয়েছেন স্পিনার সাইম ও নওয়াজ।
মাঝের ওভারগুলোয় গুরুত্বপূর্ণ উইকেট তুলে নিয়েছেন তারা। ব্যাটাররা করেছে একের পর এক ভুল। কেউ সময় নেননি। শুরু থেকেই বড় শট খেলতে গিয়ে সাজঘরে ফিরেছেন সবাই। তাড়াহুড়ো করে উইকেট দিয়ে এসেছে বাংলাদেশ। ১৩৬ রানের লক্ষ্যও তাই তাড়া করতে পারেনি টাইগাররা।
চলতি এশিয়া কাপে এর আগে দুবার মুখোমুখি হয়েছে ভারত-পাকিস্তান। দুবারই জিতেছে ভারত। এবার কি পাকিস্তান বদলা নিতে পারবে? নাকি সূর্যকুমাররা করবেন হ্যাটট্রিক? তবে ফল যা-ই হোক, তিন দিন পর আরও এক মহারণের অপেক্ষায় ক্রিকেটবিশ্ব।
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন