রেফারির শেষ বাঁশি বাজতেই উচ্ছ্বাসে ফেটে পড়ল বাংলাদেশ নারী ফুটবল দল এবং কোচিং স্টাফ। স্বাগতিক মিয়ানমারকে ২-১ গোলে হারিয়ে আগামী বছর অস্ট্রেলিয়ায় অনুষ্ঠিতব্য নারী এশিয়ান কাপে খেলার দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গেছে বাংলাদেশ।
এই জয়টি বাংলাদেশের নারী ফুটবলের জন্য এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করতে চলেছে, কারণ এর আগে কখনোই বাংলাদেশের নারী দল এশিয়ার শীর্ষ পর্যায়ে খেলার সুযোগ পায়নি।
পুরুষ দল ১৯৮০ সালে প্রথম এশিয়া কাপে অংশ নিয়েছিল। বাংলাদেশের পক্ষে দুটো গোলই এসেছে ঋতুপর্ণা চাকমার পা থেকে।
ম্যাচের ১৮ মিনিটেই এগিয়ে যায় বাংলাদেশ। শামসুন্নাহার জুনিয়র বক্সের বাইরে ফাউলের শিকার হলে ফ্রি-কিকের সুযোগ পায় বাংলাদেশ।
ঋতুপর্ণা চাকমার নেওয়া ফ্রিকিক মানবদেয়ালে লেগে ফিরে এলেও বল আবারও তার কাছেই আসে। এবার আর ভুল করেননি তিনি, বাঁ পায়ের কোনাকুনি শটে বল জালে জড়িয়ে বাংলাদেশকে ১-০ তে এগিয়ে দেন।
৭১ মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন ঋতুপর্ণা। মিয়ানমারের ডিফেন্ডার থানদার তুনের ভুল পাসে বল পেয়ে যান তিনি। বাঁ প্রান্ত ধরে কিছুটা এগিয়ে গিয়ে বক্সের বাইরে থেকে নেওয়া তার শট গোলরক্ষকের মাথার ওপর দিয়ে জালে আশ্রয় নেয়, স্কোরলাইন হয় ২-০।
ম্যাচের ৭৫ মিনিটে ব্যবধান ৩-০ করার সুযোগ পেয়েছিল বাংলাদেশ। গোলরক্ষককে কাটিয়ে ফাঁকা গোলপোস্ট পেয়ে যান সুলতানা, কিন্তু তার শট লক্ষ্যে ছিল না।
৮৯ মিনিটে মিয়ানমারের উইন উইন একটি গোল শোধ করলেও, দিনশেষে হতাশায় ডুবতে হয় স্বাগতিকদের।
নারী এশিয়ান কাপ বাছাইপর্বে মোট আটটি গ্রুপ রয়েছে, এবং প্রতিটি গ্রুপের চ্যাম্পিয়ন দল সরাসরি মূল পর্বে খেলার সুযোগ পাবে। 'সি' গ্রুপে থাকা বাংলাদেশ এখন পর্যন্ত দুটি ম্যাচ খেলে ৬ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে অবস্থান করছে।
গ্রুপে তাদের শেষ ম্যাচটি অপেক্ষাকৃত দুর্বল প্রতিপক্ষ তুর্কমেনিস্তানের বিপক্ষে, যেখানে জয় প্রায় নিশ্চিত বলেই ধরে নেওয়া হচ্ছে।
যদি শেষ ম্যাচে বাংলাদেশ হেরেও যায়, তাহলেও এশিয়া কাপে তাদের অংশগ্রহণ নিয়ে খুব বেশি সংশয় থাকবে না। যদি মিয়ানমার তাদের শেষ ম্যাচে বাহরাইনকে হারায়, তবে উভয় দলের পয়েন্ট বাংলাদেশের সমান ৬ হবে।
কিন্তু হেড-টু-হেড রেকর্ডের কারণে বাংলাদেশই গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হিসেবে বিবেচিত হবে।
আজকের বাহরাইন বনাম তুর্কমেনিস্তান ম্যাচটি যদি ড্র হয়, তাহলে আজই বাংলাদেশের এশিয়া কাপে খেলা আনুষ্ঠানিকভাবে নিশ্চিত হয়ে যাবে।
এমনকি বাহরাইন যদি আজকের ম্যাচ জেতেও, তাহলেও বাংলাদেশের এশিয়া কাপ নিশ্চিত হবে।
এর কারণ হলো, বাহরাইন যদি তাদের পরের ম্যাচে মিয়ানমারকে হারায়, তবে তাদেরও ৬ পয়েন্ট হবে।
তবে সে ক্ষেত্রেও বাহরাইনকে হারানোর কারণে হেড-টু-হেড রেকর্ডে বাংলাদেশই গ্রুপ সেরা হয়ে এশিয়া কাপে নিজেদের জায়গা করে নেবে।
আপনার মতামত লিখুন :