বৃষ্টিবলয় ‘স্পিড’ দেশের দক্ষিণ, দক্ষিণপূর্ব, দক্ষিণপশ্চিম অঞ্চল বা উপকূলীয় জেলগুলোতে বেশি প্রভাব ফেলতে পারে। ফলে ভারিবৃষ্টি ও জোয়ারের পানিতে উপকূলীয় এলাকার নিচু এলাকা সাময়িক প্লাবিত হতে পারে।
বুধবার (২০ আগস্ট) রাতে বাংলাদেশ ওয়েদার অবজারভেশন টিম (বিডব্লিউওটি) ফেসবুকে দেয়া এক পোস্টে এ তথ্য জানিয়েছে।
ফেসবুক পোস্টে বলা হয়, এটি একটি আংশিক বৃষ্টিবলয়, মানে এই বৃষ্টিবলয় সারাদেশে সক্রিয় হতে পারবে না। তবে দেশের নির্দিষ্ট কিছু এলাকায় সক্রিয় হয়ে যথেষ্ট বৃষ্টির আশঙ্কা আছে এবং এই বৃষ্টিবলয়টি দেশের প্রায় ৬০ শতাংশ এলাকায় বেশ বৃষ্টি ঘটাতে পারে। এটি চলতি বছরের ১১তম বৃষ্টিবলয় ও ৭ম মৌসুমি বৃষ্টিবলয়।
সর্বাধিক সক্রিয়: খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগ (বিশেষ করে এই সকল বিভাগের যত দক্ষিণে তত বেশি সক্রিয়)।
মাঝারি সক্রিয়: ঢাকা, সিলেট ও ময়মনসিংহ বিভাগ।
কম সক্রিয়: রাজশাহী ও রংপুর বিভাগ।
কাভারেজ: দেশের প্রায় ৬০ শতাংশ এলাকা।
সময়কাল: ২১ আগস্ট থেকে ২৫ আগস্ট।
সর্বাধিক সক্রিয়: ২২ থেকে ২৪ আগস্ট।
কালবৈশাখী: নেই
বজ্রপাত: প্রায় স্বাভাবিক
বন্যা: দেশের দক্ষিণ অঞ্চলের নিচু এলাকা ভারিবৃষ্টি ও জোয়ারের পানিতে সাময়িক প্লাবিত হতে পারে।
একটানা বর্ষণ: আছে বেশি সক্রিয় এলাকায়
ঝড়: এই বৃষ্টিবলয়ে দেশের ওপর বড় কোনো ঝড়ের আশঙ্কা নেই তবে দমকা হাওয়া থাকতে পারে উত্তর বঙ্গোপসাগর, উপকূল ও বৃষ্টিবাহী এলাকায়।
সাগর: বেশিরভাগ সময়েই সাগর বেশ উত্তাল থাকতে পারে সক্রিয় মৌসুমি অক্ষরেখা, সার্কুলেশন/লঘুচাপ ও বায়ুচাপের তারতম্যের কারণে।
পাহাড় ধস: এ সময় চট্টগ্রাম বিভাগের পাহাড়ি এলাকাতে পাহাড় ধধসের বেশ আশঙ্কা রয়েছে। বিশেষ করে বান্দরবান, কক্সবাজার, চট্টগ্রাম ও রাঙ্গামাটি জেলায়।
নোট: বৃষ্টিবলয় ‘স্পিড’ চলাকালীন দেশের আকাশ অধিকাংশ এলাকায় আংশিক থেকে মূলত মেঘলা থাকতে পারে। অধিক সক্রিয় এলাকায় মেঘাচ্ছন্ন থাকতে পারে।
বৃষ্টিবলয় ‘স্পিড’ এ অধিকাংশ বৃষ্টিপাত হতে পারে একটানা ও দীর্ঘস্থায়ী, ঝাঁকে ঝাঁকেও হতে পারে বেশ কিছু এলাকায়। এই বৃষ্টিবলয় চলাকালীন দেশের প্রায় ৪০-৬০ শতাংশ এলাকায় পানি সেচের চাহিদা পূরণ হতে পারে।
এই বৃষ্টিবলয় ২১ আগস্ট দেশের উপকূলীয় এলাকা দিয়ে দেশে প্রবেশ করবে এবং আগামী ২৫ আগস্ট খুলনা বিভাগের উপকূলীয় এলাকা দিয়েই দেশ ত্যাগ করতে পারে।
বৃষ্টিবলয় স্পিড চলাকালীন দেশের আবহাওয়া দক্ষিণ এবং উপকূলীয় অধিকাংশ এলাকায় আরামদায়ক থাকতে পারে, তবে বৃষ্টি বিরতির সময় অল্প কিছুটা ভ্যাপসা গরম পড়তে পারে কিছু কিছু এলাকায়। উত্তর ও উত্তর মধ্য অঞ্চলে কিছুটা ভ্যাপসা গরম অনুভূতি থাকতে পারে মাঝে মাঝেই। ‘স্পিড’ চলাকালীন বেশি সক্রিয় স্থানে রোদের উপস্থিতি তেমন পাওয়া যাবে না।
অধিক সক্রিয় এলাকায় খুবই জোরে মুষলধারে বৃষ্টি ও অল্প সময়ে অধিক বৃষ্টি হতে পারে এবং অধিকাংশ বৃষ্টিপাত মধ্যরাত থেকে দুপুরের মধ্যে হতে পারে।
ওয়েদার অবজারভেশন টিম জানিয়েছে, স্পিড যেহেতু আংশিক বৃষ্টিবলয়, সুতরাং স্পিড চলাকালীন সময়ে দেশের কিছু এলাকায় খুবই কম বৃষ্টিপাত বা বৃষ্টি একেবারে নাও হতে পারে। বৃষ্টিবলয় চালু হওয়া মানে একসাথে সব এলাকায় বৃষ্টিপাত নয়। মূলত এই সময়সীমার মধ্যে সর্বোচ্চ সক্রিয় এলাকায় পর্যায়ক্রমে বেশি বৃষ্টিপাত হতে পারে এবং কম সক্রিয় এলাকায় বৃষ্টিপাত হলেও তা পর্যায়ক্রমে ও কম হতে পারে।
কোন বিভাগে সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন গড়ে কত মিলিমিটার বৃষ্টি হতে পারে
ঢাকায় ৮৫-১৩০ মিলিমিটার (গড়ে ৩ দিন), খুলনায় ১০০-৩০০ মিলিমিটার (গড়ে ৪ দিন), বরিশালে ১৫০-৩০০ মিলিমিটার (গড়ে ৫ দিন), সিলেটে ৮০-১৪০ মিলিমিটার (গড়ে ৩ দিন), ময়মনসিংহে ৯০-১২০ মিলিমিটার (গড়ে ৩ দিন), রাজশাহীতে ৬০-৮০ মিলিমিটার (গড়ে ২ দিন), রংপুর ৫৫-১২০ মিলিমিটার (গড়ে ২ দিন) এবং চট্টগ্রামে ১০০-৩৬০ মিলিমিটার (গড়ে ৫ দিন)।
বিডব্লিউওটি জানিয়েছে, এখানে দেয়া বৃষ্টির পরিমাণ একটা গড় ধারণা। স্থানভেদে এর পরিমান কিছুটা হেরফের হতেপারে এবং দেশের কোনো কোনো ক্ষুদ্র এলাকায় কিছুটা বেশি বৃষ্টি হতে পারে। আবার কোনো কোনো ক্ষুদ্র স্থানে বৃষ্টি অনেক কম হতে পারে। প্রাকৃতিক কারণে বৃষ্টিবলয় ‘স্পিড’র সময়সূচি কিছুটা পরিবর্তন ও এর শক্তি কিছুটা হ্রাস, বৃদ্ধি বা বিলুপ্ত হতে পারে।
এটা শুধুমাত্র আমাদের গবেষণায় পাওয়া তথ্য, কোনো সরকারি পূর্বাভাস বা সতর্কতামূলক বিজ্ঞপ্তি না এবং আবহাওয়া সংক্রান্ত অফিসিয়াল পূর্বাভাসের জন্য সবাই বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদফতরের বিজ্ঞপ্তি অনুসরণ করুন।
এই পূর্বাভাসের ওপর ভিত্তি করে সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষেত্রে অবশ্যই বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদফতরের সঙ্গে যোগাযোগ করুন, অথবা তাদের পূর্বাভাস অনুসরণ করুন।