আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (IOM) জানিয়েছে, ২০২৪ সালে বিশ্বজুড়ে অভিবাসনপ্রত্যাশী মানুষের মৃত্যুর সংখ্যা অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি ছিল। সংস্থার মিসিং মাইগ্রেন্টস প্রজেক্টের সর্বশেষ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিপজ্জনক অভিবাসন পথে বিভিন্ন দুর্ঘটনা, সংঘর্ষ ও প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে হাজারো মানুষ প্রাণ হারিয়েছে।
আইওএমের রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০২৪ সালে কমপক্ষে ৮,০০০ অভিবাসনপ্রত্যাশী প্রাণ হারিয়েছেন, যা ২০২৩ সালের তুলনায় প্রায় ২০% বেশি। সবচেয়ে ভয়াবহ পরিস্থিতি দেখা গেছে ভূমধ্যসাগর, সাহারা মরুভূমি এবং মার্কিন-মেক্সিকো সীমান্তে।
কোথায় সবচেয়ে বেশি মৃত্যু?
আইওএমের তথ্য অনুযায়ী:
ভূমধ্যসাগর: ২০২৪ সালে এই অঞ্চলে ৩,৫০০ জনের বেশি অভিবাসনপ্রত্যাশী নৌকাডুবিতে মারা যান, যা আগের বছরের চেয়ে বেশি।
মার্কিন-মেক্সিকো সীমান্ত: এই পথে ৮০০ জনের বেশি মানুষ মারা গেছেন, যাদের অনেকে পানিতে ডুবে বা তীব্র তাপমাত্রার কারণে প্রাণ হারিয়েছেন।
সাহারা মরুভূমি: আফ্রিকা থেকে ইউরোপে পাড়ি জমানোর পথে ১,২০০-এর বেশি মানুষ চরম জলবায়ু পরিস্থিতি ও পানির অভাবে মারা গেছেন।
বৈরী আবহাওয়া ও সংঘর্ষ: যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশগুলো থেকে পালানোর সময় সহিংসতা, অভাব এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে হাজারো মানুষের মৃত্যু হয়েছে।
আইওএমের উদ্বেগ ও আহ্বান
আইওএমের মহাপরিচালক অ্যান্টোনিও ভিটোরিনো বলেছেন, ‘এই ভয়াবহ পরিসংখ্যান আমাদের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছে যে, বৈধ ও নিরাপদ অভিবাসনের সুযোগের অভাবই মানুষকে ঝুঁকিপূর্ণ পথ বেছে নিতে বাধ্য করছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উচিত জরুরি পদক্ষেপ নেওয়া, যাতে অভিবাসনপ্রত্যাশীদের সুরক্ষা নিশ্চিত করা যায় এবং তাদের জন্য নিরাপদ ও নিয়মিত অভিবাসনের সুযোগ তৈরি করা হয়।’
বিশ্লেষকরা বলছেন, এই মৃত্যু কমানোর জন্য মানবপাচার রোধ, শরণার্থীদের জন্য নিরাপদ আশ্রয় এবং বৈধ অভিবাসনের পথ সুগম করা জরুরি।
বিশ্বজুড়ে ক্রমবর্ধমান রাজনৈতিক অস্থিরতা, অর্থনৈতিক সংকট ও জলবায়ু পরিবর্তন অভিবাসনের হার বাড়িয়ে তুলেছে। ২০২৫ সালে এই সংকট আরও প্রকট হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন বিশেষজ্ঞরা।
সূত্র: আলজাজিরা

সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন