রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন প্রস্তাব দিয়েছেন যে, ইউক্রেনকে অস্থায়ীভাবে জাতিসংঘের নিয়ন্ত্রণে রাখা উচিত, যাতে একটি যোগ্য সরকার গঠন করা যায়। বিশ্লেষকদের মতে, এটি কিয়েভ সরকারের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করার জন্য পুতিনের নতুন কৌশল।
ইউক্রেন এই প্রস্তাবকে পাগলামি বলে উড়িয়ে দিয়েছে এবং অভিযোগ করেছে যে, পুতিন এই ধরনের পরিকল্পনার মাধ্যমে শান্তি আলোচনাকে বিলম্বিত করতে চাইছেন।
হোয়াইট হাউসও পুতিনের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে, জানিয়ে দিয়েছে যে ইউক্রেনের সরকারব্যবস্থা কেবল দেশটির সংবিধান ও জনগণ দ্বারা নির্ধারিত হবে।
এই মন্তব্যের পেছনে একটি বড় প্রেক্ষাপট রয়েছে- যুক্তরাষ্ট্র বর্তমানে ইউক্রেন ও রাশিয়ার মধ্যে একটি যুদ্ধবিরতির চেষ্টা করছে। মঙ্গলবার (২৫ মার্চ), হোয়াইট হাউস জানিয়েছে যে কৃষ্ণ সাগরে একটি সীমিত যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে দুই পক্ষ। তবে, রাশিয়া পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের শর্ত দিয়েছে, যা শান্তি আলোচনার প্রতি রাশিয়ার আন্তরিকতা নিয়ে সন্দেহ তৈরি করেছে।
পুতিনের যুক্তি: জাতিসংঘের অধীনে নির্বাচন
উত্তর রাশিয়ার মুরমানস্ক শহরে নৌবাহিনীর সদস্যদের সাথে কথা বলার সময়, পুতিন বলেন যে, একটি অস্থায়ী জাতিসংঘ-সমর্থিত প্রশাসন গঠন করা যেতে পারে, যা নির্বাচনের মাধ্যমে একটি গ্রহণযোগ্য সরকার গঠন করবে এবং পরে শান্তি চুক্তির বিষয়ে আলোচনা শুরু করবে।
রাশিয়ার দাবি, বর্তমান ইউক্রেনীয় সরকার অবৈধ, কারণ জেলেনস্কি তার মেয়াদ শেষ হওয়ার পরও ক্ষমতায় রয়েছেন। তবে ইউক্রেন বলছে, যুদ্ধের কারণে নির্বাচন স্থগিত করা হয়েছে, যা আইনত বৈধ।
পুতিনের পরিকল্পনার উদ্দেশ্য কী?
বিশ্লেষকদের মতে, পুতিনের মূল লক্ষ্য হলো- জেলেনস্কির বৈধতা প্রশ্নবিদ্ধ করা, ইউক্রেনের অভ্যন্তরীণ বিভক্তি তৈরি করা ও শান্তি আলোচনাকে বিলম্বিত করা, যাতে রাশিয়া সামরিকভাবে লাভবান হয়।
রাশিয়ার অভিযোগ ও ইউক্রেনের পাল্টা প্রতিক্রিয়া
রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ দাবি করেছেন যে, ইউক্রেনের সেনারা কিয়েভের আদেশ মানছে না এবং রাশিয়ার জ্বালানি অবকাঠামোতে হামলা চালাচ্ছে।
তবে ইউক্রেন এই অভিযোগকে মিথ্যা বলে উড়িয়ে দিয়ে বলেছে, বরং রাশিয়াই ইউক্রেনের গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো লক্ষ্য করে হামলা চালাচ্ছে।
পশ্চিমা বিশ্ব ইউক্রেনের পাশে দাঁড়িয়েছে
পুতিনের মন্তব্যের পরপরই, ফরাসি প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁ ঘোষণা করেছেন যে, ফ্রান্স ও যুক্তরাজ্য ইউক্রেনের জন্য একটি নিরাপত্তা বলয় তৈরির পরিকল্পনা করছে।
যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও ন্যাটো স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছে যে তারা ইউক্রেনের সার্বভৌমত্বকে সমর্থন করবে এবং রাশিয়ার শর্তকে গ্রহণ করবে না।
রাশিয়া কেন ইউক্রেনে আক্রমণ করেছিল?
২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়া ইউক্রেনে পূর্ণমাত্রার আক্রমণ চালায়, দাবি করে যে তারা রুশভাষী জনগণকে রক্ষা করছে এবং ন্যাটোর প্রভাব মোকাবিলা করছে। কিন্তু বাস্তবে, যুদ্ধের ফলে হাজার হাজার মানুষ নিহত হয়েছে, লাখো মানুষ উদ্বাস্তু হয়েছে এবং রাশিয়ার ওপর ব্যাপক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে।
এই প্রেক্ষাপটে, পুতিনের নতুন প্রস্তাব একটি রাজনৈতিক কৌশল হিসেবেই দেখা হচ্ছে, যার মাধ্যমে তিনি ইউক্রেনের নেতৃত্বকে দুর্বল করার চেষ্টা করছেন।
 

 
                             
                                     সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন
সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন 
                                     
                                     
                                     
                                                                                     
                                                                                     
                                                                                     
                                                                                     
                                                                                     
                                                                                     
                             
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
       
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন