ঢাকা বৃহস্পতিবার, ০১ মে, ২০২৫

ভারত-পাকিস্তান সংলাপে মার্কো রুবিওর মধ্যস্থতা চেষ্টা

বিশ্ব ডেস্ক
প্রকাশিত: মে ১, ২০২৫, ১২:৩৮ পিএম
পাকিস্তান-ভারতের কূটনৈতিক সমস্যা সমাধানে সচেষ্ট চেষ্টা চালাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র ছবি: সংগৃহীত

ভারতের কাশ্মীর অঞ্চলের পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জন বেসামরিক মানুষ নিহত হওয়ার পর পারমাণবিক শক্তিধর দুই প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা চরমে পৌঁছেছে। 

এ পরিস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও একাধিক কূটনৈতিক পদক্ষেপ নিয়েছেন উত্তেজনা কমানোর লক্ষ্যে।

ভিন্ন ভিন্ন টেলিফোনালাপে রুবিওর কূটনৈতিক বার্তা

রুবিও বুধবার (৩০ এপ্রিল) ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস. জয়শঙ্কর এবং পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফের সঙ্গে পৃথকভাবে টেলিফোনে কথা বলেন। 

এ ফোনালাপের মূল বিষয় ছিল সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে যৌথ সহযোগিতা এবং পেহেলগাম হামলার নিরপেক্ষ তদন্ত। তিনি উভয় পক্ষকেই সহনশীলতা অবলম্বনের আহ্বান জানান।

ভারতীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে আলাপে রুবিও পেহেলগাম হামলায় নিহতদের জন্য গভীর শোক প্রকাশ করেন এবং দোষীদের শনাক্ত করতে একটি নিরপেক্ষ তদন্তের আহ্বান জানান। 

তিনি ভারতের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের সন্ত্রাসবিরোধী সহযোগিতার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন, তবে প্রতিশোধমূলক পদক্ষেপে সতর্কতা বজায় রাখার পরামর্শ দেন।

অন্যদিকে, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফকে ফোনে তিনি কাশ্মীর হামলাকে প্রকাশ্যে নিন্দা জানানোর অনুরোধ করেন এবং ভারতের সঙ্গে সহযোগিতা করে শান্তি বজায় রাখার ওপর জোর দেন। একইসঙ্গে তিনি পাকিস্তানকে উসকানিমূলক ভাষ্য এড়াতে আহ্বান জানান।

দুই দেশের প্রতিক্রিয়া ও অবস্থান

ভারতের জয়শঙ্কর বলেন, ‘হামলার পরিকল্পনাকারী ও সহায়তাকারীদের বিচারের আওতায় আনতেই হবে।’ তিনি এক্সে এ বক্তব্য দেন।

পাকিস্তান প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকে প্রকাশিত বিবৃতিতে বলা হয়, ‘ভারতীয় সরকারের উসকানিমূলক ও উত্তেজক আচরণ গভীরভাবে হতাশাজনক এবং দুশ্চিন্তার বিষয়।’ 

শেহবাজ শরিফ জানান, এ ধরনের আচরণ পাকিস্তানের সন্ত্রাসবিরোধী প্রচেষ্টাকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে।

তিনি ভারতের সিন্ধু জল চুক্তি বাতিলের সিদ্ধান্তকে ‘জলকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার’ করার অপপ্রয়াস বলে অভিহিত করেন এবং বলেন, ‘এটি পাকিস্তানের ২৪ কোটির বেশি মানুষের জীবনধারার ওপর সরাসরি প্রভাব ফেলবে।’

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘কাশ্মীর সংকটের শান্তিপূর্ণ সমাধানই দক্ষিণ এশিয়ায় দীর্ঘমেয়াদি শান্তি নিশ্চিত করার একমাত্র পথ।’

পাকিস্তান-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্কের প্রসঙ্গ

বিবৃতিতে বলা হয়, পাকিস্তান গত সাত দশক ধরে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করেছে এবং ভবিষ্যতে সন্ত্রাসবিরোধী সহযোগিতা ও খনিজ খাতে অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব আরও জোরদার করা সম্ভব।

শেহবাজ বলেন, তার সরকার বড় ধরনের অর্থনৈতিক সংস্কার করেছে এবং পাকিস্তান এখন অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের পথে রয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের বার্তা

মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ট্যামি ব্রুস বলেন, ‘সচিব রুবিও পাকিস্তানি কর্মকর্তাদের অনুরোধ করেছেন যেন তারা এই নৃশংস হামলার তদন্তে পূর্ণ সহযোগিতা করেন। উভয় দেশকেই সন্ত্রাসবিরোধী অঙ্গীকারে একযোগে কাজ করতে হবে।’

যুক্তরাষ্ট্র এখন উভয় দেশের সঙ্গে ভবিষ্যৎ আলোচনা করার পরিকল্পনা করছে যাতে এই সংকট প্রশমিত হয় এবং দক্ষিণ এশিয়ায় স্থিতিশীলতা বজায় থাকে।