ইসরায়েলের সঙ্গে পরোক্ষ আলোচনায় বসতে যাচ্ছে আহমেদ আল-শারার সিরিয়া।
বুধবার (৭ মে) বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সিরিয়ান অন্তর্বর্তীকালীন প্রেসিডেন্ট। ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর সঙ্গে বৈঠকের পর প্যারিসে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।
আগের দিন এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, জেরুজালেম ও দামেস্কের মধ্যে আলোচনার জন্য মধ্যস্থতার প্রস্তাব দিয়েছে সংযুক্ত আরব আমিরাত। এ বিষয়ে অবগত এমন তিন ব্যক্তির উদ্ধৃতি দিয়ে এ তথ্য জানায় বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
গত ১৩ এপ্রিল আল-শারার সংযুক্ত আরব আমিরাত সফরের পরে আলোচনার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়। এজন্য আনুষ্ঠানিক সম্পর্ক না থাকা দু’দেশের মধ্যে নিরাপত্তা ও গোয়েন্দা বিষয় এবং আস্থা তৈরির দিকে নজর দেওয়া হয়েছে।
গতকাল বুধবার সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট আল-শারা বলেছেন, ‘উত্তেজনা হ্রাস করা ও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখা’ এই আলোচনার মূল লক্ষ্য। ক্ষমতা গ্রহণ করার পর তিনি সিরিয়ার ভূখণ্ডে ইসরায়েলের অনুপ্রবেশ (১৯৭৪ সালে চুক্তির লঙ্ঘন) রোধে জোর দিয়েছিলেন বলে জানান।
সিরিয়ার একটি নিরাপত্তা সূত্র রয়টার্সের প্রচেষ্টাকে বর্তমানে "প্রযুক্তিগত বিষয়গুলিতে" কেন্দ্রীভূত বলে বর্ণনা করেছে এবং বলেছে যে শেষ পর্যন্ত কী আলোচনা করা যেতে পারে তার কোনও সীমা নেই।
সিরিয়ার ঊর্ধ্বতন নিরাপত্তা সূত্র জানিয়েছে, মধ্যস্থতার মাধ্যমটি নিরাপত্তা-সম্পর্কিত বিষয়গুলো খুব কঠোর নজরদারিতে রেখেছিল। আলোচনায় সন্ত্রাসবিরোধী বেশ কয়েকটি নথি গুরুত্ব পাবে। তবে সিরিয়ায় ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর কর্মকাণ্ড আলোচনার এজেন্ডা বর্হিভূত।
সূত্রটি বলেছে, সংযুক্ত আরব আমিরাতের নিরাপত্তা কর্মকর্তারা, সিরিয়ার গোয়েন্দা কর্মকর্তারা এবং ইসরায়েলের সাবেক গোয়েন্দা কর্মকর্তারা এই প্রক্রিয়ায় জড়িত ছিলেন। পরিস্থিতি প্রতিকূল হওয়ার আশঙ্কায় তারা পরিচয় গোপন রাখার শর্তে কথা বলেছেন।
এ বিষয়ে জানতে সংযুক্ত আরব আমিরাতে যোগাযোগ করে রয়টার্স। কিন্তু দেশটিরর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কোনো মন্তব্য জবাব করেনি। একইভাবে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ও কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি।
মধ্যস্থতার প্রক্রিয়ার মধ্যে গত সপ্তাহে সিরিয়ায় হামলা চালায় ইসরায়েল। দামেস্কে প্রেসিডেন্ট প্রাসাদের মাত্র ৫০০ গজ দূরে একটি ক্ষেপণাস্ত্র আছড়ে পড়ে। তবে হামলার পরে থেকে আলোচনা প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে কি না, তা নিশ্চিত করতে পারেনি রয়টার্স।
সাম্প্রতিক সময়ে সিরিয়া ও লেবাননে ইসরায়েল হামলাকে শাসকদের জন্য ‘বিশেষ বার্তা’ হিসেবে দেখা হচ্ছে। নতুন শাসকরা ইসরায়েলের জন্য হুমকি নয়। তাই দামেস্কের সঙ্গে বিদেশে ইহুদি সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিদের আলোচনায় সাফল্য দেখছে তেল আবিব।
গত মাসে সিরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরে পাঠানো একটি চিঠিতে লিখেছে, ‘আমরা সিরিয়াকে ইসরায়েলসহ কোনো পক্ষের জন্য হুমকির উৎস হতে দেব না।’
তবে গত ফেব্রুয়ারিতে রয়টার্স এক প্রতিবেদনে জানিয়েছিল, সিরিয়াকে বিকেন্দ্রীকরণ ও বিচ্ছিন্ন রাখতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কাছে লবিং করেছে ইসরায়েল।
কারণ তাদের ধারণা, ২০১৬ সালে সশস্ত্র গোষ্ঠী আল-কায়েদা ছেড়ে আসা আল-শারা ইসরায়েলের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়াবে। তবে এই আলোচনার প্রস্তুতি হিসেবে ইসরায়েলের সেই আশঙ্কা অনেকটাই দূর হবে।
আপনার মতামত লিখুন :