পাকিস্তান-শাসিত আজাদ কাশ্মীরে ভারতীয় সেনাবাহিনীর গোলাবর্ষণে এক নবজাতকসহ পাঁচজন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (৮ মে) রাতভর নিয়ন্ত্রণ রেখা সংলগ্ন এলাকায় এ হামলার ঘটনা ঘটে। শুক্রবার (৯ মে) পাকিস্তানি কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয় গণমাধ্যম এ তথ্য নিশ্চিত করে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, মুজাফফরাবাদ ও কোটলি জেলার সীমান্তবর্তী গ্রামগুলোতে আচমকাই গোলাবর্ষণ শুরু হয়। এতে একটি পরিবারের তিন সদস্য ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান। আহতদের মধ্যে রয়েছে দুই শিশু ও একজন বয়স্ক নারী, যাদের স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
এর আগে মঙ্গলবার (৬ মে) গভীর রাতে ভারতীয় বিমান বাহিনী পাকিস্তানের ভেতরে একাধিক স্থানে হামলা চালায়। ইসলামাবাদ জানায়, পাঞ্জাবের আহমেদপুর পূর্ব, মুরিদকে, শিয়ালকোট ও শক্করগড় এবং আজাদ কাশ্মীরের মুজাফফরাবাদ ও কোটলিতে এ হামলা চালানো হয়। লক্ষ্যবস্তু করা হয় মসজিদ, স্কুল ও একটি জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র।
এতে অন্তত ৩১ জন বেসামরিক মানুষ নিহত হন এবং আহত হন আরও ৫৭ জন।
এ নিয়ে পাকিস্তানে নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৬ জনে।
পাকিস্তান সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়, এই হামলার জবাবে তাদের বাহিনী পাঁচটি ভারতীয় যুদ্ধবিমান এবং সাতটি নজরদারি ড্রোন ভূপাতিত করেছে। সেই সঙ্গে সীমান্ত এলাকায় একটি ভারতীয় ব্রিগেড সদর দপ্তর এবং কয়েকটি সেনা চৌকিও ধ্বংস করা হয়েছে বলে দাবি ইসলামাবাদের।
অন্যদিকে ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় দাবি করেছে, পাকিস্তানের তরফে লাগাতার গোলা বর্ষণের ফলে সীমান্তবর্তী রাজ্যগুলোতে অন্তত ১৬ জন ভারতীয় নাগরিক নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও অন্তত ৫৯ জন।
উল্লেখ্য, গত ২২ এপ্রিল কাশ্মীরের পেহেলগামে হামলায় ২৬ জন পর্যটক নিহত হওয়ার ঘটনার পর থেকেই দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা চরমে পৌঁছেছে। এর জের ধরে সীমান্তে গোলাগুলির মাত্রা দিনদিন বেড়েই চলেছে।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই উত্তেজনা যদি অব্যাহত থাকে, তবে তা পরিণত হতে পারে পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধের দিকে, যার পরিণতি হবে ভয়াবহ ও ব্যাপক প্রাণহানি।