ঢাকা বৃহস্পতিবার, ১৫ মে, ২০২৫

রাশিয়ার অর্থনীতি ‘পঙ্গু’ করার হুমকি ফ্রান্সের

বিশ্ব ডেস্ক
প্রকাশিত: মে ১৪, ২০২৫, ০৭:৩৪ পিএম
রাশিয়ান রাষ্ট্রীয় জাহাজ কোম্পানি সোভকমফ্লটের মালিকানাধীন তেল ট্যাঙ্কার। ছবি-সংগৃহীত

ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের জন্য রাশিয়ার ওপর নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে ইউরোপীয় ইউনিয়নকে (ইইউ) মনোযোগী হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে ফ্রান্স।

একই সঙ্গে দেশটির অর্থনীতি পঙ্গু করতে ইউরোপীয়দের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন ফরাসি পররাষ্ট্রমন্ত্রী জঁ-নোয়েল ব্যারোট।

বুধবার (১৪ মে) বার্তা সংস্থা রয়টার্স এক প্রতিবেদনে জানায়, ফরাসি পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, ‘রাশিয়ার অর্থনীতিকে পঙ্গু করতে ও প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে ইউক্রেনের যুদ্ধ বন্ধের জন্য বাধ্য করতে ইইউ-কে নতুন নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে মনোযোগ দিতে হবে।’

ইইউ ১৭তম নিষেধাজ্ঞা প্যাকেজ গ্রহণের পর দেওয়া বক্তব্যে জঁ-নোয়েল ব্যারোট বলেন, নিষেধাজ্ঞার প্রভাব এখন পর্যন্ত যথেষ্ট নয়। ইইউ ব্লককে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কাজ করতে হবে। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প মস্কোর ওপর চাপ প্রয়োগের সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর মার্কিন কংগ্রেসও প্রস্তুতি নিয়েছে।

ফরাসি সংবাদমাধ্যক বিএফএম টিভিকে তিনি বলেন, ‘আমরা আজ ১৭তম নিষেধাজ্ঞা (প্যাকেজ) গ্রহণ করছি। আমাদের আরও এগিয়ে যেতে হবে। কারণ এখন পর্যন্ত নিষেধাজ্ঞাগুলো ভ্লাদিমির পুতিনকে তার আগ্রাসনের যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়া থেকে বিরত রাখতে পারেনি।’

তিনি আরও বলেন, ‘তাই আমাদের অবশ্যই ধ্বংসাত্মক নিষেধাজ্ঞাগুলো প্রসারিত করার জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে, যা রাশিয়ার অর্থনীতিকে চিরতরে পঙ্গু করতে পারে।’

কূটনৈতিক সূত্র জানিয়েছে, ১৭তম নিষেধাজ্ঞায় (প্যাকেজ) ‘নৌবহরের’ প্রায় ২০০ ট্যাঙ্কার অনুমোদিত হয়েছে। রাশিয়া ও ইউক্রেনকে নিজেদের সংসদে এখনো যুদ্ধবিরতি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করার প্রয়োজন আছে। তবে ইউরোপীয় ব্লকের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা আগামী সপ্তাহে নিষেধাজ্ঞাটি অনুমোদন করতে পারেন।

নিষেধাজ্ঞার তালিকায় ৩০টি কোম্পানি ও রুশ সামরিক শিল্পের সঙ্গে জড়িত ৭৫ ব্যক্তির নামও রয়েছে। এ তালিকায় আরও ২০ ব্যক্তির নাম যুক্ত হতে পারে বলে জানা গেছে।

২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়া ইউক্রেনে পূর্ণ মাত্রায় যুদ্ধ শুরুর পর আগামী বৃহস্পতিবার ইস্তাম্বুলে দু’দেশই শান্তি আলোচনায় বসতে যাচ্ছে। মস্কো ও কিয়েভ আলোচনায় বসার আগ মুহূর্তে নিষেধজ্ঞা জোরদারের বিষয়টি সামনে এলো।

কূটনীতিক ও কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, পুতিন যদি ইউক্রেনে যুদ্ধবিরতিতে রাজি না হন, তাহলে রাশিয়ার ওপর আরও নিষেধাজ্ঞা আরোপের হুমকি দিয়েছেন কিছু ইউরোপীয় নেতা। ফলে দেশগুলোর ভয়ংকর রাজনৈতিক বাধার মুখোমুখি হতে হবে মস্কোকে। তবে নিষেধাজ্ঞা আরোপে মার্কিন সমর্থন প্রয়োজন হবে।

বৃহস্পতিবার ন্যাটোর পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠকে যোগদানের জন্য তুরস্কে থাকা ব্যারোট জানান, তিনি মার্কিন সিনেটর লিন্ডসে গ্রাহামের সঙ্গে একটি মার্কিন নিষেধাজ্ঞা বিল নিয়ে আলোচনা করবেন, যা তিনি তৈরি করছেন।

ব্যারোট বলেন, ‘বিলটিতে রাশিয়ার তেল আমদানিকারী দেশগুলোর ওপর ৫০০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হবে। রাশিয়া ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রের আরোপিত নিষেধাজ্ঞা এড়ানোর উপায় খুঁজে পেয়েছে, তাই সরবরাহ বন্ধ করলে রাশিয়ার অর্থনীতি শ্বাসরুদ্ধ হয়ে পড়বে।’

তবে কূটনীতিকরা বলছেন, ইইউর নতুন নিষেধাজ্ঞা প্যাকেজ নিয়ে আলোচনা কয়েক সপ্তাহ দীর্ঘ হবে। যার লক্ষ্য হলো ব্যাংকিং, আর্থিক ও জ্বালানি খাত। তবে এ বিষয়ে ইউরোপীয় ব্লকের ২৭ সদস্যের ঐকমত্যে পৌছানো বেশ অসুবিধার হবে।

দেশগুলো ক্ষেপণাস্ত্র উৎপাদনে ব্যবহৃত রাসায়নিকের রপ্তানি নিষেধাজ্ঞার বিষয়েও একমত হয়েছে।