ঢাকা রবিবার, ০১ জুন, ২০২৫

‘ইহুদিদের বিরুদ্ধে ক্রুসেড’ চালাচ্ছেন ম্যাক্রোঁ, অভিযোগ ইসরায়েলের

বিশ্ব ডেস্ক
প্রকাশিত: মে ৩০, ২০২৫, ১০:৩৪ পিএম
সিঙ্গাপুরে সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দিচ্ছেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ। ছবি- সংগৃহীত

সম্প্রতি সিঙ্গাপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ ইউরোপীয় দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘গাজায় মানবিক সংকট নিরসনে দ্রুত পদক্ষেপ না নিলে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ‘সম্মিলিতভাবে কঠোর অবস্থান’ নিতে হবে। ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়া কেবল একটি নৈতিক দায়িত্ব নয়, বরং একটি রাজনৈতিক প্রয়োজনীয়তা।’

এবার এরই জেরে ম্যাক্রোঁর বিরুদ্ধে ‘ইহুদি রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ক্রুসেড’ চালানোর অভিযোগ তুলেছে ইসরায়েল।

এ বিষয়ে ইসরায়েলি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ দেওয়া বিবৃতিতে বলা হয়, ‘ইহুদি রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁর ধর্মযুদ্ধ অব্যাহত রয়েছে। এটি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। গাজায় কোনো মানবিক অবরোধ নেই- এ দাবি একটি সুস্পষ্ট মিথ্যা।’

এদিকে আজ  শুক্রবার (৩০ মে) জাতিসংঘের মুখপাত্র জেন্স লারকে ইসরায়েলকে সতর্ক করে জানিয়েছেন, ‘ইসরায়েল হামলা তীব্রতর করার পর গাজার সমগ্র জনগণ দুর্ভিক্ষের ঝুঁকিতে রয়েছে। অবরুদ্ধ ফিলিস্তিনি অঞ্চলটিতে ভয়াবহ মানবিক পরিস্থিতির জন্য ইতোমধ্যে বিশ্বব্যাপী নিন্দার ঝড় উঠেছে।’

তিনি আরও বলেন,‘গাজা পৃথিবীর সবচেয়ে ক্ষুধার্ত স্থান। এটিই একমাত্র সংজ্ঞায়িত এলাকা- একটি দেশ বা একটি দেশের মধ্যে সংজ্ঞায়িত অঞ্চল - যেখানে সমগ্র জনসংখ্যা দুর্ভিক্ষের ঝুঁকিতে রয়েছে। জনসংখ্যার একশ শতাংশ দুর্ভিক্ষের ঝুঁকিতে রয়েছে।’

সিঙ্গাপুরে ওই সংবাদ সম্মেলনে ম্যাক্রোঁ ইউরোপীয় দেশগুলোকে গাজার মানবিক পরিস্থিতির প্রতি যথাযথভাবে সাড়া না দিলে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ‘সম্মিলিত অবস্থান কঠোর করার’ আহ্বান জানিয়েছেন ফরাসি এই নেতা।

তিনি বলেন, ‘শর্তসাপেক্ষে ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রের স্বীকৃতি কেবল নৈতিক কর্তব্য নয়, বরং একটি রাজনৈতিক প্রয়োজনীয়তা। ম্যাক্রোঁ বলেন, আগামী কয়েক ঘণ্টা এবং দিনগুলোতে যদি গাজার মানবিক পরিস্থিতির সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ কোনো প্রতিক্রিয়া না পাওয়া যায়...তাহলে আমাদের সম্মিলিত অবস্থান আরও কঠোর করতে হবে।’

ম্যাক্রোঁর বক্তব্যের বিরোধিতা করে ইসরায়েলি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আরও মন্তব্য করে আরও বলেছে, সন্ত্রাসীদের ওপর চাপ সৃষ্টির পরিবর্তে ম্যাক্রোঁ যেন তাদের একটি ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র উপহার দিতে চান। নিশ্চয়ই সে রাষ্ট্রের জাতীয় দিবস হবে ৭ অক্টোবর। যখন ইসরায়েল বহুমুখী আক্রমণের শিকার, তখন প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁ নিষেধাজ্ঞার হুমকি দিচ্ছেন। এটি ইসরায়েলের বিরুদ্ধে একতরফা অবস্থান।

টাইমস অব ইসরায়েলের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ফরাসি প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে ‘ক্রুসেড’- এর অভিযোগ একটি ‘ভারী অভিযোগ’। কারণ মধ্যযুগে ইউরোপীয় খ্রিস্টানদের পরিচালিত ধর্মযুদ্ধ- ক্রুসেডে- ফরাসি নাইট ও ধর্মীয় নেতারা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিলেন।

প্রসঙ্গত, আগামী ১৭-২০ জুন জাতিসংঘের একটি সম্মেলনে ফ্রান্স আনুষ্ঠানিকভাবে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়ার বিষয়টি বিবেচনা করছে।