ঢাকা শনিবার, ১৪ জুন, ২০২৫

ইসরায়েলের হামলার জবাবে যেভাবে প্রতিশোধ নিতে পারে ইরান

বিশ্ব ডেস্ক
প্রকাশিত: জুন ১৩, ২০২৫, ১০:৩৩ পিএম
ছবি-সংগৃহীত

ইসরায়েলি হামলায় ইরান তার শীর্ষ সামরিক নেতৃত্ব এবং বেশ কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ পারমাণবিক বিজ্ঞানীকে হারিয়েছে। এরই জেরে দেশটি পাল্টা আঘাত হানার জন্য দ্রুত প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে জানা গেছে। এরই মধ্যে দেশটি প্রতিশোধ নেওয়ার প্রতিশ্রুতিতে ড্রোনের একটি প্রাথমিক তরঙ্গ ইসরায়েলে পাঠিয়েছে যা প্রতিশোধের কোনো অংশে কম নয়।

ইরানের নেতারা জোর দিয়ে বলেছে, যে যেকোনো আক্রমণই তাদের পারমাণবিক কর্মসূচি এগিয়ে নেওয়ার জন্য আরও দৃঢ়প্রতিজ্ঞ করে তুলবে।

বিশ্লেষকদের ধারণা অনুযায়ী, ইসরায়েলের এই হামলার প্রতিশোধ নিতে ইরান হয়ে উঠতে পারে আরও ভয়াবহ। সরাসরি সামরিক হামলা থেকে শুরু করে সাইবার যুদ্ধেও জড়াতে পারে।

এর আগে ২০২৪ সালের এপ্রিলে ইরান প্রথমবারের মতো ইসরায়েলে সরাসরি ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালায়- যা ছিল যুগান্তকারী পদক্ষেপ।

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এবারও মিসাইল ও ড্রোন হামলার মাধ্যমে উত্তর ইসরায়েল, সামরিক ঘাঁটি বা বেসামরিক অবকাঠামো লক্ষ্যবস্তু হতে পারে।

প্রক্সি বাহিনী ব্যবহার

ইরান হিজবুল্লাহ (লেবানন), হুথি (ইয়েমেন), ফাতেমিয়ুন/জয়নাবিয়ুন ব্রিগেড (সিরিয়া/আফগানিস্তান), হাশদ আল-শাবি (ইরাক)- এই সব প্রভাবিত গ্রুপের মাধ্যমে বিভিন্ন ফ্রন্টে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে চাপ তৈরি করতে পারে।

এছাড়াও গাজা সীমান্তে নতুন করে উত্তেজনা সৃষ্টি করা, লেবাননের দক্ষিণ সীমান্ত থেকে রকেট হামলা বাড়ানো হতে পারে কৌশলের অংশ।

সাইবার যুদ্ধ

ইরান অতীতে ইসরায়েলের পানি সরবরাহ, বিদ্যুৎ এবং ব্যাংকিং সেক্টরে সাইবার হামলা চালিয়েছে। এবার বড় ধরনের সাইবার প্রতিশোধ নেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে, যার মাধ্যমে ইসরায়েলের গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো অচল করে দিতে পারে।

বিশ্ববাজারে অস্থিরতা

হরমুজ প্রণালী দিয়ে বিশ্বের প্রায় ২০% তেল পরিবাহিত হয়। ইরান চাইলে এখানে উত্তেজনা সৃষ্টি করে বিশ্ববাজারে তেল ও গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধি ঘটাতে পারে। এটি পশ্চিমা বিশ্বের ওপর অর্থনৈতিক চাপ হিসেবে কাজ করবে।

কূটনৈতিক প্রতিক্রিয়া ও আন্তর্জাতিক লবি

ইরান জাতিসংঘ ও ওআইসির মাধ্যমে ইসরায়েলকে যুদ্ধাপরাধী আখ্যা দিতে কাজ করতে পারে। মধ্যপ্রাচ্যে সৌদি, কাতার ও তুরস্কের সঙ্গে যোগাযোগ বাড়িয়ে ইসরায়েলবিরোধী ঐক্য গড়ে তোলা হতে পারে।

পারমাণবিক কর্মসূচি ত্বরান্বিত করা

ইসরায়েলের হামলার প্রতিক্রিয়ায় ইরান পারমাণবিক সমৃদ্ধকরণ আরও দ্রুততর করার ঘোষণা দিতে পারে, যা পশ্চিমা বিশ্বের ওপর কৌশলগত চাপ সৃষ্টি করবে। এটি সম্ভাব্য ‘চূড়ান্ত প্রতিশোধ কৌশল’ হিসেবেও ব্যাখ্যা করা যেতে পারে।