সোমবার, ১৬ জুন, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


বিশ্ব ডেস্ক

প্রকাশিত: জুন ১৫, ২০২৫, ০৫:১৮ পিএম

ইসরায়েলি হামলায় পরিবারসহ নিহত ইরানি তরুণ কবি

বিশ্ব ডেস্ক

প্রকাশিত: জুন ১৫, ২০২৫, ০৫:১৮ পিএম

পার্নিয়া আব্বাসি।   ছবি- সংগৃহীত

পার্নিয়া আব্বাসি। ছবি- সংগৃহীত

মাত্র দশ দিন আগে পার্নিয়া আব্বাসি উদ্‌যাপন করেছিলেন তার ২৪তম জন্মদিন। তিনি ছিলেন এক তরুণ ইরানি কবি, ইংরেজি শিক্ষিকা এবং একই সঙ্গে ব্যাংক কেরানি। কেবল কবিতাই নয়, তার স্বপ্ন ছিল আরও এগিয়ে যাওয়া- চাকরি, পড়াশোনা, পরিবার এবং ভালোবাসার ইরানকে নিয়ে।

কিন্তু পশ্চিম তেহরানের সাত্তারখান স্ট্রিটের একটি আবাসিক ভবনে ইসরায়েলি বিমান হামলায় পার্নিয়া ও  তার পরিবার প্রাণ হারান। শহীদ হন তার বাবা, মা এবং কিশোর ভাই পারহাম।

শুক্রবার (১৩ জুন) পশ্চিম তেহরানের সাত্তারখান এলাকায় ইসরায়েলি হামলায় নিহত বেসামরিক নাগরিকদের মধ্যে এই প্রতিভাবান তরুণ কবি পার্নিয়া আব্বাসিও ছিলেন।

পার্নিয়া আব্বাসি নিজের চাকরি এবং বিশ্ববিদ্যালয়জীবনের পাশাপাশি কবিতায় নিজেকে নিবেদিত রাখতেন। তার কবিতায় ছিল দেশ ও সম্প্রদায়ের স্বপ্নের প্রতিধ্বনি।

তার মর্মস্পর্শী কবিতা ‘দ্য এক্সটিংগুইশড স্টার’, জীবনের দুঃখ এবং হঠাৎ নিভে যাওয়া আলোকে ধারণ করে। ইসরায়েলিদের হামলায় মৃত্যুর আগে পার্নিয়া লিখেছিলেন এক প্রলম্বিত ভবিষ্যদ্বাণীর মতো কবিতা—

‘আমি পুড়ে যাব,
আমি নিভে যাব,
হয়ে যাব একটি নীরব তারা,
যা ধোঁয়ায় পরিণত হয়
তোমাদের আকাশে…’

মৃত্যুর পর তার নোটবুক থেকে এই কবিতাটি উদ্ধার করা হয়। তার ঘনিষ্ঠ বন্ধু মরিয়ম সংবাদমাধ্যমকে এই তথ্য জানান।

মরিয়মের ভাষ্যমতে, সেদিন সকালে তার পার্নিয়ার সঙ্গে দেখা করার কথা ছিল।

চোখের পানি আড়াল করে মরিয়ম বলেন, ‘আমার বন্ধু সবকিছু ছিলেন- একজন কবি, একজন শিক্ষিকা, একজন কন্যা। তিনি সদ্য ব্যবস্থাপনায় জাতীয় স্নাতক পরীক্ষা উত্তীর্ণ হয়েছিলেন। তবে ব্যাংক মেলির চাকরি ধরে রাখতে ভর্তি স্থগিত রেখেছিলেন।’

মরিয়ম বলেন, পার্নিয়া ছিলেন শিক্ষিত, আশাবাদী এবং দায়িত্বশীল। কাজভিন বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুবাদ বিষয়ে পড়াশোনা শেষে তিনি নিজের দেশ ও ক্যারিয়ারের প্রতি গভীরভাবে অঙ্গীকারবদ্ধ ছিলেন। কিন্তু সেই অঙ্গীকার থেমে যায় যখন অর্কিড কমপ্লেক্সের মাঝ বরাবর একটি ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হানে। ভবনটি মুহূর্তেই ধসে পড়ে। আগুন ও ধ্বংসস্তূপে পুড়ে যায় চারটি জীবন, আর একটি ভবিষ্যৎ।

মরিয়ম আরও বলেন, ‘রক্তে ভেজা সেই গোলাপি গদি, যার ওপর ছড়িয়ে থাকত তার চুল- ওটাই ছিল পার্নিয়ার বিছানা। উদ্ধারকারীরা প্রথমে সেটাই খুঁজে পায়। তারপর তার ভাই পারহাম- মাত্র ষোলো বছর বয়সেই যার জীবন থেমে যায়। বাবা-মা চাপা পড়ে ছিলেন আরও অনেকক্ষণ।’

তিনি আরও বলেন, ‘সাত্তারখান এলাকার চতুর্থ ব্লকে ১০টি অ্যাপার্টমেন্টের একটি ভবনে থাকত তারা। সেই ভবনের তিন থেকে পাঁচতলা সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে গেছে। মনে হচ্ছে, ঐ ইউনিটের সবাই মারা গেছেন।’

শেষে মরিয়ম বলেন, ‘পার্নিয়া আর কখনো কবিতা লিখবে না। কিন্তু তার সেই একটি কবিতা, যেখানে সে নিজের নিঃশব্দ ধ্বংসের আভাস দিয়ে গিয়েছিল, তা যেন তার পুড়ে যাওয়া ঘরের ছাইয়ের মধ্যেই প্রতিধ্বনিত হয়।’

Link copied!