পরকীয়া একটি সম্পর্কের ‘ছদ্মছায়া’, যা নিঃশব্দে ভেঙে দিতে পারে একটি গড়া সংসার। প্রেম, বিশ্বাস আর পারিবারিক বন্ধনের ভিত দুর্বল করে দেওয়া এই সম্পর্ক এখন বিশ্বজুড়েই উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে।
বিচ্ছেদ, পারিবারিক কলহ এমনকি হত্যার মতো ভয়ানক পরিণতির পেছনেও আছে পরকীয়ার ছায়া।
সম্প্রতি একটি সমীক্ষা চালিয়ে অনলাইন ডেটিং সাইট অ্যাশলে ম্যাডিসন জানিয়েছে, কোন পেশার মানুষরা সবচেয়ে বেশি পরকীয়ায় জড়াচ্ছেন।
এই সমীক্ষার তথ্য অনুযায়ী, চিকিৎসকরা পরকীয়ায় জড়িতদের তালিকায় শীর্ষে রয়েছেন। এরপর তালিকায় আছে শিক্ষক, উদ্যোক্তা ও অর্থনীতিবিদদের নাম।
পরকীয়ায় জড়িত নারীদের মধ্যে ২৩ শতাংশই চিকিৎসক ও নার্স, যারা দীর্ঘ সময় ধরে হাসপাতালে কাজের চাপ, একঘেয়েমি ও সামাজিক দূরত্বের কারণে নতুন সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছেন বলে জানিয়েছেন। পুরুষ চিকিৎসকদের মধ্যে ৫ শতাংশ পরকীয়ায় জড়ানোর কথা বলেছেন।
পরকীয়ায় জড়িতদের মধ্যে শিক্ষকদের অবস্থান দ্বিতীয়। নারীদের ১২ শতাংশ এবং পুরুষদের ৪ শতাংশ শিক্ষক, প্রভাষক বা অধ্যাপক পেশায় রয়েছেন বলে উল্লেখ রয়েছে প্রতিবেদনে।
গবেষকরা বলছেন, দীর্ঘদিন একই প্রতিষ্ঠান বা সহকর্মীদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার সুযোগ থাকায় এই পেশায় এমন প্রবণতা বেশি দেখা যায়।
এই তালিকার তৃতীয় অবস্থানে রয়েছেন উদ্যোক্তা ও অর্থনীতিবিদরা। নারীদের মধ্যে ৯ শতাংশ এবং পুরুষদের মধ্যে ৮ শতাংশ এই পেশায় থাকা অবস্থায় পরকীয়ায় জড়িয়েছেন বলে উঠে এসেছে সমীক্ষায়।
আরও যেসব পেশার মানুষ পরকীয়ায় জড়ান- খুচরা বিক্রেতা, সমাজকর্মী, সাংবাদিক, আইটি পেশাজীবী, আইনজীবী, বিনোদন জগতের কর্মী, কৃষিজীবী, রাজনীতিক।
আইটি সেক্টরের নারীদের মধ্যে ২৩ শতাংশ এবং পুরুষদের মধ্যে ৫ শতাংশ পরকীয়ার সঙ্গে যুক্ত বলে জানানো হয়েছে।
এই সমীক্ষাটি পরিচালিত হয় ১,০০০ বিবাহিত ব্যক্তির ওপর, যারা কেউ না কেউ তাদের দাম্পত্য জীবনের বাইরে সম্পর্কে জড়িয়েছেন।
অ্যাশলে ম্যাডিসন জানিয়েছে, যদিও এই গবেষণা সামগ্রিক সমাজের চিত্র নয়, তবু এটি একটি চলমান সামাজিক বাস্তবতাকে স্পষ্ট করে তুলে ধরে।
পরকীয়া কখনোই কোনো সম্পর্কের স্বাস্থ্যকর সমাধান হতে পারে না। বরং এটি মানসিক চাপ, পারস্পরিক অবিশ্বাস ও পারিবারিক সংকট সৃষ্টি করে। ব্যক্তিগত ও পেশাগত জীবনের ভারসাম্য রক্ষা করাই হতে পারে এর প্রতিকার।
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া