ঢাকা শুক্রবার, ২৭ জুন, ২০২৫

দীর্ঘ নীরবতা ভেঙে যুদ্ধের প্রস্তুতিতে জাপান

নিউজউইক
প্রকাশিত: জুন ২৬, ২০২৫, ০৮:০৩ পিএম
ছবি- রূপালী বাংলাদেশ গ্রাফিক্স

জাপান পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগরের ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার মুখে যুদ্ধের সম্ভাব্য ঝুঁকি মাথায় রেখে নিজের ঘর গোছাতে শুরু করেছে। চীন-যুক্তরাষ্ট্র সংঘাতে জড়িয়ে পড়লে তার প্রত্যন্ত দ্বীপপুঞ্জ চীনা ক্ষেপণাস্ত্রের সরাসরি লক্ষ্যবস্তু হয়ে উঠতে পারে- এমন উদ্বেগ থেকেই টোকিও আগামী বছর তাইওয়ানের কাছে অবস্থিত দ্বীপগুলোতে বোমা আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণ শুরু করবে।

এ পদক্ষেপ শুধু ভবিষ্যতের যুদ্ধের প্রাক প্রস্তুতি নয়, বরং এমন একটি নিরাপত্তা বাস্তবতার স্বীকৃতি, যেখানে চীন প্রশান্ত মহাসাগরের মার্কিন ঘাঁটিগুলোর বিরুদ্ধে আগাম হামলার পরিকল্পনা করতে পারে।

এই পরিকল্পনার অংশ হিসেবে তাইওয়ান প্রণালি পেরিয়ে একটি সমন্বিত সামরিক অভিযানের আশঙ্কা করছেন বিশ্লেষকরা, যা তাইওয়ানকে একীভূত করার দীর্ঘমেয়াদি চীনা লক্ষ্যকে সামনে নিয়ে আসবে।

জাপান ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে দীর্ঘদিনের প্রতিরক্ষা জোট থাকা সত্ত্বেও জাপান চায় না তার মাটিতে যুদ্ধের ছোঁয়া লাগুক। কিন্তু বাস্তবতা হলো, জাপানের ভূখণ্ড চীনের এক সম্ভাব্য অভিযানের অগ্রভাগে থেকে যাবে। তাই এরই মধ্যে পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগরে ১৪ হাজার দ্বীপ নিয়ে গঠিত জাপান নিজেকে প্রস্তুত করছে।

এই প্রস্তুতির অংশ হিসেবে ইয়োনাগুনি দ্বীপে বোমা আশ্রয়কেন্দ্র তৈরির কাজ শুরু হচ্ছে। মাত্র ৭০ মাইল দূরে থাকা তাইওয়ান থেকে খুব সহজেই আক্রমণের ঝুঁকি রয়েছে। ২০২৮ সালের মধ্যেই আশেপাশের দ্বীপ ইরিওমোট, ইশিগাকি, তারামা ও মিয়াকোতেও নির্মাণ করা হবে আশ্রয়কেন্দ্র, যেখানে প্রয়োজনে কয়েক শ মানুষ দুই সপ্তাহ পর্যন্ত থাকতে পারবে।

বিশ্বের অন্যতম সুসজ্জিত বাহিনী হিসেবে বিবেচিত জাপানের প্রতিরক্ষা বাহিনী সম্প্রতি দূর-পাল্লার মার্কিন টমাহক ক্ষেপণাস্ত্র ও নিজস্ব ‘টাইপ-১২’ ক্ষেপণাস্ত্রে সফল পরীক্ষা চালিয়েছে, যা চীনের উপকূল পর্যন্ত আঘাত হানতে সক্ষম।

নতুন ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা, দূরপাল্লার রাডার ঘাঁটি এবং যৌথ মার্কিন-জাপানি মহড়া এটাই প্রমাণ করে যে, জাপান নিজেই যুদ্ধক্ষেত্রে পরিণত হওয়ার আশঙ্কা করছে।

তাইওয়ানের চারপাশের আকাশ ও সমুদ্র এলাকায় চীনের সামরিক তৎপরতা এখন প্রায় নিয়মিত ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে, তবু তা দিন দিন আরও বাড়ছে।

গত বছর তাইওয়ান জানিয়েছে, তাদের বিমান প্রতিরক্ষা অঞ্চলে তিন হাজারের বেশি চীনা যুদ্ধবিমান প্রবেশ করেছে, যা আগের দুই বছরের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ। এই তথ্য দিয়েছে ‘পিএলএট্র্যাকার’ নামের একটি উন্মুক্ত তথ্যভান্ডার, যা পরিচালনা করেন মার্কিন বিশ্লেষক জেরাল্ড সি. ব্রাউন ও বেঞ্জামিন লুইস।

সরকার বাসিন্দাদের দ্রুত সরিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনাও হাতে নিয়েছে। তবে তাইওয়ান প্রণালিতে কোনো সংকট দেখা দিলে এক লাখেরও বেশি মানুষকে সরিয়ে নিতে প্রায় এক সপ্তাহ সময় লাগবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। সে ক্ষেত্রে বোমা আশ্রয়কেন্দ্রগুলো হবে অস্থায়ী আশ্রয়ব্যবস্থা।

বিশ্লেষকদের মতে, জাপানের এই আশ্রয়কেন্দ্র কৌশল শুধু তার নিজস্ব নাগরিকদের নিরাপত্তা নয়, বরং চীনা আগ্রাসনের মুখে তাইওয়ান থেকে পালিয়ে আসা শরণার্থীদের আশ্রয় দেওয়ার সম্ভাবনার কথাও ইঙ্গিত করে।

সম্ভাব্য বড় ধরনের যুদ্ধের প্রস্তুতি দ্বীপপুঞ্জের মানুষের চোখে এখন পরিষ্কার। তারা উদ্বিগ্ন, কারণ সরকার যাকে ‘তাইওয়ান জরুরি পরিস্থিতি’ বলছে, তার একেবারে সামনের সারিতেই রয়েছে তাদের এলাকা।

জাপানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী জেনারেল নাকাতানি গত জানুয়ারিতে ইয়োনাগুনির সরিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা পরিদর্শন করতে গিয়ে বলেন, ‘পরিকল্পনাটি খুবই বিস্তারিত, আর আমি এই প্রত্যন্ত সীমান্ত দ্বীপগুলোতে সত্যিই এক ধরনের সংকটের চাপ অনুভব করেছি।’

তাইওয়ানকেন্দ্রিক এই উত্তেজনার পেছনে রয়েছে বেইজিংয়ের দীর্ঘদিনের দাবি, তাইওয়ান চীনের অবিচ্ছেদ্য অংশ। শি জিনপিং ২০২৭ সালের মধ্যে সেনাবাহিনীকে তাইওয়ান দখলের জন্য প্রস্তুত থাকতে বলেছেন।

যদিও এটা এখনো স্পষ্ট নয় যে, রাজনৈতিক ইচ্ছা ও সামরিক সক্ষমতা একসঙ্গে কতটা অগ্রসর হয়েছে।

বেইজিংয়ের কর্মকর্তারা বলছেন, তাইওয়ান মার্কিন-চীন সম্পর্কের একটি মূল বিষয়।

গত মাসে সিঙ্গাপুরে এশিয়ার একটি গুরুত্বপূর্ণ নিরাপত্তা সম্মেলনে মার্কিন প্রতিরক্ষা সচিব পিট হেগসেথ বলেন, ‘চীনের সেনাবাহিনী আসল যুদ্ধের প্রস্তুতি নিচ্ছে এবং চীনের আক্রমণ যেকোনো সময় শুরু হতে পারে।’

তার এই মন্তব্যের পর বেইজিং অভিযোগ তোলে, তিনি ইচ্ছা করেই উত্তেজনা বাড়ানোর চেষ্টা করছেন।

চীনের এই আগ্রাসী মনোভাব শুধু তাইওয়ান নয়, গোটা অঞ্চলের নিরাপত্তা কাঠামোকে নাড়িয়ে দিয়েছে। তাইওয়ানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও বলছে, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উচ্চমাত্রার সতর্কতা ও সমর্থন তাইপেই স্বাগত জানায়।

তাইপেইয়ের সঙ্গে ওয়াশিংটনের কোনো আনুষ্ঠানিক কূটনৈতিক সম্পর্ক না থাকলেও যুক্তরাষ্ট্রের আইনে তাইওয়ানকে অস্ত্র দেওয়া এবং আত্মরক্ষায় সহায়তা করা বাধ্যতামূলক।

সাবেক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এক পর্যায়ে ইঙ্গিত দিয়েছিলেন, প্রয়োজন হলে তিনি মার্কিন সেনা দিয়ে তাইওয়ানকে রক্ষা করতে রাজি। তবে বর্তমান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এ বিষয়ে তার অবস্থান স্পষ্ট করে বলেননি।

নিশ্চিতভাবে বলা যায়, জাপানের সাহায্য ছাড়া চীনের বিরুদ্ধে প্রশান্ত মহাসাগরে যুদ্ধ জেতা যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষে সম্ভব নয়। জাপানের ১৪ হাজারের বেশি দ্বীপপুঞ্জ মিলিয়ে দেশটির বিশাল এলাকা প্রশান্ত মহাসাগরের গুরুত্বপূর্ণ দ্বীপ-শৃঙ্খলের এক হাজার মাইল জুড়ে বিস্তৃত।

জাপানের আত্মরক্ষা বাহিনী বিশ্বে সবচেয়ে উন্নত সামরিক বাহিনীগুলোর একটি। কারণ তাদের শক্তিশালী শিল্পভিত্তি এবং মার্কিন রপ্তানি লাইসেন্সের সুযোগে তারা এফ-৩৫ স্টেলথ জেট ও টমাহক ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্রের মতো অত্যাধুনিক অস্ত্র তৈরি ও ব্যবহার করতে পারে।

যদিও জাপানের সংবিধানে যুদ্ধ বা শক্তি প্রয়োগ নিষিদ্ধ, তবু সাম্প্রতিক বছরগুলোতে টোকিও সেই নিয়মের ব্যাখ্যা বদলেছে। এখন প্রয়োজন হলে জাপান নিজে আক্রমণের শিকার না হলেও যুক্তরাষ্ট্রসহ মিত্রদের সঙ্গে মিলিতভাবে আত্মরক্ষামূলক সামরিক অভিযান চালাতে পারে।

তাইওয়ানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র সিয়াও কুয়াং-ওয়ে নিউজউইক-কে বলেন, ‘সাম্প্রতিক বছরগুলোতে চীনের সেনা শক্তি বাড়ানো এবং একপাক্ষিকভাবে অঞ্চলের ভারসাম্য বদলানোর চেষ্টা জাপান, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের মতো গণতান্ত্রিক দেশগুলোর মধ্যে গভীর উদ্বেগ তৈরি করেছে। তাইওয়ান প্রণালি ও এই এলাকার নিরাপত্তা পরিস্থিতির প্রতি আন্তর্জাতিক দৃষ্টি ও মনোযোগকে তাইপেই স্বাগত জানায়।

নিউজউইক জাপান সরকারের কাছে এ বিষয়ে মন্তব্য চাইলেও তারা কোনো জবাব দেয়নি। চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও কোনো সাড়া দেয়নি।

এদিকে, তাইওয়ান তার প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা শক্তিশালী করতে কাজ করছে, তবে তা অনেকের মতে খুব ধীরে এগোচ্ছে বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রে থাকা দেশটির সমর্থকদের চোখে।

তবে তাইওয়ানের রাজনৈতিক, সামরিক ও বেসামরিক নেতৃত্ব ইউক্রেন যুদ্ধ থেকে অনেক কিছু শিখছে; যেমন, কীভাবে আন্তর্জাতিক সহায়তা আদায় করা যায়, সমুদ্র ড্রোন ও এইচআইএমএআরএস রকেট লঞ্চার ব্যবহার করা যায়, আর কীভাবে সংঘর্ষে প্রতিরোধ গড়ে তোলা যায়।

অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্র ও জাপানের সেনাবাহিনী এককভাবে ও যৌথভাবে তাদের প্রতিরক্ষা কৌশলে বড় ধরনের পরিবর্তন আনছে। প্রশান্ত মহাসাগরীয় এলাকায় মার্কিন প্রতিরক্ষা নীতিতে গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন হচ্ছে যেখানে বিশাল সমুদ্র, ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা দ্বীপপুঞ্জ এবং অল্পপরিসরের স্থলভূমি রয়েছে, সেসব জায়গায় দ্রুত প্রতিক্রিয়ার উপযোগী কৌশল তৈরি করা হচ্ছে।

জাপানের সাকিশিমা দ্বীপপুঞ্জের তিনটি বড় দ্বীপ ইয়োনাগুনি, মিয়াকো ও ইশিগাকি গত এক দশকে নতুন জাপানি সেনা ঘাঁটির আবাস হয়েছে। ইয়োনাগুনিতে মাত্র এক হাজার ৫০০ মানুষ বাস করে, সেখানে এখন উন্নত পিএসি-৩ ক্ষেপণাস্ত্র সিস্টেম রয়েছে এবং পাহাড়ের ওপর দূরপাল্লার রাডার প্রতিদিন চীনের সেনা চলাচল পর্যবেক্ষণ করে।

এ সপ্তাহে জাপান তাদের প্রধান দ্বীপ হোক্কাইডোতে প্রথমবারের মতো ‘টাইপ-৮৮’ নামের একটি স্বল্প-পাল্লার জাহাজ-বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা করেছে। একই সঙ্গে জাপান দূরপাল্লার মার্কিন তৈরি টমাহক ও নিজস্ব ‘টাইপ-১২’ ক্ষেপণাস্ত্রও সংগ্রহ করছে, যেগুলো চীনের মূল ভূখণ্ডে আঘাত হানতে সক্ষম।

জাপানের পরিকল্পনাকারীরা মনে করছেন, চীন হয়তো সাকিশিমা দ্বীপপুঞ্জ থেকে ১০০ মাইল উত্তরের সেনকাকু বা দিয়াওয়ু নামের বিতর্কিত দ্বীপগুলোর দিকেও অগ্রসর হতে পারে।

এ জন্য জাপানি ও মার্কিন সেনারা একসঙ্গে প্রশিক্ষণ নিচ্ছে, যাতে শত্রুদের দখল থেকে দ্বীপগুলো পুনরুদ্ধার করা যায়। তারা এমনকি সেইসব এলাকায় নকল নৌ-আক্রমণের অনুশীলনও করেছে, যেগুলো চীনা নৌবাহিনী নিয়মিত ব্যবহার করে।

মার্কিন-জাপান জোট এখন চীনের হুমকি নিয়ে খোলাখুলি কথা বলছে, ঠিক যেভাবে দক্ষিণ কোরিয়া সেটা করতে পারছে না। কারণ, সিউল আশঙ্কা করে—এই অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের মনোযোগ কমে গেলে কিম জং উন তা কাজে লাগিয়ে উত্তরের সীমান্তে নতুন সংকট তৈরি করতে পারে।

ব্রাতিস্লাভাভিত্তিক গবেষণা সংস্থা গ্লোবসেকের গবেষক ব্রাইস ব্যারোস নিউজউইক-কে বলেন, জাপান যেভাবে এই আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণের প্রস্তুতি প্রকাশ্যে আনছে, তা দেখে মনে হচ্ছে জাপান ও তাইওয়ানের মধ্যে এক ধরনের গভীর সমন্বয় গড়ে উঠেছে, যদিও তা আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকার করা হয় না।

তিনি আরও বলেন, এই প্রস্তুতিগুলো শুধু জাপান নয়, অঞ্চলটির অন্যান্য দেশের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তোলে। যেমন, তিনি জানতে চান বাশি চ্যানেলের আশেপাশে থাকা ফিলিপাইনের দ্বীপপুঞ্জগুলোর নিরাপত্তা নিয়ে সে দেশের সরকার কী ব্যবস্থা নিচ্ছে, কারণ যুদ্ধ হলে এসব এলাকাও সামনে পড়তে পারে।

তাইপেইয়ের ন্যাশনাল ডিফেন্স অ্যান্ড সিকিউরিটি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের গবেষক সুন-ইয়েন ওয়াং বলেন, এসব আশ্রয়কেন্দ্র শুধু জাপানি নাগরিকদের নয়, যুদ্ধ শুরু হলে তাইওয়ান থেকে পালিয়ে আসা শরণার্থীদের থাকার জন্যও ব্যবহৃত হতে পারে, এই সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যায় না।

তিনি আরও বলেন, ‘তাইওয়ান থেকে শরণার্থী আসতে পারে’- বিষয়টি প্রায় দুই বছর আগে থেকেই আলোচনায় এসেছে। এমন চিন্তাভাবনা জাপানের অনেকের মনে ভিয়েতনাম যুদ্ধের সময়কার ‘নৌকায় পালিয়ে আসা মানুষদের’ স্মৃতিও জাগিয়ে তুলতে পারে।

এরপর কী হবে

চলতি বছরের শুরুতে পেন্টাগনের নীতিনির্ধারক এলব্রিজ কলবি এক শুনানিতে বলেন, তাইওয়ানের ওপর চীনের হামলা ঠেকাতে ট্রাম্প প্রশাসন ‘অস্বীকৃতি’ কৌশলকে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে।

এই কৌশলটি ‘শাস্তির মাধ্যমে প্রতিরোধ’ থেকে আলাদা। শাস্তির কৌশলে হামলার পর প্রতিপক্ষকে কঠিন পরিণতির হুমকি (যেমন অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা) দেওয়া হয়। কিন্তু ‘অস্বীকৃতি’ কৌশলে আগেই আক্রমণকারীকে বোঝানো হয় যে, ‘যুদ্ধ করে সে তার লক্ষ্য কোনোভাবেই পূরণ করতে পারবে না, বরং বড় ধরনের সামরিক বিপর্যয়ে পড়ববে’।

চীনের মতো শক্ত প্রতিপক্ষকে নিরুৎসাহিত করতে যুক্তরাষ্ট্রকে এমন বার্তা দিতে হতে পারে যে, তারা সত্যিই সামরিকভাবে হস্তক্ষেপে প্রস্তুত। তবে এতে প্রশ্ন উঠছে, যুদ্ধের জন্য আমেরিকান জনগণ কতটা মানসিকভাবে প্রস্তুত?

রোনাল্ড রিগ্যান ইনস্টিটিউটের সাম্প্রতিক এক জরিপ বলছে, ১০ জনের মধ্যে সাতজন আমেরিকান তাইওয়ানকে রক্ষায় সামরিক পদক্ষেপের পক্ষে।