ইরানের সাম্প্রতিক সংঘাতপূর্ণ পরিস্থিতিতে ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের লক্ষ্য পূরণ হয়নি বলে দাবি করেছেন তেহরানের সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজের বিশিষ্ট গবেষক আলী আকবর দারেনি। তিনি বলেন, ইরানের জনগণ ভিন দেশি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ এবং দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় প্রস্তুত।
দারেনি আরও বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচিকে ধ্বংস করে ‘ক্ষমতার অবস্থান’ থেকে আলোচনায় বসতে চেয়েছিলেন। তার উদ্দেশ্য ছিল ইরানকে দুর্বল করে এমন একটি অবস্থানে নিয়ে যাওয়া, যেখানে তারা বাধ্য হবে আমেরিকার শর্তে মাথা নত করতে ‘
ট্রাম্প একটি সুবর্ণ সুযোগ নষ্ট করেছেন বলে মনে করেন দারেনি। তিনি বলেনন, ‘যখন ইরান আলোচনার টেবিলে ছিল, তখন তিনি আক্রমণাত্মক নীতি গ্রহণ করেন এবং কূটনীতির পরিবর্তে আগ্রাসনকেই বেছে নেন। এতে তিনি প্রমাণ করেছেন, তিনি ‘শান্তির জন্য’ নন, বরং যুদ্ধের পক্ষে।’
দারেনির মতে, ইসরায়েলের মূল লক্ষ্য ছিল ইরানের পারমাণবিক অবকাঠামো ধ্বংস করা, অভ্যন্তরীণ বিশৃঙ্খলা তৈরি করা এবং শেষ পর্যন্ত ইসলামী প্রজাতন্ত্রের নেতৃত্ব পতনের দিকে ঠেলে দেওয়া।
ইসরায়েলের এই আগ্রাসন ব্যর্থ হয়েছে– এবং এটি ব্যর্থও হতো বলে তিনি মনে করেন। তিনি বলেন, ‘বরং, এই আগ্রাসনের ফলে ইরানের জনগণ আরও ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। দেশ ও পতাকার চারপাশে জড়ো হচ্ছে, জাতীয়তাবাদের আবেগ আরও উসকে উঠেছে।’;
গবেষক দারেনি আরও বলেন, পশ্চিমা হামলা ও হুমকির জবাবে ইরানিরা এখন আরও বেশি করে সরকারের পাশে দাঁড়াচ্ছে। তার মতে, অতীতে বহুবার এমন বিদেশি হস্তক্ষেপ ইরানকে ক্ষতি করতে পারেনি, বরং তা দেশের ভেতরে ঐক্য ও প্রতিরোধের শক্তি বৃদ্ধি করেছে।
তিনি আরও বলেন, ‘ওয়াশিংটন ও তেল আবিব ইরানের রাজনৈতিক কাঠামো, জনগণের প্রতিরোধ ক্ষমতা এবং আঞ্চলিক প্রভাব সম্পর্কে ভুল ধারণা পোষণ করে চলছে। তারা মনে করে সামরিক চাপ ও স্যাংশন দিয়ে ইরানকে দমন করা যাবে, অথচ বাস্তবতা বলছে ভিন্ন কথা।
ইরান ও পশ্চিমা বিশ্বের মধ্যে উত্তেজনার ইতিহাস বহু পুরনো। তবে বর্তমান প্রেক্ষাপটে ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের লক্ষ্য বাস্তবায়নে যে বাধার সম্মুখীন হয়েছে, তা ইরানকে আরও শক্ত অবস্থানে নিয়ে যেতে পারে বলে মনে করছেন অনেক আন্তর্জাতিক বিশ্লেষক।
আপনার মতামত লিখুন :