লোহিত সাগরে একাধিক হামলার শিকার একটি বাণিজ্যিক জাহাজে আগুন ধরে গেছে এবং সেটি ডুবে যাওয়ার শঙ্কা তৈরি হয়েছে।
রোববার (৬ জুলাই) যুক্তরাজ্যের সামরিক কর্তৃপক্ষ এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
ধারণা করা হচ্ছে, জাহাজটিতে বন্দুক, রকেটচালিত গ্রেনেড (আরপিজি) ও ড্রোনবোট দিয়ে হামলা চালানো হয়েছে। এখনও কেউ হামলার দায় স্বীকার করেনি, তবে হামলার ধরন ও মাত্রা দেখে ইয়েমেনের হুথি বিদ্রোহীদের ওপর সন্দেহ করা হচ্ছে।
যুক্তরাজ্যের ইউকে মেরিটাইম ট্রেড অপারেশনস (ইউকেএমটিও) এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, জাহাজটিতে আগুন লেগেছে এবং সেটিতে পানি ঢুকে পড়ছে। ক্রুদের নিরাপদে সরিয়ে নেওয়ার প্রস্তুতি চলছে।
ব্রিটিশ বেসরকারি নিরাপত্তা সংস্থা অ্যামব্রে জানায়, আটটি ছোট স্পিডবোট প্রথমে জাহাজে হামলা চালায়। এরপর ড্রোনবোট পাঠানো হয়, যার মধ্যে দুটি বিস্ফোরিত হয়ে জাহাজে আঘাত হানে। জাহাজে থাকা নিরাপত্তাকর্মীরা আরও দুটি ড্রোনবোট ধ্বংস করেছে।
হামলার ঘটনা ইয়েমেনের হুথি-নিয়ন্ত্রিত হোদেইদা শহর থেকে প্রায় ১০০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে ঘটেছে বলে জানিয়েছে ইউকেএমটিও।
হুথি-নিয়ন্ত্রিত উপগ্রহ চ্যানেল আল-মাসিরাহ হামলার খবর নিশ্চিত করলেও হামলার দায় স্বীকার করেনি। মার্কিন সেনাবাহিনীর সেন্ট্রাল কমান্ড বলেছে, তারা বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করছে।
উল্লেখ্য, গাজায় ইসরায়েলি অভিযানের প্রতিক্রিয়ায় হুথিরা লোহিত সাগরে বেশ কিছু বাণিজ্যিক জাহাজে ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালিয়েছে। যদিও গত মার্চে যুক্তরাষ্ট্র হুথিদের ওপর বড় ধরনের বিমান হামলা চালানোর পর কিছুদিন তারা হামলা বন্ধ রেখেছিল।
রোববার হুথিরা দাবি করেছে, তারা ইসরায়েলের উদ্দেশ্যে একটি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে, তবে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানিয়েছে তারা সেটি প্রতিহত করেছে।
২০২৩ সালের নভেম্বর থেকে ২০২৫ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত হুথিরা ১০০টিরও বেশি বাণিজ্যিক জাহাজে হামলা চালিয়েছে। এর মধ্যে দুটি জাহাজ ডুবে গেছে এবং চারজন নাবিক নিহত হয়েছে। এই ধরনের হামলার কারণে লোহিত সাগর করিডোরে জাহাজ চলাচলে বড় ধরনের বিঘ্ন সৃষ্টি হয়েছে। এই রুট দিয়ে বছরে প্রায় ১ ট্রিলিয়ন ডলারের পণ্য পরিবহন হয়ে থাকে।