বুধবার, ১৬ জুলাই, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


বিশ্ব ডেস্ক

প্রকাশিত: জুলাই ১৫, ২০২৫, ০৯:৩৬ পিএম

সমুদ্র উপকূলে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা, শেষ আশ্রয়টুকুও হারাল ফিলিস্তিনিরা

বিশ্ব ডেস্ক

প্রকাশিত: জুলাই ১৫, ২০২৫, ০৯:৩৬ পিএম

গাজার সমুদ্র উপকূল | ছবি- সংগৃহীত

গাজার সমুদ্র উপকূল | ছবি- সংগৃহীত

দুই বছর ধরে চলা যুদ্ধের ভেতরে থাকা গাজার মানুষের জন্য ভূমধ্যসাগরের উপকূল ছিল একমাত্র আশ্রয়ের জায়গা। খাবার, বিশ্রাম, জীবিকা সব কিছুতেই এই সমুদ্র কিছুটা স্বস্তি দিত। যুদ্ধ ও দখলদারত্ব থেকে সাময়িক মুক্তি মিলত এখানে। কিন্তু এখন সেই শেষ আশ্রয়টুকুও তারা হারিয়েছে। খবর দ্য ন্যাশনাল

সম্প্রতি একটি আদেশে ‘ইসরায়েলি’ সেনাবাহিনী গাজার ফিলিস্তিনিদের জন্য সমুদ্র ব্যবহার সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ করেছে। নতুন নির্দেশনায় বলা হয়েছে, কেউ যেন সাঁতার কাটতে, মাছ ধরতে বা ডাইভিং করতেও উপকূলে না যায়। এখন গাজার উপকূলে সমুদ্রে প্রবেশ শাস্তিযোগ্য অপরাধ।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে ‘ইসরায়েলি’ সেনাবাহিনীর মুখপাত্র আভিচাই আদ্রায়ি লেখেন, ‘আমরা অনুরোধ করছি, জেলে, সাঁতারু এবং ডাইভাররা যেন সমুদ্রে না যান। উপকূল বরাবর সমুদ্রের ভেতর প্রবেশ বিপজ্জনক। কেউ এ নির্দেশনা লঙ্ঘন করলে সেনাবাহিনী ব্যবস্থা নেবে।’

গাজার জেলে সম্প্রদায়ের সদস্য ৫২ বছর বয়সী মুনথির আয়াশ বলেন, ‘আমরা সমুদ্র থেকেই বাঁচি। যদি মাছ ধরতে না পারি, তাহলে খেতেই পারি না।’ শৈশব থেকেই তিনি মাছ ধরেন। হাজারো গাজাবাসীর মতো তিনিও নিয়মিত জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সমুদ্রের কাছাকাছি পানিতে মাছ ধরতে যেতেন।

‘ইসরায়েলে’র বিধিনিষেধ অনুযায়ী, এতদিন তারা উপকূল থেকে ৭০০ মিটারের বেশি দূরে যেতে পারতেন না। সেই অল্প সুযোগটাও ছিল ঝুঁকিপূর্ণ। কিন্তু এবার সেই সীমিত সুযোগটুকুও বন্ধ হয়ে গেছে।

‘ইসরায়েলি’ সেনাবাহিনী এখন পুরো গাজা উপকূলকে ‘অফ-লিমিট’ ঘোষণা করেছে। গাজার ফিশারম্যান সিন্ডিকেটের প্রধান জাকারিয়া বাকর এই নিষেধাজ্ঞাকে নিরাপত্তা নয়, বরং যুদ্ধের অংশ বলেই দেখছেন। তিনি বলেন, ‘এটা কোনো নিরাপত্তা ব্যবস্থা নয়। এটা অর্থনৈতিক, সামাজিক ও মনস্তাত্ত্বিক যুদ্ধ, ধীরে ধীরে আমাদের নিঃশেষ করার অস্ত্র।’

যুদ্ধ আর বাস্তুচ্যুতির এই সময়ে গাজার লাখো মানুষের জন্য সমুদ্র ছিল একমাত্র আশ্রয়। ২৬ বছর বয়সী ইব্রাহিম দাওলা, যিনি গাজার আল-জাইতুন এলাকা থেকে বিতাড়িত হয়েছেন, এখন সমুদ্র উপকূলে একটি ত্রাণ তাম্বুতে বাস করছেন। তার কাছে এই উপকূল ছিল গোসলখানা, বিশ্রামের জায়গা এবং যুদ্ধ থেকে দূরে যাওয়ার একমাত্র উপায়।

এই যুদ্ধ শুধু জেলেদের জীবিকা নয়, প্রজন্ম ধরে চলে আসা এক সংস্কৃতিকেও ধ্বংস করেছে। মুনথির আয়াশ বলেন, ‘আগেও যুদ্ধ হয়েছে, কিন্তু তখনও আমরা কোনো না কোনোভাবে মাছ ধরতে পেরেছি। কিন্তু এবার ওরা সব কিছু শেষ করে দিতে চায়। ওরা আমাদের মুছে ফেলতে চায়।’

তিনি থেমে যান, কিছুক্ষণ চুপ করে থাকেন। তারপর চোখের জল মুছে উপকূলের দিকে তাকিয়ে বলেন, ‘কিন্তু সমুদ্রটা আমাদের। এই জমিটাও আমাদের। ওরা যতই চেষ্টা করুক, এটা আমাদেরই থাকবে।’

Shera Lather
Link copied!