ইসরায়েল সিরিয়াকে বিভক্ত করার চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ করেছেন সিরিয়ার অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল-শারা। দেশটির রাজধানী দামেস্কে ইসরায়েলের ব্যাপক হামলার পর এ অভিযোগ করেছেন তিনি। এ সময় সংখ্যালঘু দ্রুজ জনগোষ্ঠীর সদস্যদের সুরক্ষার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন আল-শারা।
সম্প্রতি সিরিয়ার দক্ষিণাঞ্চলীয় সুয়েইদা প্রদেশে দ্রুজ যোদ্ধাদের সঙ্গে সেনাবাহিনীর সংঘর্ষ শুরু হয়। এতে দুই পক্ষের বহু মানুষ নিহত হয়েছেন। এরই মধ্যে বুধবার (১৬ জুলাই) দামেস্কে হামলা চালায় ইসরায়েলি বাহিনী। সুয়েইদা প্রদেশ থেকে সিরীয় বাহিনীর প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে ইসরায়েল সরকার বলেছে, দ্রুজদের রক্ষার লক্ষ্যে কাজ করছে তারা।
দ্রুজ একটি ক্ষুদ্র ধর্মীয় গোষ্ঠী। ধর্মবিশ্বাসের দিক থেকে তারা ইসলামের একটি শাখা হিসেবে বিবেচিত। লেবানন ও ইসরায়েলেও প্রভাবশালী এই গোষ্ঠীর অনুসারী রয়েছে। সম্প্রতি দ্রুজদের সঙ্গে বেদুইন গোষ্ঠীর সংঘর্ষ হয়। ওই সংঘর্ষ থামাতে গত সোমবার সুয়েইদা প্রদেশে হস্তক্ষেপ করে সিরীয় বাহিনী। তবে শেষ পর্যন্ত দ্রুজ যোদ্ধাদের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে সামরিক বাহিনী।
সোমবার থেকে চার দিন ধরে চলা সেনাবাহিনী ও দ্রুজ যোদ্ধাদের সংঘর্ষে অন্তত ৩৫০ জন নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে যুক্তরাজ্যভিত্তিক মানবাধিকার পর্যবেক্ষণ সংস্থা সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস। তাদের মধ্যে ইসরায়েলের হামলায় নিহত এবং দ্রুজ-সামরিক বাহিনী সংঘর্ষে নিহতরা রয়েছেন। বেসামরিক ব্যক্তিদের মধ্যে রয়েছেন চিকিৎসাকর্মী, নারী ও শিশুরা।
ইসরায়েলের হামলার পর বৃহস্পতিবার (১৭ জুলাই) জনগণের উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে আহমেদ আল-শারা বলেন, সিরীয়দের ঐক্য ভেঙে ফেলার চেষ্টা করছে ইসরায়েল। তারা সিরিয়ার স্থিতিশীলতাকে ক্রমাগত লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করছে এবং বাশার আল-আসাদের পতনের পর থেকে সিরীয়দের মধ্যে বিভেদ তৈরি করেছে। দ্রুজ জনগোষ্ঠীর মানুষদের রক্ষা করা সিরিয়া সরকারের অগ্রাধিকার।
আল-শারা একসময় আল-কায়েদার একটি শাখার নেতৃত্বে ছিলেন। ২০১৬ সালে সশস্ত্র সংগঠনটির সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করেন তিনি। গত বছর তার নেতৃত্বে সিরিয়ায় বাশার আল-আসাদ সরকারের পতন হয়। এর পর থেকে তিনি সিরিয়ার অন্তর্বর্তী প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
এরই মধ্যে বুধবার মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও বলেন, সব পক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। ‘ভয়াবহ এই পরিস্থিতি’ থামাতে ঐকমত্য হয়েছে। এরপর সংঘাত থামান সিরীয় সেনা ও দ্রুজ যোদ্ধারা। বুধবার রাতে সেনারা সুয়েইদা ছেড়ে যান।
আপনার মতামত লিখুন :