ভারতের সেন্ট্রাল বোর্ড অব সেকেন্ডারি এডুকেশন (সিবিএসই) নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্য পরীক্ষায় ‘বই খুলে উত্তর দেওয়ার’ (ওপেন-বুক অ্যাসেসমেন্ট) নতুন পদ্ধতি চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আগামী ২০২৬-২৭ শিক্ষাবর্ষ থেকেই পরীক্ষায় এ নিয়ম কার্যকর হবে।
সিবিএসইর সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী বোর্ডের অনুমোদনের পর এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আপাতত কেবল নবম শ্রেণিতে এই পদ্ধতি চালু হলেও ভবিষ্যতে অন্যান্য শ্রেণিতেও এটি সম্প্রসারণ করার পরিকল্পনা রয়েছে।
সিবিএসই জানায়, জাতীয় শিক্ষানীতি ২০২০ এবং স্কুল শিক্ষার জন্য প্রণীত জাতীয় পাঠ্যসূচি কাঠামো (এনসিএফএসই) ২০২৩-এর আলোকে পরীক্ষায় শিক্ষার্থীদের বিশ্লেষণী ও চিন্তাশক্তি বাড়ানোর লক্ষ্যেই এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এতে মুখস্তনির্ভরতার পরিবর্তে শিক্ষার্থীরা পাঠ্যবই ও পাঠ অনুধাবনের মাধ্যমে উত্তর দিতে উৎসাহিত হবে।
শিক্ষার্থীরা বাংলা, গণিত, বিজ্ঞান ও সমাজবিজ্ঞান- এই চারটি বিষয়ের পরীক্ষায় নিজেদের পাঠ্যবই ও ক্লাসনোট ব্যবহার করতে পারবে। পরীক্ষার সময় প্রয়োজন অনুযায়ী বইয়ের পাতা উল্টে দেখে উত্তর লিখতে পারবে তারা।
তবে এ পদ্ধতি বাধ্যতামূলক নয়; প্রতিটি স্কুল চাইলে এই পরীক্ষাপদ্ধতি চালু করতে পারবে। কীভাবে এবং কোন পদ্ধতিতে পরীক্ষা নেওয়া হবে, তা নির্ধারণ করবে সংশ্লিষ্ট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।
২০২৩ সালের ডিসেম্বরে নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের ওপর পরীক্ষামূলকভাবে ‘ওপেন বুক’ পরীক্ষা নেয় সিবিএসই। পরবর্তীতে ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে প্রকাশিত ফল অনুযায়ী দেখা যায়, শিক্ষার্থীদের প্রাপ্ত নম্বর ছিল ১২ থেকে ৪৭ শতাংশের মধ্যে।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এর মাধ্যমে স্পষ্ট হয়েছে- বই ব্যবহার করেও অনেক শিক্ষার্থীর পাঠ্যবিষয়ক গভীর অনুধাবন গড়ে ওঠেনি। ফলে পরীক্ষার ধরন পাল্টালেও শিক্ষার্থীদের শেখার পদ্ধতিতেও পরিবর্তন আনতে হবে।
এ উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন শিক্ষকরাও। তাদের মতে, বই খুলে পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ থাকলে শিক্ষার্থীদের মুখস্তনির্ভরতা কমবে, পাশাপাশি বিশ্লেষণ, চিন্তাভাবনা ও প্রয়োগমূলক দক্ষতা বাড়বে। এমন উদ্যোগ বাংলাদেশসহ উপমহাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থায়ও যুগান্তকারী পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিতে পারে।
আপনার মতামত লিখুন :