দক্ষিণ কোরিয়ার সেনাবাহিনীর সদস্য সংখ্যা গত ছয় বছরে ২০ শতাংশ কমে ৪ লাখ ৫০ হাজারে নেমে এসেছে। বিশ্বের সর্বনিম্ন জন্মহারের এই দেশে বাধ্যতামূলক সেনাসেবার উপযুক্ত বয়সি পুরুষের সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে কমে যাওয়ায় এ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে বলে জানিয়েছে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়। সংবাদমাধ্যম দ্য স্ট্রেইটস টাইমসের এক প্রতিবেদনে এ খবর জানানো হয়েছে।
১০ আগস্ট প্রকাশিত প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, সেনাসেবার উপযুক্ত পুরুষের সংখ্যা দ্রুত কমে যাওয়ায় কর্মকর্তার ঘাটতিও দেখা দিচ্ছে, যা চলতে থাকলে সেনাবাহিনীর কার্যক্রম ব্যাহত হতে পারে। এই প্রতিবেদনটি শাসকদল ডেমোক্রেটিক পার্টির সংসদ সদস্য চু মি-এই-এর কাছে উপস্থাপন করা হয়, পরে তার কার্যালয় এটি প্রকাশ করে।
সরকারি তথ্য অনুযায়ী, ২০১৯ থেকে ২০২৫ সালের মধ্যে ২০ বছর বয়সি পুরুষের সংখ্যা ৩০ শতাংশ কমে ২ লাখ ৩০ হাজারে নেমে এসেছে। সাধারণত শারীরিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পর এই বয়সেই অধিকাংশ পুরুষ সেনাসেবায় যোগ দেন। বর্তমানে দক্ষিণ কোরিয়ায় বাধ্যতামূলক সেনাসেবা ১৮ মাসের, যা আগে অনেক দীর্ঘ ছিল। ১৯৫৩ সালে কোরিয়ান যুদ্ধ শেষ হওয়ার সময় সুস্থ-সবল পুরুষদের ৩৬ মাস সেনাসেবায় অংশ নিতে হতো।
সেনাবাহিনী জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সামরিক জোট এবং প্রতিরক্ষা শিল্পের উন্নয়নের ফলে সক্ষমতা বৃদ্ধি পাওয়ায় সেবার সময়সীমা কমানো সম্ভব হয়েছে। বর্তমানে প্রতিরক্ষা বাজেট ২০২৫ সালে ৬১ ট্রিলিয়ন উওন, যা উত্তর কোরিয়ার পুরো অর্থনীতির চেয়েও বড়।
তবুও প্রতিরক্ষা প্রস্তুতি বজায় রাখতে প্রয়োজনীয় সদস্যসংখ্যার তুলনায় সেনাবাহিনীতে এখনো ৫০ হাজার জনের ঘাটতি রয়েছে। এর মধ্যে প্রায় ২১ হাজার জন ঘাটতি নন-কমিশন্ড অফিসার পর্যায়ে।
বিশ্বের দ্রুততম বয়স্ক জনগোষ্ঠীর দেশগুলোর একটি দক্ষিণ কোরিয়ার জন্মহার ২০২৪ সালে ছিল মাত্র শূন্য দশমিক ৭৫ শতাংশ, যা একজন নারীর গড়ে সন্তান জন্মদানের সম্ভাব্য সংখ্যা নির্দেশ করে। ২০২০ সালে জনসংখ্যা ৫ কোটি ১৮ লাখে পৌঁছালেও সরকারি পূর্বাভাস অনুযায়ী ২০৭২ সালে তা কমে দাঁড়াবে ৩ কোটি ৬২ লাখে।
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন