রাশিয়ার যুদ্ধের সক্ষমতা ক্ষতিগ্রস্ত করা ও সাধারণ মানুষের দৈনন্দিন জীবন ব্যাহত করার লক্ষ্যে এখন ড্রোন হামলায় মনোনিবেশ করছে ইউক্রেন । তেল শোধনাগার, পাম্পিং স্টেশন ও জ্বালানিবাহী ট্রেনে এসব হামলা চালানো হচ্ছে। সংবাদমাধ্যম সিএনএনের হিসাব অনুযায়ী, শুধু এ মাসেই অন্তত ১০টি গুরুত্বপূর্ণ রুশ জ্বালানি স্থাপনায় ইউক্রেনীয় ড্রোন হামলা হয়েছে। ফলে ইউক্রেনের হামলায় তেলের দাম রেকর্ড উচ্চতায় পৌঁছেছে রাশিয়ায়। সংকট মোকাবিলায় রুশ সরকার পেট্রোল রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করলেও দাম বাড়ানো ঠেকানো যায়নি।
ইউক্রেনের গোয়েন্দা সংস্থা জানায়, হামলার শিকার শোধনাগারগুলো বছরে ৪ কোটি ৪০ লাখ টনের বেশি জ্বালানি পরিশোধন করে, যা রাশিয়ার মোট সক্ষমতার ১০ শতাংশেরও বেশি। ফলে রাশিয়ায় ইউক্রেনের ড্রোন হামলার কৌশল কার্যকর বলেই মনে হচ্ছে। সরকার ভর্তুকি দিলেও রাশিয়ার ভোক্তাদের পেট্রোল কিনতে বেশি খরচ করতে হচ্ছে। শুধু এ মাসেই সেন্ট পিটার্সবার্গ এক্সচেঞ্জে পেট্রোলের পাইকারি দাম প্রায় ১০ শতাংশ বেড়েছে। বছরের শুরু থেকে এ পর্যন্ত বৃদ্ধির হার প্রায় ৫০ শতাংশ।
দক্ষিণ রাশিয়ার সবচেয়ে বড় শোধনাগারটিও ইউক্রেনের হামলার লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়েছে। সিএনএন জানায়, ভলগোগ্রাদে অবস্থিত লুকওয়েল শোধনাগারে ১৪ আগস্ট ভোরে হামলার পর সেখান থেকে ধোঁয়ার কুণ্ডলী উঠতে দেখা যায়। রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ও এ শোধনাগার ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেছে। ১৯ আগস্ট সেখানে আবার হামলা চালানো হয়।
এদিকে রাশিয়ার কয়েকটি অঞ্চল ও তার দখলে নেওয়া ক্রিমিয়ায় পেট্রোলের ঘাটতির খবর পাওয়া গেছে। ক্রিমিয়ার গভর্নর সের্গেই আকসেনভ এ ঘাটতির জন্য ‘সরবরাহ ব্যবস্থার সমস্যাকে’ দায়ী করেছেন। সরকার প্রয়োজনীয় পরিমাণে জ্বালানি কেনা ও দাম স্থিতিশীল রাখতে সম্ভাব্য সব ব্যবস্থা নিচ্ছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
এদিকে বর্ধিত দামের বড় অংশ চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে ভোক্তাদের ওপর। বিশেষ করে রাশিয়ার দূর-পূর্বাঞ্চলে এর প্রভাব সবচেয়ে বেশি পড়ছে। বিশ্লেষকেরা বলছেন, এ অবস্থায় অন্তত এক মাসের জন্য কোনো স্বস্তি আশা করা যাবে না। জুলাই মাসের শেষ দিকে রুশ সরকার পেট্রোল রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করলেও অপরিশোধিত তেলের রপ্তানি বেড়ে গেছে।
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন