বিদেশি শিক্ষার্থী, সংস্কৃতি বিনিময় দর্শনার্থী ও গণমাধ্যমকর্মীদের জন্য ভিসার মেয়াদ সীমিত করার পরিকল্পনা করছে মার্কিন প্রশাসন। বৃহস্পতিবার (২৮ আগস্ট) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য প্রকাশ করে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
এতে বলা হয়, অভিবাসীদের ওপর অতিরিক্ত নজরদারি, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের আদর্শগত দৃষ্টিভঙ্গির ওপর ভিত্তি করে তাদের ভিসা ও গ্রিনকার্ড বাতিল এবং লক্ষাধিক অভিবাসীর আইনি মর্যাদা কেড়ে নেওয়ার পর, এবার অভিবাসন নিয়ে আরও কঠোর অবস্থান ট্রাম্প প্রশাসনের। বুধবার (২৭ আগস্ট) এ বিষয়ে প্রকাশিত প্রস্তাবিত সরকারি বিধিমালায় এ তথ্য জানানো হয়েছে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানুয়ারিতে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই ব্যাপকভাবে অভিবাসন দমন অভিযান শুরু করেন। সর্বশেষ এই উদ্যোগের পর বিদেশি শিক্ষার্থী, বিনিময় কর্মী ও বিদেশি সাংবাদিকদের জন্য প্রয়োজন হলেও দেশটিতে বাড়তি সময় অবস্থান করা কঠিন হবে।
প্রস্তাবিত বিধিমালা অনুযায়ী, বিদেশি শিক্ষার্থীদের এফ ভিসা, সংস্কৃতি বিনিময় কর্মসূচিতে যুক্তরাষ্ট্রে কাজের অনুমতি দেওয়া জে ভিসা ও গণমাধ্যমকর্মীদের আই ভিসার মেয়াদ নির্দিষ্ট করে দেওয়া হবে। বর্তমানে এসব ভিসার মেয়াদ কর্মসূচির সময়কাল বা যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক চাকরির সময় পর্যন্ত বৈধ থাকে।
যুক্তরাষ্ট্র সরকারের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় ১৬ লাখ বিদেশি শিক্ষার্থী এফ ভিসায় ছিলেন। ২০২৩ সালের ১ অক্টোবর থেকে প্রায় ৩ লাখ ৫৫ হাজার জনকে সংস্কৃতি বিনিময় কর্মসূচির আওতায় এবং ১৩ হাজার জনকে গণমাধ্যমকর্মী ভিসা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
প্রস্তাবিত বিধিমালায় বলা হয়েছে, শিক্ষার্থী ও বিনিময় ভিসার মেয়াদ সর্বোচ্চ চার বছরের বেশি হবে না। সাংবাদিকদের ভিসার মেয়াদ হবে সর্বোচ্চ ২৪০ দিন এবং চীনা নাগরিকদের ক্ষেত্রে তা ৯০ দিন। তবে, ভিসাধারীরা মেয়াদ বাড়ানোর জন্য আবেদন করতে পারবেন।
প্রস্তাবিত বিধিমালায় ট্রাম্প প্রশাসন জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানকালে ভিসাধারীদের আরও ভালোভাবে ‘পর্যবেক্ষণ ও তত্ত্বাবধান’ করার জন্য এই পরিবর্তন প্রয়োজন। এ ব্যবস্থার বিষয়ে মন্তব্য জানাতে দেশটির জনগণ ৩০ দিন সময় পাবে।
বিশ্বব্যাপী ৪ হাজার ৩০০টিরও বেশি প্রতিষ্ঠানে আন্তর্জাতিক শিক্ষাবিদদের প্রতিনিধিত্বকারী অলাভজনক সংস্থা এনএএফএসএ ২০২০ সালের এই প্রস্তাবের বিরোধিতা করেছে এবং ট্রাম্প প্রশাসনকে এমন পরিকল্পনা বাতিল করার আহ্বান জানিয়েছে। উল্লেখ্য, ট্রাম্প তার প্রথম মেয়াদের শেষের দিকে এই প্রস্তাব উত্থাপন করলেও কাজ শেষ করে যেতে পারেননি। পরবর্তীতে ডেমোক্র্যাট প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসন ২০২১ সালে এই প্রস্তাব প্রত্যাহার করে নেয়।