ভারতের পাঞ্জাবে নতুন করে টানা ভারি বৃষ্টিপাত বন্যা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে। ১৯৮৮ সালের পর রাজ্যে এটিই সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যা। ইতোমধ্যে রাজ্যের ২৩টি জেলা প্লাবিত হয়েছে এবং প্রাণহানি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৭ জনে।
সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে এ খবর জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, হিমাচল প্রদেশ ও জম্মু-কাশ্মীরের পার্বত্য এলাকায় টানা বৃষ্টির কারণে সুতলজ, বিয়াস ও রাভি নদীসহ বিভিন্ন নদীর পানি বিপজ্জনক হারে বেড়ে গিয়ে বন্যা পরিস্থিতি তীব্র করেছে। গুরদাসপুর, পাঠানকোট, ফাজিলকা, কপূরথলা, তারন তারান, ফিরোজপুর, হোশিয়ারপুর এবং অমৃতসার জেলার গ্রামগুলো সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত।
এদিকে, জননিরাপত্তা নিশ্চিতে রাজ্য সরকার সব সরকারি, বেসরকারি, স্বীকৃত ও সহযোগী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ ও পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট ৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছে।
দিল্লির সাবেক উপমুখ্যমন্ত্রী ও আম আদমি পার্টির শীর্ষ নেতা মণীশ সিসোদিয়ার সঙ্গে তারন তারান জেলার বন্যাকবলিত গ্রাম পরিদর্শন করেছেন রাজ্যের মন্ত্রীরা। তারা বিয়াস নদীর পাড়ের ঝুঁকিপূর্ণ বাঁধ পরিদর্শন করেন এবং স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে তাৎক্ষণিক চ্যালেঞ্জগুলো বোঝার চেষ্টা করেন।
কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহান বৃহস্পতিবার অমৃতসার, গুরদাসপুর ও কপূরথলার ক্ষতিগ্রস্ত গ্রাম সফর করবেন বলে জানা গেছে। তিনি কৃষকদের সঙ্গে কথা বলবেন এবং ক্ষতিগ্রস্ত ফসলের হিসাব নিতে রাজ্য কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করবেন। সরকারি হিসাব অনুযায়ী, ১ দশমিক ৪৮ লাখ হেক্টর জমির ফসল বন্যায় নষ্ট হয়েছে।
এরইমধ্যে পাঞ্জাবে সেনাবাহিনী ঝুঁকিপূর্ণ বাঁধ মজবুতকরণ, দুর্গম গ্রামে খাদ্য ও পশুখাদ্য পৌঁছে দেওয়া এবং পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা জোরদার করছে।
এদিকে, বন্যাকবলিতদের মধ্যে চাল, ডাল, সরিষার তেল, বিস্কুট, আটা, ওষুধ এবং গবাদি পশুর খাদ্য সরবরাহ করছে এনজিও ও শিখ সংগঠনগুলো। জেলা প্রশাসনগুলো ত্রাণশিবির চালু করলেও অনেক গ্রামবাসী ঘর ছেড়ে যেতে চাইছেন না।
ফিরোজপুরের ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শনে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী ভগবন্ত মান বলেন, ‘দেশ যখনই সংকটে পড়েছে, পাঞ্জাব সবসময় পাশে দাঁড়িয়েছে। আমরা সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করেছি। আজ পাঞ্জাব সংকটে, আমি আশা করি, দেশও আমাদের পাশে দাঁড়াবে।’
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন