শুক্রবার, ১০ অক্টোবর, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


বিশ্ব ডেস্ক

প্রকাশিত: অক্টোবর ৯, ২০২৫, ০৮:৪১ পিএম

নোবেল পেতে ‘দ্য পিস প্রেসিডেন্ট’ খেতাব নিলেন ট্রাম্প

বিশ্ব ডেস্ক

প্রকাশিত: অক্টোবর ৯, ২০২৫, ০৮:৪১ পিএম

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি- সংগৃহীত

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি- সংগৃহীত

২০২৫ সালের নোবেল শান্তি পুরস্কার ঘোষণা করা হবে আগামীকাল ১০ অক্টোবর। পুরস্কারের সম্ভাব্য দাবিদারদের নিয়ে জল্পনা তীব্র হয়েছে। সর্বাধিক সোচ্চার ও আলোচিত প্রার্থীদের মধ্যে রয়েছেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি বারবার দাবি করে আসছেন, বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে নানা যুদ্ধ থামিয়েছেন, তাই এই পুরস্কারের অন্যতম দাবিদার তিনি।

বৃহস্পতিবার (৯ অক্টোবর) হোয়াইট হাউসের পক্ষ থেকে এক্স হ্যান্ডেলে ট্রাম্পের একটি ছবি পোস্ট করে লেখা হয়েছে, ‘দ্য পিস প্রেসিডেন্ট’, অর্থাৎ শান্তির প্রেসিডেন্ট! নোবেল শান্তি পুরস্কার ঘোষণার আগেই এই পোস্টকে ইঙ্গিতবাহী বলেই মনে করা হচ্ছে। বুধবার ট্রাম্প নিজেও তার পুরস্কার প্রাপ্তির সম্ভাবনা নিয়ে মুখ খুলেছেন।

গাজা উপত্যকায় যুদ্ধ বন্ধ করে সকল বন্দিকে মুক্তি দেওয়ার জন্য ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে শান্তি চুক্তির পর হোয়াইট হাউস ট্রাম্পকে এই পুরস্কারে অন্যতম দাবিদার বলে মনে করছে। এক্স-এ পোস্টের মাধ্যমে হোয়াইট হাউস সময়ের সদ্ব্যবহার করেছে। কারণ, ট্রাম্পের গাজা চুক্তি ২০২৫ সালের নোবেল শান্তি পুরস্কার ঘোষণার ঠিক একদিন আগেই সম্পন্ন হয়েছে।

বুধবার ট্রাম্প আরও একবার দাবি করেন, তিনি বিশ্বে সাতটি যুদ্ধ থামিয়েছেন। তালিকায় রয়েছে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধও। আরও একটি যুদ্ধ থামানোর কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছেন বলেও দাবি করেছেন তিনি।

একইসঙ্গে মার্কিন এই প্রেসিডেন্ট আশাবাদী, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ পরিস্থিতিও তিনি সামাল দিয়ে দেবেন। নোবেল পাওয়ার সম্ভাবনা নিয়ে প্রশ্নের উত্তরে বলেন, ‘আমার কোনো ধারণা নেই (পুরস্কার পাব কি না তা নিয়ে)।’

তিনি আরও বলেন, ‘হয়তো ওরা (নোবেল কমিটি) আমাকে এটা না-দেওয়ার একটা কারণ খুঁজে নেবে।’ তার পরই মার্কিন প্রেসিডেন্ট জানান, কীভাবে তারা সাত যুদ্ধ থামিয়েছেন, তা ব্যাখ্যা করবেন আমেরিকার পররাষ্ট্র সচিব মার্কো রুবিও। এই প্রসঙ্গেই আত্মপ্রশংসার সুরে ট্রাম্পের সংযোজন, ‘আমার মনে হয় না ইতিহাসে কেউ এত যুদ্ধ থামিয়েছে।’

তবে, তার অবিরাম প্রচার ও হাই-প্রোফাইল সমর্থন সত্ত্বেও বিশেষজ্ঞরা একমত যে ট্রাম্পকে নোবেল কমিটির পছন্দ হওয়ার সম্ভাবনা কম, অন্তত এই বছর নয়। নরওয়েজিয়ান নোবেল কমিটি নিশ্চিত করেছে যে, ২০২৫ সালের শান্তি পুরষ্কারের জন্য ৩৩৮ জন প্রার্থী মনোনীত হয়েছে। এর মধ্যে ২৪৪ জন ব্যক্তি ও ৯৪টি সংস্থা। রীতি অনুসারে, মনোনীতদের নাম ৫০ বছর ধরে গোপন রাখা হবে। 

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু, পাকিস্তান সেনাপ্রধান ফিল্ড মার্শাল আসিম মুনির, কম্বোডিয়ার প্রেসিডেন্ট হুন মানেত, মার্কিন কংগ্রেসম্যান বাডি কার্টার, সুইডেন ও নরওয়ের অন্যান্য নেতারাও ট্রাম্পকে শান্তির পুরস্কারের জন্য মনোনীত করেছেন।

নোবেল কমিটি এই বছরের পুরষ্কারের জন্য যোগ্য প্রার্থীদের মনোনয়ন চলতি বছরের ১ ফেব্রুয়ারির আগে জমা দেওয়ার সময়সীমা বেঁধে দিয়েছিল। কিন্তু নেতানিয়াহু ও পাকিস্তান সরকারের মনোনয়ন এই সময়সীমার পরে জমা পড়েছে, যা এই বছরের শান্তি পুরস্কারের জন্য অযোগ্য। 

বর্তমান নরওয়েজিয়ান নোবেল কমিটির উপ-প্রধান আসলে তোজে বলে, ‘এই ধরনের প্রচার নেতিবাচক প্রভাব ফেলে... কিছু প্রার্থী এটি পাওয়ার জন্য খুব বেশি চেষ্টা করেন এবং আমরা তা পছন্দ করি না। আমরা প্রভাবিত হওয়ার চেষ্টা না করেই একটি বন্ধ ঘরে কাজ করতে অভ্যস্ত।’

ট্রাম্পের দাবি ও হাই-প্রোফাইল সমর্থন সত্ত্বেও নোবেল বিশেষজ্ঞরা আশা করছেন না যে, ট্রাম্প ২০২৫ সালের নোবেল পুরস্কার জিতবেন। সুইডিশ অধ্যাপক ও আন্তর্জাতিকবিষয়ক বিশেষজ্ঞ পিটার ওয়ালেনস্টিন বলেছেন, ‘না, ট্রাম্প এই বছর জয়ী হবেন না। কিন্তু সম্ভবত পরের বছর? ততক্ষণে, গাজা সংকটসহ তার বিভিন্ন উদ্যোগের চারপাশের উত্তেজনা আরও কিছুটা থিতিয়ে যাবে।’

চলতি বছর নোবেল পাওয়ার দৌড়ে কোনো নির্দিষ্ট একজন প্রার্থী এগিয়ে নেই। তবে কিছু বহুল আলোচিত প্রার্থীর মধ্যে বিশ্বজুড়ে সুপরিচিত প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তি উভয়ই রয়েছেন। এর মধ্যে অন্যতম হলেন: সুদানের ইমারজেন্সি রেসপন্স রুম, রাশিয়ার বিরোধী নেতা অ্যালেক্সেই নাভালনির স্ত্রী ইউলিয়া নাভালনায়া, নির্বাচন পর্যবেক্ষণের জন্য পরিচিত দ্য অফিস ফর ডেমেক্র্যাটিক ইনস্টিটিউশনস অ্যান্ড হিউম্যান রাইটস, জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস, ফিলিস্তিনের শরণার্থী ত্রাণ সংস্থা ইউএনআরডব্লিউএ (জাতিসংঘের ত্রাণ সংস্থা);

ইউএনএইচসিআর (শরণার্থীদের জন্য জাতিসংঘের হাই কমিশনার), আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) ও আন্তর্জাতিক বিচার আদালত (আইসিজে), কমিটি টু প্রোটেক্ট জার্নালিস্টস এবং রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডার্স উভয়ই তাদের কাজের জন্য বিশেষভাবে আলোচিত, বিশেষ করে গাজায় রেকর্ড সাংবাদিক মৃত্যুর বছরে।

এ ছাড়াও অন্যান্য বিশেষ প্রার্থীদের মধ্যে রয়েছেন পাকিস্তানে মানবাধিকার, গণতন্ত্র নিয়ে কাজ করার জন্য পাকিস্তান ওয়ার্ল্ড অ্যালায়েন্স ও নরওয়েজিয়ান পার্টি পার্টিয়েট সেন্ট্রাম কর্তৃক মনোনীত দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। আঞ্চলিক সম্প্রীতি, শান্তির প্রতি অঙ্গীকার ও থাইল্যান্ড-কম্বোডিয়া যুদ্ধবিরতিতে মধ্যস্থতার ভূমিকার কারণে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিমকে মনোনীত করা হয়েছে। স্লোভেনীয় ইইউ সংসদ সদস্য ব্রাঙ্কো গ্রিমস বাকস্বাধীনতা রক্ষার জন্য টেসলার সিইও ইলন মাস্ককে মনোনীত করেছেন।

নোবেল শান্তি পুরস্কার বিশ্বের সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ আন্তর্জাতিক সম্মানগুলোর মধ্যে একটি। এটি সুইডিশ শিল্পপতি আলফ্রেড নোবেলের ইচ্ছায় প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। ১৯০১ সালে প্রথম নোবেল পুরস্কার দেওয়া হয়। নোবেলের উইল অনুসারে, শান্তি পুরস্কার সেই ব্যক্তিকে দেওয়া উচিত যিনি দেশগুলোর মধ্যে ভ্রাতৃত্ববোধের জন্য ও স্থায়ী সেনাবাহিনীর বিলুপ্তি বা হ্রাস এবং শান্তি কংগ্রেস গঠন ও বিস্তারের জন্য সর্বোত্তম কাজ করেছেন।

নরওয়েজিয়ান পার্লামেন্ট কর্তৃক নিযুক্ত পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি শান্তি পুরস্কার পরিচালনা করে। মনোনয়নের পরে কমিটি সবচেয়ে ‘আকর্ষণীয় ও যোগ্য প্রার্থীদের’ সংক্ষিপ্ত তালিকা তৈরি করে। সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছনোর আগে এই তালিকাভুক্ত নামগুলো কমিটির সদস্য এবং বহিরাগত বিশেষজ্ঞ উভয়ের দ্বারা মূল্যায়ন করা হয়। অন্যান্য নোবেল পুরস্কার সুইডেনে দেওয়া হলেও শান্তি পুরস্কার নরওয়ের অসলোয় দেওয়া হবে।

Link copied!