গাজা যুদ্ধের পর এবার রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে মনোযোগী হয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। দুই দেশের নেতার সঙ্গে ফোনালাপ ও বৈঠকে পার করছেন ব্যস্ত সময়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) হোয়াইট হাউসে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে বৈঠক করেন তিনি। যুদ্ধ বন্ধের উদ্দেশ্যে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিয়ে আলোচনা করেন দুই নেতা।
বৈঠকে ট্রাম্পের কাছ থেকে দ্বিপাক্ষিক নিরাপত্তা নিশ্চয়তা চান জেলেনস্কি, যাতে ইউক্রেনের জনগণ নিশ্চিন্ত থাকতে পারে। মস্কোর বিরুদ্ধে শক্ত প্রতিরোধ বলয় তৈরি করতে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে দূর-পাল্লার টমাহক ক্ষেপণাস্ত্র চান ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট। বিনিময়ে কিয়েভে মার্কিন ড্রোন উৎপাদনের প্রস্তাব দেন জেলেস্কি।
তার প্রস্তাবে কিছুটা আগ্রহ দেখালেও টমাহক ক্ষেপণাস্ত্র দেওয়া নিয়ে দ্বিধা প্রকাশ করেন ট্রাম্প। বলেন, কিয়েভকে দূরপাল্লার এই অত্যাধুনিক ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহ করা হলে মস্কো একে উসকানিমূলক পদক্ষেপ হিসেবে দেখতে পারে। যা যুদ্ধকে আরও বাড়িয়ে তুলতে পারে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেন ট্রাম্প। যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতেও টমাহক প্রয়োজন বলে উল্লেখ করেন তিনি।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, আমাদেরও টমাহক চাই। আমরা এমন কিছু দিতে চাই না যা আমাদের দেশ রক্ষার জন্য দরকার। আমি চাই এই যুদ্ধ শেষ হোক।
বৈঠক শেষে নিজের মালিকানাধীন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে ট্রাম্প বলেন, জেলেনস্কির সঙ্গে খুবই আগ্রহোদ্দীপক এবং আন্তরিক বৈঠক হয়েছে। তবে আমি তাকে বলেছি, যেমনটি আমি প্রেসিডেন্ট পুতিনকেও জোর দিয়ে বলেছি, এখন খুনোখুনি বন্ধের সময় আর চুক্তি করে ফেলো।
বৈঠকের পর হোয়াইট হাউসের বাইরে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট। ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি টমাহক ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহ নিয়ে আলোচনা হয়েছে বলে তিনি জানান। জেলেনস্কি বলেন, তিনি এবং প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র নিয়ে আলাপ করেছেন। তবে এ বিষয়ে জনসমক্ষে ‘আমরা কোনো কথা না বলার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। কারণ, যুক্তরাষ্ট্র চায় না (মস্কোর সঙ্গে) উত্তেজনা তৈরি হোক।’
এদিকে, বৃহস্পতিবার রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে দুই ঘণ্টাব্যাপী ফোনালাপের পর হাঙ্গেরির বুদাপেস্টে নতুন শীর্ষ বৈঠকের ঘোষণা দেন ট্রাম্প। বলেন, রাশিয়া ও ইউক্রেন, দুই দেশই যুদ্ধ বন্ধ করতে চায়। এর জন্য কেবল দুই নেতার মধ্যে সমঝোতা প্রয়োজন।
নিজেকে মধ্যস্থতাকারী হিসেবে বর্ণনা করে ট্রাম্প বলেন, তিন প্রেসিডেন্টের মধ্যে আলোচনার মাধ্যমে যুদ্ধের ইতি টানা সম্ভব। যদিও বুদাপেস্টের বৈঠকে জেলেনস্কি থাকবেন না বলে জানান মার্কিন প্রেসিডেন্ট। তিনি বলেন, পুতিন ও জেলেনস্কির মধ্যে সম্পর্ক ভালো না হওয়ায় আলাদা আলাদা বৈঠক করবেন তারা।
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন