রাশিয়ার সঙ্গে ‘আপস নয়, প্রকৃত শান্তি’ প্রতিষ্ঠা করতে চায় ইউক্রেন। বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) নিরাপত্তা ও মানবাধিকার বিষয়ক সংস্থা ওএসসিই’র এক বৈঠকে ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আন্দ্রিই সিবিহা এ কথা বলেন।
প্রাক দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধকালীন সময়ের উল্লেখ করে তিনি বলেন, মিউনিখে যারা ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে বিশ্বাসঘাতকতা করেছিল, তাদের নাম আমরা এখনও মনে রেখেছি। ওই ভুল কখনও পুনরাবৃত্তি হওয়া উচিত নয়। নীতি-আদর্শ অটুট থাকতে হবে। আমাদের প্রয়োজন প্রকৃত শান্তি, তোষামোদ নয়।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের আগে, ১৯৩৮ সালে ব্রিটেন, ফ্রান্স ও ইতালি তৎকালীন জার্মানির সাডেটেনল্যান্ড অধিগ্রহণ মেনে নেয়। বর্তমানে ওই সমঝোতাকে হুমকি মোকাবিলায় ব্যর্থতার প্রতীক হিসেবে দেখা হয়।
সিবিহা আরও বলেন, ইউরোপ অতীতে অনেক অন্যায্য শান্তি চুক্তি করেছে। যার সবই নতুন বিপর্যয়ের দিকে ঠেলে দিয়েছে।তিনি যুক্তরাষ্ট্রকে শান্তি প্রচেষ্টায় নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ জানান এবং প্রতিশ্রুতি দেন যে, ইউক্রেন যুদ্ধ শেষ করতে প্রতিটি সুযোগ কাজে লাগাবে।
এদিকে, মস্কোতে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে মার্কিন প্রতিনিধিদের আলোচনা শেষে বুধবার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, বৈঠক ‘যথেষ্ট ভালো’ হয়েছে। তবে শান্তি আলোচনার ভবিষ্যৎ এখনও অনিশ্চিত।
একইদিন, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি জানান, তার দল যুক্তরাষ্ট্র সফরের প্রস্তুতি নিচ্ছে এবং ট্রাম্পের প্রতিনিধিদের সঙ্গে সংলাপ অব্যাহত থাকবে।
৫৭ সদস্যবিশিষ্ট ওএসসিই—যার মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, রাশিয়া, ইউরোপ ও মধ্য এশিয়ার বহু দেশ রয়েছে—স্নায়ুযুদ্ধের সময় প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যের গুরুত্বপূর্ণ প্ল্যাটফর্ম হয়ে ওঠে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে রাশিয়া গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তগুলো বাধাগ্রস্ত করায় সংস্থাটি প্রায়ই অচল অবস্থায় পড়ে, এবং মস্কো অভিযোগ করে যে এটি পশ্চিমা দেশগুলোর নিয়ন্ত্রণে চলে গেছে।
এখন আবার সংস্থা থেকে বেরিয়ে যাওয়া এবং ১০ শতাংশ অনুদান হ্রাসের হুমকি দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র।
যুক্তরাষ্ট্রের বিবৃতি পড়ার সময় ইউরোপ ও ইউরেশিয়া বিষয়ক সিনিয়র কর্মকর্তা ব্রেনডান হ্যানরাহান ওএসসিই-র নির্বাচন পর্যবেক্ষণ কার্যক্রমকে ‘অতিরিক্ত হস্তক্ষেপ’ র উদাহরণ হিসেবে তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ওএসসিই-কে অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক পরিবর্তনকে তাদের মূল কাজ হিসেবে দেখা বন্ধ করতে হবে। সীমান্ত, নির্বাচন বা সংস্কার—যেকোনও পর্যবেক্ষণ তখনই কার্যকর হবে যখন সদস্য রাষ্ট্রগুলো পূর্ণ সহযোগিতা দেবে।



সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন