চীন সফরে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। জানিয়েছেন, বেইজিংয়ের আমন্ত্রণে আগামী বছরের প্রথম দিকে দেশটিতে সফরে যাবেন তিনি। এসময় চীন তাইওয়ান দখল করতে চায় না বলেও মন্তব্য করেছেন ট্রাম্প।
সোমবার (২০ অক্টোবর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।
সোমবার হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকদের প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেন, ‘আমাকে চীন সফরের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে এবং আমি আগামী বছরের প্রথম দিকেই সেখানে যাচ্ছি। বিষয়টি মোটামুটি ঠিক হয়ে গেছে।’
ট্রাম্প আরও জানান, তিনি এই মাসের শেষ দিকে দক্ষিণ কোরিয়ায় চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে বৈঠক করবেন। সেখানে (চীনের সঙ্গে) ‘ন্যায়সঙ্গত’ বাণিজ্য চুক্তি সম্পন্ন হওয়ার আশা করা হচ্ছে। যদিও সম্প্রতি শুল্ক ইস্যুতে দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা বেড়েছে।
এছাড়া মাত্র এক সপ্তাহ আগেই পরিস্থিতি এতটাই খারাপ হয়েছিল যে নতুন করে বাণিজ্যযুদ্ধ শুরু হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছিল। সেসময় চীন বিরল খনিজ রপ্তানিতে নতুন নিয়ন্ত্রণ আরোপ করে, আর বিপরীতে ট্রাম্প হুমকি দেন- চীনা পণ্যের ওপর শুল্ক ১০০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়াতে পারেন তিনি।
তবে সোমবার ট্রাম্প পরিস্থিতি শান্ত করার বার্তা দেন। তিনি বলেন, দুই দেশকেই একসঙ্গে সমৃদ্ধ হতে হবে। ট্রাম্প জানান, তিনি চান চীন যুক্তরাষ্ট্রের সয়াবিন কিনুক। কারণ বাণিজ্যযুদ্ধের কারণে এটি ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছে এবং যুক্তরাষ্ট্রের মধ্য-পশ্চিমাঞ্চলের কৃষকেরা তাদের সবচেয়ে বড় বাজার হারিয়েছেন। তার এই মন্তব্যের পর শিকাগো বোর্ড অব ট্রেডে সয়াবিনের দাম এক মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ স্তরে উঠে আসে।
ট্রাম্প আরও বলেন, তার সঙ্গে শি জিনপিংয়ের সম্পর্ক ভালো। যদিও তার এই মন্তব্য পেন্টাগনের আগের মূল্যায়নের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। কারণ চীনের এই প্রতিরক্ষা দপ্তর বলেছিল, চীন ২০২৭ সালের মধ্যে তাইওয়ান দখলের পরিকল্পনা করছে। কিন্তু ট্রাম্প বলেন, ‘চীনের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক ভালো থাকবে। তারা এটা (তাইওয়ান দখল) করতে চায় না’। অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি অ্যালবানিজের সঙ্গে বৈঠকের সময় তিনি এসব কথা বলেন।
তবে ট্রাম্প স্বীকার করেন, তাইওয়ান নিয়ে চীনের আগ্রহ রয়েছে। এমনকি এটিকে তিনি শি জিনপিংয়ের ‘চোখের মণি’ বলেও বর্ণনা করেন। তবে তিনি মনে করেন, চীন জানে যে যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী সামরিক শক্তি, তাই তারা আক্রমণে যাবে না।
অবশ্য গত জুনে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ সিঙ্গাপুরে অনুষ্ঠিত ‘শ্যাংরি-লা ডায়ালগ’ সম্মেলনে চীনকে এই ‘অঞ্চলের জন্য হুমকি’ বলে উল্লেখ করেছিলেন। এর জবাবে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সেসময় বলেছিল, ‘তাইওয়ানকে চীনের বিরুদ্ধে কৌশলগত হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা বা আগুন নিয়ে খেলা উচিত নয় যুক্তরাষ্ট্রের।’
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন