ঢাকা মঙ্গলবার, ০৯ ডিসেম্বর, ২০২৫

যে কারণে থাই-কম্বোডিয়া সীমান্তে ফের সংঘর্ষ

বিশ্ব ডেস্ক
প্রকাশিত: ডিসেম্বর ৯, ২০২৫, ০৮:৩৮ এএম
ই-কম্বোডিয়া সীমান্তে ফের সংঘর্ষ। ছবি - সংগৃহীত

দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দুই প্রতিবেশী দেশ থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার মধ্যে সীমান্ত উত্তেজনা আবারও ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। সোমবার ভোরে থাই বিমানবাহিনী কম্বোডিয়ার সীমান্তবর্তী পাহাড়ি এলাকায় এয়ারস্ট্রাইক চালানোর পর পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠেছে। উভয় দেশের সীমান্তজুড়ে নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে, এবং স্থানীয় বাসিন্দাদের নিরাপদ স্থানে সরে যেতে বলা হয়েছে।

নিহত-আহত ও সীমান্তে আতঙ্ক

থাই কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে- তাদের এক সৈন্য ল্যান্ডমাইন বিস্ফোরণে আহত হওয়ার পর- ‘প্রতিরক্ষামূলক ব্যবস্থা’ হিসেবে এই অভিযান চালানো হয়। হামলায় কম্বোডিয়ার চারজন বেসামরিক নাগরিক নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। থাইল্যান্ডও একজন সৈন্য নিহত এবং আরও কয়েকজন আহত হওয়ার কথা নিশ্চিত করেছে।

হঠাৎ গোলাগুলি ও বোমা হামলায় সীমান্তের আশপাশে বসবাসকারী মানুষজন আতঙ্কে আছে। বহু পরিবার ঘরবাড়ি ছেড়ে আশ্রয়কেন্দ্র ও নিরাপদ অঞ্চলে ছুটছে।

পুরোনো ক্ষত ফের জাগ্রত

থাইল্যান্ড-কম্বোডিয়া সীমান্ত দীর্ঘদিন ধরেই বিতর্কিত। দুই দেশের দাবির কেন্দ্রে আছে শতবর্ষ পুরোনো মানচিত্র, সীমান্তরেখার ভুল ব্যাখ্যা এবং ঐতিহাসিক স্থাপনা- বিশেষ করে প্রিয়াহ ভিহার মন্দির এলাকা। প্রতিবার সীমান্তে গোলাগুলি হলে রাজনৈতিক উত্তাপের সঙ্গে সঙ্গে পুরোনো ক্ষতও নতুন করে উসকে ওঠে।

গত অক্টোবরে শান্তিচুক্তি হলেও তা বেশি দিন স্থায়ী হয়নি। মাইন বিস্ফোরণের ঘটনা দুই দেশের সম্পর্কে আবারও বিভাজন তৈরি করেছে। থাইল্যান্ড বলছে, এটি ছিল ‘নতুনভাবে পাতা মাইন’; কিন্তু কম্বোডিয়া এ অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার ওপর চাপ

সংঘর্ষের ফলে দুই দেশের সীমান্ত বাণিজ্য প্রায় স্থবির হয়ে পড়েছে। যেসব মানুষ প্রতিদিন কাজ, ব্যবসা বা কৃষিজ পণ্য নিয়ে সীমান্ত পাড়ি দেন- তাদের জীবনযাত্রায় বড় ধরনের অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে।

আন্তর্জাতিক মহলও উদ্বেগ প্রকাশ করেছে যে, উত্তেজনা বাড়লে তা দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সামগ্রিক রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার ওপর প্রভাব ফেলতে পারে।

স্বাভাবিক অবস্থায় ফেরা কি সহজ হবে?

দুই দেশই প্রকাশ্যে শান্তি চায় বলে দাবি করলেও মাঠে পরিস্থিতি ভিন্ন চিত্র দেখাচ্ছে। সীমান্তে নতুন করে সেনা মোতায়েন, বাঙ্কার শক্তিশালী করা এবং আকাশপথ নজরদারি বাড়ানো- সব মিলিয়ে উত্তেজনা যে সহজে কমবে না, তা ইঙ্গিত করছে।

শান্তির পথ খুঁজতে কূটনৈতিক মহল সক্রিয় হলেও, সীমান্তবাসীর নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা এখন সবচেয়ে বড় প্রশ্ন।