ঢাকা রবিবার, ০৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

নাইজেরিয়ায় বোকো হারামের হামলায় এক রাতে নিহত ৬০

বিশ্ব ডেস্ক
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৭, ২০২৫, ০৪:০৫ এএম
বোকো হারামের অনুপ্রবেশ ঠেকাতে নাইজেরিয়ার বোরনো প্রদেশের মঙ্গুনো এলাকায় খনন করা হয়েছে পরিখা। ছবি- সংগৃহীত

নাইজেরিয়ার উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় বরনো প্রদেশে বোকো হারামের হামলায় এক রাতে পাঁচ সেনা সদস্যসহ ৬০ জনের বেশি নিহত হয়েছেন। শুক্রবার রাতে ক্যামেরুন সীমান্তবর্তী দারুল জামাল গ্রামে এ হামলা চালানো হয়। এলাকাটিতে একটি সামরিক ঘাঁটিও রয়েছে। স্থানীয় কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে সংবাদমাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদনে এ খবর জানানো হয়েছে।

নাইজেরিয়ার বিমানবাহিনী জানিয়েছে, হামলার খবর পাওয়ার পর বিমান হামলায় ৩০ জন জঙ্গিকে হত্যা করা হয়েছে। দারুল জামালে সম্প্রতি বাস্তুচ্যুত বাসিন্দারা ফিরে এসে বসতি গড়ে তুলেছিলেন।

বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, হামলায় গ্রামে ২০টিরও বেশি ঘরবাড়ি ও ১০টি বাস ধ্বংস হয়েছে। এলাকা পুনর্গঠনের কাজে নিয়োজিত অন্তত ১৩ জন চালক এবং শ্রমিকও নিহত হয়েছেন।

শনিবার ক্ষতিগ্রস্ত গ্রাম পরিদর্শনকালে বরনোর গভর্নর বাবাগানা জুলুম বলেন, ‘এটি অত্যন্ত দুঃখজনক। কয়েক মাস আগে এই গ্রাম পুনর্বাসন করা হয়েছিল। তারা স্বাভাবিক জীবনে ফিরে গিয়েছিল।’

তিনি আরও বলেন, “নাইজেরিয়ার সেনাবাহিনীর সংখ্যা পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার জন্য যথেষ্ট নয়। নতুন একটি বাহিনী ‘ফরেস্ট গার্ডস’ গঠন করা হয়েছে, যারা নিরাপত্তা জোরদার করবে।”

নাইজেরিয়ার বিমানবাহিনীর মুখপাত্র এহিমেন এজোদামে জানান, শুক্রবার রাতে নজরদারিতে দেখা গেছে, জঙ্গিরা গ্রাম থেকে পালিয়ে উত্তরের জঙ্গলে আশ্রয় নিচ্ছিল। তিন দফায় সুনির্দিষ্ট বিমান হামলায় তাদের ওপর আঘাত হানা হয়, এতে ৩০ জনের বেশি জঙ্গি নিহত হয়েছে।’

উত্তর-পূর্ব নাইজেরিয়ায় বারবার সেনা ঘাঁটি ও স্থাপনায় জঙ্গি হামলার প্রেক্ষিতে সামরিক তৎপরতা বাড়ানো হয়েছে বলে জানা গেছে।

এর আগে গত এপ্রিলে গভর্নর জুলুম সতর্ক করেছিলেন, বোকো হারাম আবারও সক্রিয় হয়ে উঠছে। তারা কয়েক দফা হামলা চালিয়ে প্রদেশের কিছু অংশের নিয়ন্ত্রণও নিয়েছে।

গত ১৫ বছর ধরে বরনো প্রদেশ বোকো হারামের বিদ্রোহের কেন্দ্রবিন্দু। এ সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর কারণে এখন পর্যন্ত ৪০ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন এবং ২০ লাখের বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন।

২০১৫ সালে বোকো হারাম বরনো প্রদেশের বিস্তীর্ণ এলাকা নিয়ন্ত্রণে নিলেও পরে সামরিক অভিযানে সেখান থেকে তাদের হটিয়ে দেওয়া হয়। তবে পার্শ্ববর্তী নাইজার সেনা প্রত্যাহার করে নিলে জঙ্গিদের বিরুদ্ধে লড়াই আরও কঠিন হয়ে পড়ে।

বোকো হারাম আন্তর্জাতিকভাবে পরিচিতি পায় ২০১৪ সালের এপ্রিল মাসে, যখন তারা বরনোর চিবোক শহর থেকে ২৭০ জনের বেশি ছাত্রীকে অপহরণ করেছিল।