ঢাকা শনিবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৫

নাইজেরিয়ায় স্কুলে সশস্ত্র হামলা, ২২৭ শিক্ষক-শিক্ষার্থীকে অপহরণ

বিশ্ব ডেস্ক
প্রকাশিত: নভেম্বর ২২, ২০২৫, ০৯:১৬ এএম
নাইজেরিয়ায় একটি খালি প্রাইমারি স্কুলের শ্রেণিকক্ষ। ছবি- সংগৃহীত

নাইজেরিয়ার নাইজার রাজ্যে আবারও ভয়াবহ গণ-অপহরণের ঘটনা ঘটেছে। এক সপ্তাহের ব্যবধানে দ্বিতীয়বারের মতো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে হামলা চালিয়ে অন্তত ২২৭ শিক্ষার্থী ও শিক্ষককে অপহরণ করেছে সশস্ত্র দুর্বৃত্তরা। শনিবার এ তথ্য জানিয়েছে ডেইলি সাবাহ।

ক্রিশ্চিয়ান অ্যাসোসিয়েশন অব নাইজেরিয়ার তথ্য অনুযায়ী, নাইজারের পাপিরি কমিউনিটির স্টে. মেরিজ ক্যাথলিক স্কুলে হানা দিয়ে ২১৫ শিক্ষার্থী ও ১২ শিক্ষককে তুলে নিয়ে যায় হামলাকারীরা। সংগঠনের রাজ্য শাখার মুখপাত্র ড্যানিয়েল আতোরি জানান, তিনি ঘটনাস্থলে গিয়ে অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলেছেন এবং অপহৃতদের নিরাপদে ফিরিয়ে আনার প্রচেষ্টা চলছে।

পুলিশের বরাতে জানা গেছে, শুক্রবার ভোরে এ হামলা হয়। হামলার পর সেনা ও নিরাপত্তা বাহিনী এলাকায় মোতায়েন করা হয়েছে। ১২-১৭ বছর বয়সী শিক্ষার্থীদের এই মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের পাশে ৫০টির বেশি ভবনবিশিষ্ট একটি প্রাইমারি স্কুলও রয়েছে, যা ঝুঁকির মুখে পড়ে।

স্থানীয় বাসিন্দা দাউদা চেকুলা জানান, তার ৭ থেকে ১০ বছর বয়সী চার নাতি-নাতনিও অপহৃতদের মধ্যে রয়েছে। কিছু শিশু পাশের বাড়িতে লুকিয়ে পালাতে সক্ষম হলেও বেশিরভাগকেই সশস্ত্ররা গভীর জঙ্গলের দিকে নিয়ে গেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

নাইজার রাজ্য সরকার এক বিবৃতিতে জানায়, এলাকাটি হামলার ঝুঁকিতে রয়েছে বলে আগে থেকেই গোয়েন্দা তথ্য ছিল। তবুও অনুমতি ছাড়াই স্কুল খুলে দেওয়াকে ‘এড়ানো সম্ভব’ ঝুঁকি বলে অভিহিত করেছে স্থানীয় প্রশাসন। হামলার সময় শুধুমাত্র কমিউনিটি স্বেচ্ছাসেবীরাই পাহারার দায়িত্বে ছিলেন।

কনটাগোরা ক্যাথলিক ডায়োসিস জানিয়েছে, হামলার সময় একজন নিরাপত্তা কর্মী গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হন।

শুক্রবারের এই গণঅপহরণের মাত্র কয়েক দিন আগে কেব্বি রাজ্যের একটি স্কুল থেকে ২৫ ছাত্রীকে অপহরণ করা হয়। একই সপ্তাহে কওয়ারা রাজ্যে একটি চার্চে হামলা চালিয়ে ২ উপাসককে হত্যা ও ৩৮ জনকে অপহরণ করে দুর্বৃত্তরা।

চার্চ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, অপহৃতদের প্রত্যেকের জন্য ১০ কোটি নাইরা মুক্তিপণ দাবি করা হয়েছে।

ক্রমাগত সহিংসতার কারণে নাইজেরিয়ার প্রেসিডেন্ট বোলা টিনুবু চলমান সংকট মোকাবিলায় দক্ষিণ আফ্রিকায় অনুষ্ঠেয় জি-২০ সম্মেলনে যোগ না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তার পরিবর্তে অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন ভাইস প্রেসিডেন্ট কাশিম শেত্তিমা।

তিনি জানান, সরকার অপহৃতদের উদ্ধারে রাষ্ট্রের সব ধরনের শক্তি প্রয়োগ করবে।

ডেইলি সাবাহর প্রতিবেদন অনুযায়ী, এখন পর্যন্ত কোনো গোষ্ঠী এ হামলার দায় স্বীকার করেনি। ২০১৪ সালে বোকো হারামের চিবক স্কুলছাত্রী অপহরণের পর থেকে দেশটিতে ১,৫০০-এর বেশি শিক্ষার্থী অপহৃত হয়েছে।