ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে যুক্তরাষ্ট্রের উপস্থাপিত শান্তি প্রস্তাব গ্রহণে কিয়েভকে আগামী বৃহস্পতিবার পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। প্রস্তাবটি প্রত্যাখ্যান করলে রুশ সেনাদের অগ্রযাত্রা চলবে, মস্কো এমন হুঁশিয়ারিও দিয়েছে।
এদিকে, এই প্রস্তাবে ইউক্রেন ‘অস্বস্তিকর চাপের’ মুখে পড়েছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি।
শুক্রবার ফক্স নিউজ রেডিওকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প বলেন, কিয়েভের জন্য প্রস্তাবটি গ্রহণের উপযুক্ত সময় আগামী বৃহস্পতিবার পর্যন্ত। তার দাবি, জেলেনস্কির এটি পছন্দ করা ছাড়া উপায় নেই।
ট্রাম্প আরও বলেন, তিনি (জেলেনস্কি) যদি এটি গ্রহণ না করেন, তবে তাদের (ইউক্রেনের) লড়াই চালিয়ে যাওয়া ছাড়া আর কোনো পথ নেই। শেষ পর্যন্ত তাকে কিছু একটা গ্রহণ করতেই হবে।
রয়টার্সকে দেওয়া পৃথক দুই সূত্র আগেই ট্রাম্পের এমন অবস্থানের কথা জানিয়েছিল।
কিয়েভে কার্যালয়ের সামনের সড়ক থেকে জাতির উদ্দেশে দেওয়া এক ভাষণে জেলেনস্কি বলেন, ইউক্রেন ইতিহাসের কঠিন সময় পার করছে। চাপ এখন আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি। আমরা এমন এক সিদ্ধান্তের মুখে—হয় দেশের সম্মান হারাতে হবে, নয়তো যুক্তরাষ্ট্রের মতো গুরুত্বপূর্ণ অংশীদারকে।”
তিনি বলেন, শান্তিচুক্তির আলোচনায় দুটি বিষয়ে ইউক্রেন কোনো আপস করবে না, রাষ্ট্রের সম্মান ও স্বাধীনতা।
তবে গত বৃহস্পতিবার তিনি জানিয়েছিলেন, যুক্তরাষ্ট্রের পরিকল্পনা অনুযায়ী আলোচনা শুরু করতে ইউক্রেন প্রস্তুত।
২৮ দফা প্রস্তাবে কী আছে
ট্রাম্প প্রশাসনের প্রস্তাব অনুযায়ী ইউক্রেনকে—
পূর্ব দিকের দনবাস অঞ্চল পুরোপুরি রাশিয়ার হাতে ছেড়ে দিতে হবে,
যে অংশ এখনো কিয়েভের নিয়ন্ত্রণে আছে, সেটিও মস্কোর হাতে যাবে,
বিনিময়ে রাশিয়া দখল করা ইউক্রেনের কিছু অঞ্চল ফেরত দেবে,
ইউক্রেনকে সেনাসংখ্যা কমিয়ে ছয় লাখে আনতে হবে,
এবং ভবিষ্যতে দেশটি ন্যাটোর সদস্য হতে পারবে না।
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাব আলোচনার ‘ভিত্তি’ হিসেবে বিবেচনা করা যেতে পারে। কিয়েভ প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করলে রুশ সেনাদের অগ্রযাত্রা থামবে না বলেও তিনি মন্তব্য করেন।
পুতিন বলেন, কিয়েভ যদি ট্রাম্পের প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা না করতে চায়, তাহলে তাদের বুঝতে হবে—কুপিয়ানস্কে যা ঘটেছে, তা যুদ্ধক্ষেত্রের অন্যান্য অংশেও ঘটবে। রাশিয়া চলতি মাসে ইউক্রেনের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের কুপিয়ানস্ক শহর দখল করে।
পুতিন আরও জানান, গত আগস্টে আলাস্কায় ট্রাম্পের সঙ্গে তাঁর বৈঠকের আগেই ওয়াশিংটনের সঙ্গে শান্তি পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা হয়েছিল। যুক্তরাষ্ট্রের অনুরোধে মস্কো কিছু ছাড়ও দিয়েছে বলে তিনি দাবি করেন।

