থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার সীমান্তে দুদেশের মধ্যে দ্বিতীয় দিনের মতো চলছে সংঘর্ষ।হামলায় কম্বোডিয়ার বাহিনী ভারী অস্ত্রের পাশাপাশি রকেটও ব্যবহার করেছে বলে অভিযোগ থাইল্যান্ডের।এক বিবৃতিতে দেশটির সেনাবাহিনী বলেছে, ‘কম্বোডীয় বাহিনী ভারী অস্ত্র, ফিল্ড আর্টিলারি ও বিএম-২১ রকেট সিস্টেম ব্যবহার করে ধারাবাহিকভাবে গোলাবর্ষণ চালিয়েছে।’ কম্বোডিয়ার এ হামলায় ১৬ থাই নাগরিক নিহতের খবর নিশ্চিত করে ব্যাংকক। পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে কম্বোডিয়া সীমান্তে পাল্টা হামলা চালিয়েছে থাই সেনারা। এ হামলায় কম্বোডিয়ার সরকার, প্রতিরক্ষা ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ পর্যন্ত কোনো হতাহতের তথ্য দেয়নি।
২০০৮ ও ২০১১ সালের পর, দুই দেশের মধ্যে গত ১৩ বছরে এটিই সবচেয়ে ভয়াবহ সংঘর্ষের ঘটনা। যার সুত্রপাত হয় থাই সেনাবাহিনীর একজন সদস্য স্থলমাইন বিস্ফোরণে পা হারানের মধ্য দিয়ে। এ ঘটনার জেরে বুধবার (২৩ জুলাই) থাইল্যান্ড নমপেন থেকে নিজের রাষ্ট্রদূতকে ফিরিয়ে আনে ও কম্বোডিয়ার রাষ্ট্রদূতকে বহিষ্কার করে।
দুই দেশই সীমান্তের বিতর্কিত একটি এলাকায় সংঘর্ষ শুরুর জন্য একে অপরকে দায়ী করেছে। প্রথমে হালকা অস্ত্র থেকে গুলিবর্ষণের মাধ্যমে শুরু হওয়া এ সংঘর্ষ পরে ভারী গোলাবর্ষণে রূপ নেয়। অন্তত ছয় স্থানে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়েছে। এলাকাগুলোর ওপর সার্বভৌমত্ব নিয়ে বহু বছর ধরেই দুই পক্ষে বিতর্ক চলছে।
এ সংঘাতে থাইল্যান্ড ছয়টি এফ-১৬ যুদ্ধবিমান মোতায়েন করেছে। এর মধ্যে একটি দিয়ে কম্বোডিয়ার সামরিক অবস্থানে আঘাত হানা হয়। থাই সামরিক বাহিনীর ভাষ্য, এ বিমান হামলার উদ্দেশ্য ছিল সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানা।অন্যদিকে কম্বোডিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ হামলাকে ‘বেপরোয়া ও নৃশংস সামরিক আগ্রাসন’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছে।
ইতিমধ্যে থাইল্যান্ডের দীর্ঘদিনের মিত্র যুক্তরাষ্ট্র সংঘর্ষ বন্ধের আহ্বান জানিয়েছে। মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের উপমুখপাত্র টমি পিগট নিয়মিত এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, ‘থাইল্যান্ড-কম্বোডিয়া সীমান্তে সহিংসতা বেড়ে যাওয়ায় আমরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন এবং বেসামরিক মানুষের ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার খবরে শোকাহত। অবিলম্বে সংঘর্ষ বন্ধ, বেসামরিক জনগণের সুরক্ষা ও সংকটের শান্তিপূর্ণ সমাধানের জন্য আমরা আহ্বান জানাচ্ছি।’
এ সংঘাত নিয়ে আজ জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে বৈঠক অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের সভাপতির দায়িত্বে থাকা পাকিস্তানের কাছে পাঠানো একটি চিঠিতে কম্বোডিয়ার প্রধানমন্ত্রী হুন মানেত থাইল্যান্ডের বিরুদ্ধে ‘অভিযোগহীন ও পূর্বপরিকল্পিত সামরিক আগ্রাসনের’ অভিযোগ এনে এটিকে আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন বলে উল্লেখ করেন। তিনি নিরাপত্তা পরিষদকে দ্রুত বৈঠক ডাকারও অনুরোধ জানান।
আপনার মতামত লিখুন :