জাপানিরা আইন মেনে চলা এবং সামাজিক নিয়ম অনুসরণে বিখ্যাত। এপ্রিলে এর একটি দৃষ্টান্ত দেখা যায় যখন টোলের স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থা নষ্ট হয়ে যায়। ব্যস্ত রাস্তায় গাড়িগুলোকে বিনা বাধায় চলাচলের অনুমতি দেওয়া হয় এবং চালকদের পরে অনলাইনে টাকা দেওয়ার অনুরোধ করা হয়। আশ্চর্যের বিষয়, পরবর্তীতে ২৪ হাজার মানুষ স্বেচ্ছায় টোলের টাকা পরিশোধ করেন, যা জাপানিদের দায়িত্ববোধ স্পষ্টভাবে দেখায়।
জাপান টুডের তথ্য অনুযায়ী, ৮ এপ্রিল থেকে প্রায় ৩৮ ঘণ্টা ধরে ইলেকট্রনিক টোল সংগ্রহ ব্যবস্থা (ইটিসি) অচল ছিল। জাপানে টোল গেটে গাড়ি কিছুটা ধীর হয়ে কার্ডের সিগন্যাল পড়ার পর স্বয়ংক্রিয়ভাবে গেট খুলে যায়। কিন্তু এই ত্রুটির কারণে টোকিওর টোমেই ও চুও এক্সপ্রেসওয়ের ১০৬টি টোল গেটসহ কানাগাওয়া, ইয়ামানাশি, নাগানো, শিজুওকা, আইচি, গিফু ও মি প্রিফেকচারের টোল গেটগুলো গাড়ির কার্ড পড়তে ব্যর্থ হয়।
জরুরি পরিস্থিতিতে সেন্ট্রাল নিপ্পন এক্সপ্রেসওয়ে কোম্পানি (নেক্সকো সেন্ট্রাল) সব টোল গেট খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়, যাতে দেশের সবচেয়ে ব্যস্ত মোটরওয়েগুলোর যান চলাচল সচল থাকে। নেক্সকো সেন্ট্রাল জানায়, ৮ এপ্রিল রাত ১০টার মধ্যে প্রায় ২৪ হাজার স্বেচ্ছায় টোল পরিশোধ করেছেন। যদিও সিস্টেম বিভ্রাটের সময় প্রায় ৯ লাখ ২০ হাজার ইটিসি-সজ্জিত গাড়ি এক্সপ্রেসওয়েতে চলাচল করছিল বলে অনুমান করা হয়, কতগুলো গাড়ি আসলে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় ছিল তা নিশ্চিত নয়।
মে মাসে কোম্পানি ঘোষণা করে যে ওই সময় ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় চলাচল করা গাড়ির টোল মওকুফ করা হবে। যারা ইতোমধ্যে অর্থ পরিশোধ করেছেন, তাদের সম্পূর্ণ অর্থ ইটিসি মাইলেজ প্রোগ্রাম বা অনুরূপ পদ্ধতির মাধ্যমে ফেরত দেওয়া হবে।
এই ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় সোশ্যাল মিডিয়ায় জাপানের উচ্চ আস্থার সামাজিক কাঠামোর প্রশংসা করা হয়। একজন ব্যবহারকারী লিখেছেন, ‘জাপান সত্যিকারের একটি উচ্চ আস্থার সমাজ।’ আরেকজন মন্তব্য করেছেন, ‘জাপানের মতো সেবা পেলে আমিও স্বেচ্ছায় অর্থ দিতাম।’ তৃতীয় একজন বলেন, ‘গত বছর জাপানে গাড়ি চালিয়েছিলাম। সিস্টেমটি এতটাই উন্নত ছিল যে টোল গেটে থামতে হয়নি।’