ঢাকা শনিবার, ১৬ আগস্ট, ২০২৫

ভারত ও পাকিস্তানে বন্যা-ভূমিধসে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ২৫০

বিশ্ব ডেস্ক
প্রকাশিত: আগস্ট ১৬, ২০২৫, ১১:০১ এএম
পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশে বন্যা ও ভূমিধসে বিপর্যস্ত জনজীবন। ছবি- সংগৃহীত

মেঘভাঙা বৃষ্টিতে সৃষ্ট বন্যা ও ভূমিধসে ভারত এবং পাকিস্তানে অন্তত ২৫০ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ ছাড়া নিখোঁজ রয়েছেন আরও অনেকে। শনিবার সংবাদমাধ্যম ডয়েচে ভেলের এক প্রতিবেদনে এ খবর জানানো হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, এরই মধ্যে পাকিস্তানের উত্তর ও উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে আকস্মিক বন্যায় অন্তত ২০০ জন প্রাণ হারিয়েছে। এ ছাড়া পাহাড়ি এলাকায় ভূমিধসের পর ১ হাজার ৩০০ পর্যটককে উদ্ধার করা হয়েছে। স্থানীয় কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে জানানো হয়েছে, এসব অঞ্চলে কমপক্ষে ৩৫ জন নিখোঁজ রয়েছেন।

পাকিস্তানের বেশির ভাগ মৃত্যু ঘটেছে পার্বত্য অঞ্চল খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশে। প্রাদেশিক দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের (পিডিএমএ) মুখপাত্র আনওয়ার শেহজাদ বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেন, ‘এ পর্যন্ত খাইবার পাখতুনখোয়ায় মেঘভাঙা বৃষ্টি, আকস্মিক বন্যা ও ভবন ধসে ১১০ জনের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে।’

এ ছাড়াও পাকিস্তান অধ্যুষিত কাশ্মীরে আরও সাতজনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছে স্থানীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ। পাকিস্তানের আবহাওয়া বিভাগ উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে সতর্কতা জারি করে ‘ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় অপ্রয়োজনীয় চলাচল এড়ানোর’ পরামর্শ দিয়েছে।

অন্যদিকে ভারত-অধ্যুষিত কাশ্মীরের প্রত্যন্ত হিমালয়ান গ্রাম চাশোটিতে বন্যায় অন্তত ৬০ জনের মৃত্যু হয়েছে। উদ্ধারকারীরা এখনো নিখোঁজদের উদ্ধারে কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন।

কর্মকর্তারা জানান, গত বৃহস্পতিবার ৩০০ জনকে উদ্ধার করা হলেও নিখোঁজ ২০০ জনের অনেকেই পানির স্রোতে ভেসে গেছেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। চাশোটিতে স্থানীয় হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের দেবী মাচাইল মাতার মন্দিরে তীর্থযাত্রার কারণে প্রচুর ভিড় ছিল। এই গ্রামটি মন্দিরে যাওয়ার শেষ স্থান, যেখান থেকে তীর্থযাত্রীদের ৮ কিলোমিটার পথ হেঁটে যেতে হয়।

এদিকে ‘প্রকৃতি আমাদের পরীক্ষা নিচ্ছে’ উল্লেখ করে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি দেশটির স্বাধীনতা দিবসের প্রায় দুই ঘণ্টাব্যাপী ভাষণের শুরুতে বলেন, ‘গত কয়েকদিনে আমাদের ভূমিধস, মেঘভাঙা বৃষ্টি ও অন্যান্য প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলা করতে হয়েছে।’

ক্ষুদ্র এলাকায় ভারি বৃষ্টিপাত ভারতের হিমালয় অঞ্চল ও উত্তর পাকিস্তানে ক্রমশ সাধারণ ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে, যার ফলে এসব এলাকায় আকস্মিক বন্যা ও ভূমিধসের ঝুঁকি বেড়েছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে গত কয়েক বছরে মেঘভাঙা বৃষ্টির তীব্রতা বেড়েছে। এ ছাড়া পাহাড়ি এলাকায় অপরিকল্পিত উন্নয়নও ক্ষয়ক্ষতি বাড়িয়েছে।

বিশ্ব আবহাওয়া অ্যাট্রিবিউশনের এক গবেষণায় দেখা গেছে, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে পাকিস্তানে গত ২৪ জুন থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত বৃষ্টিপাত ১০ থেকে ১৫ শতাংশ বেশি হয়েছে, বিশেষ করে পাঞ্জাব ও খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশে।