ঢাকা সোমবার, ০১ ডিসেম্বর, ২০২৫

ভয়াবহ ঝড়ে লন্ডভন্ড এশিয়া

চার দেশে নিহত ৯ শতাধিক, নিখোঁজ অসংখ্য

বিশ্ব ডেস্ক
প্রকাশিত: ডিসেম্বর ১, ২০২৫, ১১:০৯ এএম
ইন্দোনেশিয়ার সুমাত্রা দ্বীপে উদ্ধার কার্যক্রম। ছবি- সংগৃহীত

ভারী বৃষ্টিপাতে সৃষ্ট ব্যাপক বন্যা ও ভূমিধসে এশিয়ার চার দেশে কমপক্ষে ৯০০ লোক মারা গেছেন। এখনো নিখোঁজ রয়েছে হাজার হাজার মানুষ। এছাড়া আহত হয়েছেন বহুসংখ্যক মানুষ এবং বাড়িঘর ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ে ছুটতে বাধ্য হয়েছেন আরও অনেকে।

এক প্রতিবেদেনে মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন জানিয়েছে এসব তথ্য।

সিএনএনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঝড় ও ভারী বর্ষণ এবং তার জেরে সৃষ্ট বন্যা-ভূমিধসে গত একসপ্তাহ থেকে ১০ দিনের মধ্যে ইন্দোনেশিয়ায় কমপক্ষে ৪৩৫ জন, শ্রীলঙ্কায় কমপক্ষে ৩৩৪ জন, থাইল্যান্ডে কমপক্ষে ১৬২ জন এবং মালয়েশিয়ায় ২ জন প্রাণ হারিয়েছেন।

ইন্দোনেশিয়া

আন্দামান সাগর, মালাক্কা প্রণালী এবং বঙ্গোপসাগরের নিম্নচাপ থেকে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় সেনিয়ারের আঘাতে তছনছ হয়ে গেছে ইন্দোনেশিয়ার সুমাত্রা দ্বীপ। ৪ লাখ ৮২ হাজার ২৮৬ দশমিক ৫৫ বর্গকিলোমিটার আয়তনের এই দ্বীপের বিভিন্ন প্রদেশ থেকে এ পর্যন্ত ৪৩৫ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে এবং এখনও নিখোঁজ আছেন অন্তত ৪০৬ জন।

ঝড় ও ভারী বর্ষণের জেরে বন্যায় ডুবে গেছে দ্বীপের বহু অঞ্চল। অনেক জায়গায় ভূমিধসও ঘটেছে। ফলে পুরো দ্বীপের সড়ক ও টেলিযোগাযোগ নেটওয়ার্ক প্রায় ধ্বংস হয়ে গেছে। অনেক এলাকায় হেলিকপ্টারে ত্রাণ পৌঁছে দিচ্ছে সেনাবাহিনী। লাখ লাখ মানুষ নিজের বাড়িঘর ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধানে ছুটছেন।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এবং সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত ভিডিও ফুটেজগুলোতে দেখা গেছে, বন্যা কবলিত বিভিন্ন এলাকায় রাবারের নৌকার সাহায্যে লোকজনকে উদ্ধার করা হচ্ছে।

যেসব এলাকায় ত্রাণের সরবরাহ পৌঁছাতে দেরি হয়েছে— সেসব এলাকার বিভিন্ন দোকান ও বাজারে খাদ্য-সামগ্রী লুটের ঘটনাও ঘটেছে।

থাইল্যান্ড

ঝড়ের তাণ্ডব থেকে রেহাই পায়নি ইন্দোনেশিয়ার প্রতিবেশী দেশ থাইল্যান্ডও। ঘূর্ণিঝড় সেনিয়ার এবং তার জেরে ভারী বর্ষণ ও বন্যায় থাইল্যান্ডের দক্ষিণাঞ্চলে এ পর্যন্ত ১৬২ জন প্রাণ হারিয়েছেন। বন্যায় ক্ষয়ক্ষতির শিকার হয়েছেন কমপক্ষে ৩৫ লাখ মানুষ। অনেক এলাকায় সড়ক যোগাযোগ, বিদ্যুৎ সংযোগ ও  মোবাইল নেটওয়ার্কও বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।

থাইল্যান্ডের দুর্যোগ মেকাবিলা বিভাগের একজন মুখপাত্র অবশ্য বলেছেন, বন্যার পানি ইতোমধ্যে নেমে যাওয়া শুরু করেছে এবং বিভিন্ন এলাকায় ত্রাণের সরবরাহ পাঠানোর পাশাপাশি সড়ক যোগাযোগ, মোবাইল নেটওয়ার্ক ও বিদ্যুৎ সংযোগও ফের চালু করা হচ্ছে।

শ্রীলঙ্কা

ভারত মহাসাগরের নিম্মচাপ থেকে উদ্ভূত ঘূর্ণিঝড় দিতওয়াহ-এর জেরে শ্রীলঙ্কায় এ পর্যন্ত নিহত হয়েছেন ৩৩৪ জন এবং ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন অন্তত ১১ লাখ মানুষ। এছাড়া ঝড়, বন্যা ও ভূমিধসে দেশটির বিভিন্ন অঞ্চলে ২৫ হাজারেরও বেশি বাড়িঘর ধ্বংস হয়ে গেছে এবং ১ লাখ ৪৭ হাজার মানুষ বাড়িঘর ছেড়ে সরকারি আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছেন।

ধ্বংসযজ্ঞের ব্যাপকতার কারণে দেশজুড়ে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করতে বাধ্য হয়েছে শ্রীলঙ্কা।