শুক্রবার, ০৬ জুন, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


রয়টার্স

প্রকাশিত: জুন ৪, ২০২৫, ০২:৫০ পিএম

চীনের বিরল খনিজ রপ্তানি বন্ধে বিশ্বজুড়ে উদ্বেগ বাড়ছে

রয়টার্স

প্রকাশিত: জুন ৪, ২০২৫, ০২:৫০ পিএম

২০১০ সালের ৩১ অক্টোবর চীনের জিয়াংসু প্রদেশের লিয়ানয়ুঙ্গাংর একটি বন্দরে শ্রমিকরা রপ্তানির জন্য বিরল মাটির উপাদান ধারণকারী মাটি পরিবহন করছে। ছবি- সংগৃহীত

২০১০ সালের ৩১ অক্টোবর চীনের জিয়াংসু প্রদেশের লিয়ানয়ুঙ্গাংর একটি বন্দরে শ্রমিকরা রপ্তানির জন্য বিরল মাটির উপাদান ধারণকারী মাটি পরিবহন করছে। ছবি- সংগৃহীত

চীন বিরল খনিজ উপাদান, মিশ্রণ এবং ম্যাগনেট রপ্তানির ওপর যেসব নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে, সেগুলো দ্রুত সমাধান না হলে উৎপাদন বিলম্বিত হতে পারে। এমনকি বন্ধও হয়ে যেতে পারে বলে গতকাল মঙ্গলবার উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বিশ্বজুড়ে গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠানগুলো। যুক্তরাষ্ট্রের নির্মাতাদের উদ্বেগের সঙ্গে এবার ঐকমত্য হলো এসব কোম্পানিগুলো।

সর্বশেষ দেশ হিসেবে এ বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে জার্মান গাড়ি নির্মাতারা। তারা সতর্ক করে দিয়েছে যে, চীনের এই রপ্তানি নিয়ন্ত্রণ স্থানীয় অর্থনীতিকে ব্যাপক প্রভাবিত করতে পারে এবং উৎপাদন বন্ধ হওয়ার মতো বড় সংকট তৈরি করতে পারে। এর আগে, গত সপ্তাহে ভারতের একটি বৈদ্যুতিক গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠানও একই অভিযোগ জানিয়েছিল।

চীন এপ্রিল মাসে বিরল খনিজ এবং ম্যাগনেটের বিস্তৃত রপ্তানি বন্ধ ঘোষণা করে, যা বিশ্বব্যাপী গাড়ি শিল্প, মহাকাশযান নির্মাতা, সেমিকন্ডাক্টর কোম্পানি এবং সামরিক চুক্তিকারী প্রতিষ্ঠানের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিল।

পদক্ষেপটি গুরুত্বপূর্ণ খনিজ শিল্পে চীনের আধিপত্যকে তুলে ধরে এবং মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে চলমান বাণিজ্যযুদ্ধে চীনের কৌশলগত চাপ প্রয়োগের একটি অংশ হিসেবে দেখা হচ্ছে।

ট্রাম্প চীনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য সম্পর্ক নতুন করে গড়ে তোলার চেষ্টা করছেন। এজন্য তিনি শত শত পণ্যের ওপর শতকরা ১৪৫ ভাগ পর্যন্ত শুল্ক আরোপ করেছিলেন— যদিও পরে শেয়ার, বন্ড ও মুদ্রাবাজারে অস্থিরতা তৈরি হওয়ায় কিছুটা শিথিল করেছেন। চীনও পাল্টা শুল্কারোপ করেছে এবং এখন তারা তাদের কৌশলগত যোগান ব্যবস্থাকে ট্রাম্পের ওপর চাপ প্রয়োগের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে।

মঙ্গলবার হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র ক্যারোলিন লেভিট জানান, রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা আলোচনা নিয়ে ট্রাম্প ও চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং এই সপ্তাহেই কথা বলবেন। তিনি বলেন, ‘আমি আপনাদের আশ্বস্ত করতে পারি, প্রশাসন চীনের জেনেভা বাণিজ্য চুক্তি মেনে চলা নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করছে। আমাদের কর্মকর্তারা চীনা পক্ষের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন।’

ট্রাম্প ইতোমধ্যেই ইঙ্গিত দিয়েছেন চীন যেভাবে এই নিষেধাজ্ঞা ধীরে ধীরে কার্যকর করছে, তা জেনেভা বাণিজ্য চুক্তির লঙ্ঘন।

গাড়ি, ড্রোন থেকে শুরু করে রোবট ও ক্ষেপণাস্ত্র পর্যন্ত সবকিছু একত্রিত করার জন্য প্রয়োজনীয় চুম্বকের চালান অনেক চীনা বন্দরে আটকে দেওয়া হয়েছে। কারণ রপ্তানি লাইসেন্স এখনো অনুমোদনের অপেক্ষায়।

এই স্থগিতাদেশের ফলে বিশ্বজুড়ে কর্পোরেট সেক্টরে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে— দেশগুলোর রাজধানী টোকিও থেকে ওয়াশিংটন পর্যন্ত কর্মকর্তারা জরুরি বিকল্প খুঁজতে হিমশিম খাচ্ছেন। আশঙ্কা করা হচ্ছে, গ্রীষ্মের শেষে গাড়িসহ অনেক পণ্যের উৎপাদন বন্ধ হয়ে যেতে পারে।

জার্মানির গাড়ি শিল্প সংগঠনের প্রধান হিলডেগার্ড মুলার মঙ্গলবার বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেন, ‘এই পরিস্থিতি দ্রুত না বদলালে উৎপাদনে বিলম্ব, এমনকি পুরোপুরি বন্ধ হওয়ার আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।’

মিনারেলস বা খনিজ শিল্প বিশেষজ্ঞ ও ট্রাম্প প্রশাসনের সাবেক জ্বালানি সম্পদ সহকারী সচিব ফ্র্যাঙ্ক ফ্যানন বলেন, “এই পরিস্থিতি কোনো চমক নয়। যারা নজর রাখছেন, তারা জানেন আমাদের উৎপাদনে ঘাটতি রয়েছে। আমাদের এখনই সম্পদ সুরক্ষায় পুরো সরকার-ব্যবস্থা কাজে লাগানো উচিত। সময় ছিল ‘গতকাল’।”

সূত্র জানিয়েছে, ভারত, জাপান ও ইউরোপের কূটনীতিক, গাড়ি নির্মাতা এবং কর্পোরেট নেতারা চীনা কর্মকর্তাদের সঙ্গে দ্রুত বৈঠকের চেষ্টা করছেন। কারণ যাতে বিরল ম্যাগনেট রপ্তানির অনুমোদন দ্রুত পাওয়া যায়।

রয়টার্স জানিয়েছে, জাপানের একটি ব্যবসায়িক প্রতিনিধি দল জুনের শুরুতেই বেইজিং সফরে যাচ্ছে এবং ইউরোপের গাড়ি শিল্প-নির্ভর দেশগুলোর কূটনীতিকরাও ‘জরুরি’ বৈঠকের জন্য চীনকে অনুরোধ করেছে।

সম্প্রতি ভারতের বাজাজ অটো জানিয়েছে, চীনের রপ্তানি বিলম্বিত হলে ইভি বা বৈদ্যুতিক গাড়ি উৎপাদনে ‘গুরুতরভাবে প্রভাব’ পড়বে। তাই দেশটি আগামী ২-৩ সপ্তাহের মধ্যে গাড়ি খাতের প্রতিনিধিদের চীনে পাঠাতে যাচ্ছে।

মে মাসে জেনারেল মোটরস, টয়োটা, ভক্সওয়াগেন, হুন্ডাইসহ বড় গাড়ি নির্মাতা কোম্পানিগুলোর একটি যৌথ চিঠিতে ট্রাম্প প্রশাসনকে জানানো হয় যে, ‘এই খনিজ ও ম্যাগনেটগুলোর নিরবিচ্ছিন্ন সরবরাহ না থাকলে, স্বয়ংচালিত ট্রান্সমিশন, থ্রোটল, অল্টারনেটর, মোটর, সেন্সর, সিটবেল্ট, স্পিকার, লাইট, পাওয়ার স্টিয়ারিং ও ক্যামেরাসহ অনেক গুরুত্বপূর্ণ অংশ তৈরি সম্ভব হবে না।’

Link copied!