ঢাকা শনিবার, ২১ জুন, ২০২৫

তাইওয়ান প্রণালীতে ব্রিটিশ যুদ্ধজাহাজ, চীনের ক্ষোভ

বিশ্ব ডেস্ক
প্রকাশিত: জুন ২০, ২০২৫, ০৮:০৩ পিএম
এইচএমএস স্পে। ছবি- সংগৃহীত

তাইওয়ান প্রণালী দিয়ে ব্রিটিশ যুদ্ধজাহাজ যাওয়াকে ‘ইচ্ছাকৃত সমস্যা সৃষ্টি’ বলেছে চীন। বেইজিংয়ের অভিযোগ, এটি একটি উসকানিমূলক পদক্ষেপ যা আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা নষ্ট করতে পারে।

গত বুধবার ব্রিটিশ রয়্যাল নেভির টহল জাহাজ ‘এইচএমএস স্পে’ বিতর্কিত জলপথ দিয়ে যাত্রা করে। যুক্তরাজ্য জানিয়েছে, এটি আন্তর্জাতিক আইন মেনে দীর্ঘদিন ধরে পরিকল্পিত নৌমিশনের অংশ, এবং এর মাধ্যমে ‘স্বাধীন নৌচলাচলের অধিকার’ নিশ্চিত করা হয়েছে।

এদিকে চীনের পিপলস লিবারেশন আর্মির (পিএলএ) ইস্টার্ন থিয়েটার কমান্ড এক বিবৃতিতে জানায়, তারা ব্রিটিশ জাহাজটিকে অনুসরণ ও পর্যবেক্ষণ করেছে। তারা অভিযানের কড়া সমালোচনা করে বলেছে, ‘ব্রিটেন ইচ্ছাকৃতভাবে সমস্যা তৈরি করছে ও তাইওয়ান প্রণালীতে উত্তেজনা বাড়াচ্ছে।’

চীন আরও বলে, ‘ব্রিটিশ পক্ষ আইনগত সত্য বিকৃত করছে এবং জনগণকে বিভ্রান্ত করছে। চীনা বাহিনী সবসময় সতর্ক অবস্থানে রয়েছে এবং যেকোনো হুমকি ও উসকানির জবাব দিতে প্রস্তুত।’

এর আগে, ২০২১ সালে সর্বশেষ একটি ব্রিটিশ যুদ্ধজাহাজ এই পথ ব্যবহার করেছিল, যখন এইচএমএস রিচমন্ড ভিয়েতনাম যাওয়ার পথে পূর্ব চীন সাগরে মোতায়েন ছিল।

তাইওয়ান ও চীনের মধ্যে এই জলপথ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছে। চীন তাইওয়ানকে নিজেদের বিচ্ছিন্ন একটি প্রদেশ হিসেবে দেখে ও প্রয়োজনে শক্তি প্রয়োগ করে একত্রিত করার হুমকি দেয়। অন্যদিকে, তাইওয়ান, যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমা মিত্ররা এই প্রণালীকে আন্তর্জাতিক জলপথ হিসেবে গণ্য করে।

যুক্তরাষ্ট্রের নৌবাহিনী সাধারণত প্রতি দুই মাসে একবার এই প্রণালী ব্যবহার করে, অনেক সময় মিত্র দেশগুলোর যুদ্ধজাহাজ তাদের সঙ্গে থাকে।

এইচএমএস স্পে’র যাত্রাকে স্বাগত জানিয়েছে তাইওয়ান। তাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘তাইওয়ান প্রণালীতে নৌ চলাচলের স্বাধীনতা রক্ষায় যুক্তরাজ্যের দৃঢ় অবস্থানকে আমরা সাধুবাদ জানাই।’

সম্প্রতি চীন এই অঞ্চলে একাধিক সামরিক মহড়া চালিয়েছে। গত অক্টোবরেও বড় পরিসরে সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও রকেট বাহিনী নিয়ে মহড়া চালানো হয়, যা তাইওয়ানের স্বাধীনতাপন্থীদের জন্য ‘কঠোর সতর্কবার্তা’ বলে উল্লেখ করেছে বেইজিং।

এদিকে, বৃহস্পতিবার তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট লাই চিং-তে চীনের সামরিক তৎপরতা বৃদ্ধির পর নিরাপত্তা বাহিনীকে নজরদারি ও গোয়েন্দা কার্যক্রম আরও জোরদার করার নির্দেশ দিয়েছেন।

তাইওয়ানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় দ্বীপের আশেপাশে চীনা সেনাবাহিনীর তৎপরতা বেড়েছে। এর মধ্যে ৫০টি বিমান তাইওয়ান প্রণালী এবং দক্ষিণ চীন সাগরের উপরে গমন করেছে।

তথ্যসূত্র: স্কাই নিউজ