ইতালির বিশ্বখ্যাত ফ্যাশন ডিজাইনার জর্জিও আরমানি আর নেই। বৃহস্পতিবার আরমানি গ্রুপের বরাত দিয়ে সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ খবর জানিয়েছে। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৯১ বছর। পোশাকে আধুনিক রূপ এনে আন্তর্জাতিক ফ্যাশনে বিপ্লব ঘটান আরমানি। তার হাতে গড়া ব্র্যান্ড আরমানি শুধু পোশাকেই সীমাবদ্ধ ছিল না; সুগন্ধি, সংগীত, ক্রীড়া থেকে শুরু করে বিলাসবহুল হোটেল পর্যন্ত বিস্তৃত হয়ে বছরে ২ বিলিয়ন পাউন্ডেরও বেশি আয় করত।
জর্জিও আরমানি ছিলেন রেড-কার্পেট ফ্যাশনের পথিকৃৎ এবং প্রথম ডিজাইনার যিনি অতিরিক্ত শীর্ণকায় মডেলদের র্যাম্পে নিষিদ্ধ করেছিলেন।
প্রথমে চিকিৎসাশাস্ত্রে ক্যারিয়ার শুরু করলেও ১৯৬০-এর দশকে ফ্যাশনে প্রবেশ করেন আরমানি। ১৯৭৫ সালে প্রয়াত সঙ্গী সার্জিও গ্যালিওটির সঙ্গে মিলে প্রতিষ্ঠা করেন নিজের বিলাসবহুল ব্র্যান্ড। ১৯৮০-এর দশকে নারীদের স্যুটকে সামাজিক বিপ্লবের অংশ হিসেবে রূপ দেন। আবার পুরুষদের পোশাকে প্রচলিত কাঠামো ভেঙে আনেন নতুন মাত্রা। হলিউড তারকাদের রেড-কার্পেটে সাজিয়েছেন তিনি। জেন্ডায়া, কেট ব্ল্যানচেট, জুলিয়া রবার্টস ছিলেন তার ডিজাইনের মডেল।
লেডি গাগার স্টেজ কস্টিউম এবং ‘আমেরিকান জিগোলো’ ও ‘দ্য ওলফ অব ওয়াল স্ট্রিট’ চলচ্চিত্রের পোশাকও তৈরি করেছিলেন তিনি।
আরমানি ইন্টার মিলান ফুটবল ক্লাবের সমর্থক ছিলেন এবং ছিলেন অলিম্পিয়া মিলানো বাস্কেটবল দলের মালিক। ফর্মুলা ওয়ান টিম ফেরারির সঙ্গেও ছিল আরমানি ব্র্যান্ডের অংশীদারিত্ব।
অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ তিনি ফ্রান্সের লিজিয়ন অব অনার এবং ইতালীয় অর্ডার অব মেরিট ফর লেবার–এ ভূষিত হন।
ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি বলেছেন, ‘সৌন্দর্য, সৃজনশীলতা ও পরিশ্রমের মধ্যদিয়ে তিনি ইতালীয় ফ্যাশনকে বিশ্বজুড়ে গৌরবান্বিত করেছেন। তিনি ইতালির সেরা প্রতীক।’
অভিনেতা রাসেল ক্রো আরমানিকে ‘বিশ্বজুড়ে স্বীকৃত এক মহীরুহ’ আখ্যা দিয়ে বলেছেন, ‘তিনি আমার জীবনের অনেক গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে পাশে ছিলেন।’
অভিনেত্রী জুলিয়া রবার্টস ইনস্টাগ্রামে একটি ছবি পোস্ট করে লিখেছেন, ‘একজন সত্যিকারের বন্ধু, এক কিংবদন্তি।’
ফ্যাশন সমালোচকরা একমত, আরমানির উত্তরাধিকার শুধু অতীত ও বর্তমানেই সীমাবদ্ধ নয়, বরং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের ফ্যাশন জগৎকেও প্রভাবিত করবে।
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন