ইউক্রেন এক রাতে রাশিয়ার ওপর ব্যাপক ড্রোন হামলা চালিয়েছে। রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের দাবি, অন্তত ৩৬১টি ড্রোন ভূপাতিত করা হয়েছে। এর মধ্যে চারটি নির্দেশিত আকাশ বোমা এবং একটি মার্কিন তৈরি হিমার্স ক্ষেপণাস্ত্রও রয়েছে।
রয়টার্স জানিয়েছে, এ হামলায় উত্তর-পশ্চিম রাশিয়ার কিরিশি তেল শোধনাগারে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। তবে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে এবং হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। দেশটির সবচেয় বড় তেল শোধনাগার এটি।
লেনিনগ্রাদ অঞ্চলের গভর্নর আলেকজান্ডার দ্রোজডেনকো জানান, কিরিশি এলাকায় তিনটি ড্রোন ধ্বংস করা হয়েছে। ধ্বংসাবশেষ পড়ে যে আগুন লাগে, তা দ্রুত নিভিয়ে ফেলা হয়েছে।
ইউক্রেনের ড্রোন কমান্ড শোধনাগারে হামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে জানিয়েছে, তারা সফল অভিযান পরিচালনা করেছে। কিরিশি রিফাইনারি রাশিয়ার অন্যতম বড় শোধনাগার, যেখানে প্রতিবছর প্রায় ১৭ দশমিক ৭ মিলিয়ন মেট্রিক টন অপরিশোধিত তেল প্রক্রিয়াজাত করা হয়। এটি দেশের মোট তেল প্রক্রিয়াজাতের প্রায় ৬ দশমিক ৪ শতাংশ।
এদিকে রাশিয়া জানিয়েছে, বেলারুশের সঙ্গে যৌথ মহড়ার অংশ হিসেবে তারা বারেন্টস সাগরে একটি জিরকন হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ করেছে। এ ছাড়া সু-৩৪ যুদ্ধবিমান থেকে বোমা হামলারও কথা জানানো হয়েছে।
সাম্প্রতিক সময়ে ইউক্রেনের ড্রোন হামলা তীব্র আকার ধারণ করেছে। এমনকি ন্যাটো সদস্য দেশ পোল্যান্ডের আকাশে রাশিয়ান ড্রোন ভূপাতিত হওয়ার ঘটনাও ঘটেছে।
যুক্তরাষ্ট্র রাশিয়ার ওপর নতুন করে জ্বালানি নিষেধাজ্ঞা আরোপের হুমকি দিয়েছে। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, এই নিষেধাজ্ঞা তখনই কার্যকর হবে, যখন সব ন্যাটো দেশ রাশিয়ার তেল কেনা বন্ধ করবে। তবে ইউরোপীয় ইউনিয়ন জানিয়েছে, তারা ২০২৮ সালের মধ্যে ধাপে ধাপে রাশিয়ার তেল ও গ্যাস আমদানি বন্ধ করবে।
শনিবারের এই হামলার পরও রাশিয়ার বাশকোর্তোস্তান অঞ্চলের একটি তেল কোম্পানি উৎপাদন অব্যাহত রাখবে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। এই ঘটনাকে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ইউরোপের সবচেয়ে মারাত্মক সংঘাতের প্রেক্ষাপটে নতুন করে উত্তেজনা সৃষ্টিকারী হিসেবে দেখা হচ্ছে।