ফ্রান্সের সাবেক প্রেসিডেন্ট নিকোলা সারকোজি অবশেষে কারাগারে গেছেন। লিবিয়ার প্রয়াত স্বৈরশাসক মুয়াম্মার গাদ্দাফির কাছ থেকে বেআইনি অর্থ নিয়ে নির্বাচনী প্রচারণা চালানোর ষড়যন্ত্রে জড়িত থাকার অভিযোগে তিনি পাঁচ বছরের কারাদণ্ড পেয়েছেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ-পরবর্তী সময়ে এই প্রথমবারের মতো কোনো ফরাসি সাবেক রাষ্ট্রপ্রধান কারাবন্দি হলেন।
মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে বিবিসি জানিয়েছে, ৭০ বছর বয়সী সারকোজি সোমবার স্থানীয় সময় সকাল ৯টা ৪০ মিনিটে প্যারিসের দক্ষিণে মঁপর্নাস এলাকার কুখ্যাত লা সঁতে কারাগারে প্রবেশ করেন। কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে তাকে একাকী সেলে রাখা হয়েছে যেখানে রয়েছে একটি বিছানা টয়লেট ছোট টেলিভিশন ডেস্ক এবং শাওয়ারের ব্যবস্থা।
কারাগারে যাওয়ার আগে সোশ্যাল মিডিয়া এক্সে তিনি লেখেন, আমার কোনো সন্দেহ নেই সত্যের জয় একদিন হবেই কিন্তু তার জন্য যে মূল্য দিতে হচ্ছে তা ভীষণ বেদনাদায়ক। আজ সকালে তারা কোনো সাবেক প্রেসিডেন্টকে নয় নির্দোষ মানুষকে বন্দী করছে। আমার জন্য দুঃখ করবেন না আমার স্ত্রী ও সন্তানরা আমার পাশে আছেন। তবে আজ ফ্রান্সের জন্য আমি গভীর দুঃখ অনুভব করছি কারণ এটি প্রতিহিংসাপরায়ণ একটি সিদ্ধান্ত।
সারকোজির ছেলেরা লুই ও পিয়ের সামাজিক মাধ্যমে তার সমর্থনে আহ্বান জানান। তার প্যারিসের ভিলার সামনে সমর্থকদের ভিড় জমে।সারকোজি জানিয়েছেন, তিনি কোনো বিশেষ সুবিধা চান না তবে নিরাপত্তাজনিত কারণে তাকে জেলের আলাদা অংশে রাখা হয়েছে। যেখানে সাধারণত মাদক চোরাচালান বা সন্ত্রাসবাদে দণ্ডিত কয়েদিদের রাখা হয়। প্রতিদিন তাকে এক ঘণ্টার ব্যায়ামের সুযোগ দেওয়া হবে।
সারকোজি সবসময়ই অভিযোগ অস্বীকার করে আসছেন তার দাবি ২০০৭ সালের নির্বাচনে লিবিয়া থেকে কোনো অর্থ তিনি পাননি। তবে তদন্তে প্রমাণ মেলে যে, তার দুই ঘনিষ্ঠ সহযোগী ব্রিস হোর্তেফো ও ক্লোদ গ্যুয়াঁ গাদ্দাফির গোয়েন্দাপ্রধানের সঙ্গে গোপনে সাক্ষাৎ করেছিলেন। এই বৈঠকের আয়োজন করেন ফ্রাঙ্কো লেবানিজ মধ্যস্থতাকারী জিয়াদ তাকেদ্দিন, যিনি সারকোজির রায় ঘোষণার আগেই লেবাননে মারা যান।
রায়ের আগের সপ্তাহে তিনি বর্তমান প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁর সঙ্গে এলিসি প্রাসাদে দেখা করেন। পরে ম্যাক্রোঁ বলেন, মানবিক দিক থেকে এটি স্বাভাবিক আমি আমার এক পূর্বসূরির সাথে দেখা করেছি।
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন