পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা মুহাম্মদ আসিফ বলেছেন, আফগানিস্তানের সঙ্গে স্বাক্ষরিত নাজুক যুদ্ধবিরতি চুক্তির স্থায়িত্ব নির্ভর করছে দেশটি সীমান্তপথে সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর অনুপ্রবেশ ও হামলা বন্ধ করতে পারে কি না- তার ওপর। সোমবার (২০ অক্টোবর) বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে আসিফ বলেন, ‘এই একটি শর্তের ওপরই সবকিছু নির্ভর করছে।’
এক সপ্তাহ ধরে সীমান্তে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের পর কাতার ও তুরস্কের মধ্যস্থতায় পাকিস্তান এবং আফগানিস্তানের মধ্যে এই যুদ্ধবিরতি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।
২০২১ সালে তালেবান ক্ষমতায় ফেরার পর থেকে দুই দেশের সম্পর্কের অবনতি ঘটতে থাকে। ইসলামাবাদের দাবি ছিল, কাবুলের কাছে তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তানের (টিটিপি) যোদ্ধাদের নিয়ন্ত্রণ করা, যারা আফগানিস্তানে নিরাপদ আশ্রয়ে থেকে কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ তোলা হয়েছে।
পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা মুহাম্মদ আসিফ, যিনি আফগানিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী মোল্লা মোহাম্মদ ইয়াকুবের সঙ্গে আলোচনায় নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। তিনি বলেন, লিখিত চুক্তিতে পরিষ্কারভাবে উল্লেখ করা হয়েছে যে, সীমান্তে কোনো ধরনের অনুপ্রবেশ ঘটতে দেওয়া হবে না।
তিনি হুঁশিয়ারি দেন যে, আফগানিস্তান থেকে আসা যেকোনো হুমকি এই চুক্তির লঙ্ঘন বলে গণ্য হবে। আসিফ আরও অভিযোগ তুলে বলেন, টিটিপি আফগানিস্তানের ক্ষমতাসীন তালেবানের ‘যোগসাজশে’ কাজ করছে, যদিও তালেবান এ অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
অন্যদিকে, আফগানিস্তান পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর ওপর পাল্টা অভিযোগ তুলে দাবি করেছে যে, তারা দেশটির স্থিতিশীলতা ও সার্বভৌমত্ব নষ্ট করতে ভুল তথ্য ছড়াচ্ছে এবং আইএসআইএল (আইএসআইএস)–সংশ্লিষ্ট যোদ্ধাদের আশ্রয় দিচ্ছে।
তালেবানের মুখপাত্র জাবিউল্লাহ মুজাহিদ বলেন, চুক্তির শর্তানুযায়ী কোনো দেশই একে অপরের বিরুদ্ধে বৈরী কার্যক্রম চালাবে না কিংবা পাকিস্তান সরকারের বিরুদ্ধে হামলা চালানো গোষ্ঠীগুলোকে সমর্থনও দেবে না। তিনি নিশ্চিত করেন যে, উভয় দেশ একে অপরের নিরাপত্তা বাহিনী, বেসামরিক জনগণ বা গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোকে লক্ষ্যবস্তু করা থেকে বিরত থাকতে সম্মত হয়েছে।
উল্লেখ্য, পাকিস্তান তালেবান (টিটিপি) বছরের পর বছর ধরে ইসলামাবাদের সরকার উৎখাতের লক্ষ্যে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালিয়ে আসছে এবং কয়েক মাস ধরে তারা পাকিস্তানের সেনাবাহিনীকে লক্ষ্য করে হামলা বাড়িয়ে দিয়েছে।
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন