ভারতের জম্মু-কাশ্মীর, পাঞ্জাব, রাজস্থান ও গুজরাটে পাকিস্তানের একাধিক হামলা বৃহস্পতিবার রাতে প্রতিহত করার দাবি করেছে নয়াদিল্লি। এছাড়াও সীমান্তবর্তী পশ্চিমাঞ্চলে ব্যাপক ব্ল্যাকআউট কার্যকর করা হয়েছে। এর আগে, ভারত স্পষ্টভাবে হুঁশিয়ারি দেওয়ার পরই ইসলামাবাদের সঙ্গে উত্তেজনা আরও তুঙ্গে।
অসমর্থিত প্রতিবেদনে জানা গেছে, ভারতীয় বাহিনী অন্তত একটি পাকিস্তানি এফ-১৬ বিমান ভূপাতিত করেছে এবং একজন পাইলটকে আটক করেছে। একইসঙ্গে, সন্ধ্যায় আরও অসমর্থিত সূত্রে বলা হয়েছে, পাকিস্তানের শিয়ালকোট, লাহোর ও সম্ভবত ইসলামাবাদের সামরিক ঘাঁটিগুলোকে লক্ষ্য করে ভারত ড্রোন হামলা চালাচ্ছে।
বৃহস্পতিবার (৯ মে) যে ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা হয় তা ছিল গত রাতের মধ্যে পাকিস্তানের ১৫টি হামলা প্রতিহত করার পরের ঘটনা। এবং তা গত কয়েক দশকে দুই পরমাণু শক্তিধর দেশের মধ্যে সবচেয়ে গুরুতর সংঘর্ষে পরিণত হয়েছে। এর ঠিক একদিন আগেই ভারত ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর মাধ্যমে পাকিস্তান ও পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীরের নয়টি ‘সন্ত্রাসী’ ঘাঁটিতে হামলা চালিয়েছিল।
প্রতিরক্ষা কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, জম্মুর শাটওয়ারি, শাম্বা, আরএস পুরা ও আর্নিয়ায় পাকিস্তানের ছোড়া আটটি ক্ষেপণাস্ত্র ভারতের এস-৪০০ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা দ্বারা প্রতিহত করা হয়েছে। ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা জম্মু, পাঠানকোট, উধমপুর ও জলন্ধরের সামরিক ঘাঁটিগুলিতে হয়েছে, যেগুলো আন্তর্জাতিক সীমান্তের কাছাকাছি।
প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র লেফটেন্যান্ট কর্নেল সুনীল বার্তওয়াল বলেন, ‘আজ জম্মু, পাঠানকোট ও উধমপুরের সামরিক ঘাঁটিগুলোকে পাকিস্তানি ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র দ্বারা লক্ষ্য করা হয়েছিল। এই হুমকিগুলোকে আমরা দ্রুত প্রতিহত করেছি কাইনেটিক এবং নন-কাইনেটিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে, যা প্রতিষ্ঠিত স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রোটোকল অনুযায়ী পরিচালিত হয়েছে। কোনো প্রাণহানি বা ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি।’
তিনি বলেন, ‘ভারত তার সার্বভৌমত্ব রক্ষায় ও জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সম্পূর্ণ প্রস্তুত।’
দ্য হিন্দুস্তান টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বৃহস্পতিবার রাতে জয়সালমেরে একাধিক ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন ধ্বংস করা হয় এবং কচ্ছ অঞ্চলে কমপক্ষে তিনটি ড্রোন প্রতিহত করা হয়েছে। প্রতিবেদন প্রকাশ হওয়ার সময় পর্যন্ত কোনো বেসামরিক বা সামরিক হতাহতের নিশ্চিত তথ্য মেলেনি।
জম্মু থেকে জয়সালমের এবং অমৃতসর থেকে চণ্ডীগড় পর্যন্ত বিস্তৃত বহু শহর ও গ্রামে এয়ার রেইড সাইরেন বাজানো হয় ও ব্ল্যাকআউট কার্যকর করা হয়। সীমান্তবর্তী এলাকাগুলোর স্কুলগুলোও বন্ধ রাখা হয়। রাতের আকাশে সোনালি রেখার মতো ডিফেন্স সিস্টেমের প্রতিক্রিয়া ও বিকট শব্দে হামলা প্রতিহত করার চিত্র ক্যামেরাবন্দি হয়েছে।
ভারতীয় সেনাবাহিনী জানায়, তারা উত্তর ও পশ্চিম ভারতের ১৫টি শহরে পাকিস্তানের ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলার প্রচেষ্টা ব্যর্থ করেছে এবং পাল্টা হামলায় পাকিস্তানের একাধিক স্থানে এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম লক্ষ্য করে আঘাত হেনেছে, যার মধ্যে লাহোরের একটি প্রতিরক্ষা ঘাঁটি ধ্বংস করা হয়েছে।
আপনার মতামত লিখুন :