সর্বত্র টাক মাথায় চুল গজানোর বিজ্ঞাপনের ছড়াছড়ি, আর সেই ফাঁদে পা দিয়ে অনেকেই ঝুঁকছেন হেয়ার ট্রান্সপ্লান্ট সার্জারির দিকে। কিন্তু সেই প্রতিষ্ঠান বা সার্জারির মান নিয়ে বাছবিচার না করায় ঘটতে পারে মর্মান্তিক পরিণতি। সম্প্রতি ভারতের উত্তরপ্রদেশের কানপুরের ঘটনা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল এই ভয়াবহ সত্য।
সংবাদ প্রতিবেদনের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, চুল প্রতিস্থাপনের ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে দুই প্রকৌশলী বিনীত কুমার দুবে এবং প্রমোদ কাটিয়ারের মৃত্যু হয়েছে। যদিও এ ঘটনায় অভিযুক্ত দাঁতের চিকিৎসক অনুষ্কা তিওয়ারি পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করেছেন। এই ঘটনা প্রশ্ন তুলেছে হেয়ার ট্রান্সপ্লান্ট সার্জারির সুরক্ষা ও বাণিজ্যিকীকরণ নিয়ে।
বিনীত কুমার দুবের স্ত্রী জয়া ত্রিপাঠী গত ৯ মে থানায় অভিযোগ করেন। তিনি জানান, তার স্বামীর অস্ত্রোপচার হয় ১৩ মার্চ এবং ১৫ মার্চ অন্য একটি হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়।
পরিবারের অভিযোগ, চিকিৎসক অনুষ্কা জানতেন বিনীতের হাইপারটেনশন ও ডায়াবেটিসের মতো গুরুতর অসুস্থতা ছিল, কিন্তু তিনি তা উপেক্ষা করেন। ফলস্বরূপ, অস্ত্রোপচারের পরপরই বিনীত অসুস্থ হয়ে পড়েন। যে চিকিৎসক বিনীতের চিকিৎসা করেছিলেন, তার দাবি, বিনীতের মস্তিষ্কে ফোলাভাব এবং সংক্রমণের চিহ্ন ছিল।
জয়া ত্রিপাঠী আরও অভিযোগ করেন, শুরুতে পুলিশ বিষয়টি গুরুত্ব দেয়নি, পরে মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপে অভিযোগ দায়ের হয়।
সোমবার (২৬ মে) সরকারি আইনজীবী দিলীপ সিং জানান, অনুষ্কা তিওয়ারির বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ রয়েছে। একজন দাঁতের চিকিৎসক হয়েও তিনি চুল প্রতিস্থাপনের মতো অস্ত্রোপচার করেছেন, যার পর্যাপ্ত প্রমাণ তাদের কাছে আছে। কাকাদেব থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে এবং প্রাথমিকভাবে অনুষ্কা তিওয়ারি দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন। আত্মসমর্পণের পর তাকে জেলে পাঠানো হয়েছে।
তদন্তে নেমে পুলিশ অভিযুক্ত চিকিৎসক অনুষ্কা তিওয়ারির বিরুদ্ধে বহু অসঙ্গতি খুঁজে পেয়েছে। যেমন, অস্ত্রোপচারের আগে তিনি কোনো প্রয়োজনীয় পরীক্ষা করাননি। চিকিৎসার পর বিনীতের মাথায় ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ হয়েছিল বলেও দেখা গেছে। তদন্তকারীরা পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখছেন।
আপনার মতামত লিখুন :