সোমবার, ১৬ জুন, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


রূপালী ডেস্ক

প্রকাশিত: জুন ১৬, ২০২৫, ১২:২২ পিএম

ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধে কাকে সমর্থন দিচ্ছে ভারত?

রূপালী ডেস্ক

প্রকাশিত: জুন ১৬, ২০২৫, ১২:২২ পিএম

চিন্তিত ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ছবি- রূপালী বাংলাদেশ গ্রাফিক্স

চিন্তিত ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ছবি- রূপালী বাংলাদেশ গ্রাফিক্স

ইসরায়েলের ‘অপারেশন রাইজিং লায়ন’ নামে চালানো আকস্মিক হামলার পর ইরানের পক্ষে প্রকাশ্য অবস্থান নিয়েছে একাধিক প্রভাবশালী দেশ। ১৩ জুনের  এই হামলার পর বিভিন্ন দেশ এই হামলাকে আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন ও ইরানের সার্বভৌমত্বে আঘাত বলে আখ্যা দেয়। কিন্তু ইরানের সঙ্গে কৌশলগত ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক থাকার পরও তেহরানের পাশে দাঁড়ায়নি  ভারত।

জানা গেছে, ভারতের সঙ্গে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা সম্পর্ক ক্রমশ গভীর হয়েছে। বর্তমানে ইসরায়েল ভারতের অন্যতম শীর্ষ প্রতিরক্ষা সামগ্রী সরবরাহকারী দেশ। ইসরায়েল থেকে ভারত ড্রোন, রাডার সিস্টেম এবং বারাক-৮ এর মতো ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা প্রযুক্তি পেয়ে থাকে। এ ছাড়া, দুই দেশ সন্ত্রাস দমন, যৌথ সামরিক মহড়া এবং প্রতিরক্ষা উদ্ভাবনে একসঙ্গে কাজ করে। এ কারণে ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা কাঠামোর মধ্যে ইসরায়েল একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার হিসেবে বিবেচিত।

অন্যদিকে, ভারতের জ্বালানি ও বাণিজ্য সুরক্ষায় ইরানের ভূমিকা অপরিসীম। ভারতের বিনিয়োগে গড়ে ওঠা চাবাহার বন্দর আফগানিস্তান ও মধ্য এশিয়ার সঙ্গে বাণিজ্যের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ সংযোগস্থল, যা পাকিস্তানকে এড়িয়ে চলার সুযোগ করে দেয়। যদিও দুই দেশের মধ্যে সরাসরি সামরিক সহযোগিতা সীমিত, তবুও ভারত ও ইরান আঞ্চলিক সমুদ্র নিরাপত্তা এবং জলদস্যুবিরোধী অভিযানে যৌথভাবে কাজ করেছে।

সর্বশেষ, ভারত সাংহাই সহযোগিতা সংস্থা (এসসিও) ইসরায়েলি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে যে নিন্দা প্রস্তাব এনেছে তাতে সমর্থন দেওয়া থেকে বিরত থেকেছে। ফলে, ভারত প্রকাশ্যভাবে ইরানকে সমর্থন না দিলেও, এসসিও-এর নিন্দা প্রস্তাব থেকে নিজেকে সরিয়ে নেওয়ায় ইসরায়েলি হামলার নিন্দা জানানোর ক্ষেত্রে সংস্থাটির প্রভাব কমে গেছে।

দিল্লিভিত্তিক থিংক ট্যাংক অবজারভার রিসার্চ ফাউন্ডেশনের স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ প্রোগ্রামের ডেপুটি ডিরেক্টর কবির তানেজার মতে, এটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ভারতের সুসম্পর্ক বজায় রাখার আকাঙ্ক্ষা দিয়ে প্রভাবিত হতে পারে।

তানেজার বলেন, ভারত ওয়াশিংটনের সঙ্গে একটি বাণিজ্য চুক্তির কাছাকাছি। জুলাইয়ের শুরুতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ২৭ শতাংশ শুল্ক তুলে নেওয়ার হুমকির আগেই ভারত এই চুক্তিটি সম্পন্ন করতে চাচ্ছে।

তিনি বলেন, জাতীয় স্বার্থ ছাড়াও ইসরায়েল-ইরান উত্তেজনা নিয়ে এসসিও থেকে ভারতের এই সরে আসা ‘এসসিও-এর গাঠনিক কাঠামোতে টানাপোড়েনকেই প্রতিফলিত করে, এই সংগঠনে ভারত কিছুটা অনাহূত।’

তানেজা বলেন, চীন ও রাশিয়া ইরানের ঘনিষ্ঠ হলেও, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের সঙ্গে ভারতের সম্পর্কের কারণে ‘এসসিও-এর নির্দিষ্ট শব্দ এবং বিবৃতিতে ভারতের স্বাক্ষর করা খুবই কঠিন হতো।’

এদিকে, সৌদি আরব হামলাকে ইরানের সার্বভৌমত্ব ও আন্তর্জাতিক আইন-নীতিমালার ‘সুস্পষ্ট লঙ্ঘন’ বলে উল্লেখ করে জানায়, এই ধরনের পদক্ষেপ গোটা অঞ্চলের জন্য বিপজ্জনক হতে পারে। সংযমের আহ্বান জানিয়ে দেশটি আঞ্চলিক উত্তেজনা না বাড়ানোর অনুরোধ জানায়।

জর্ডানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র সুফিয়ান কুদাহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উদ্দেশে আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘ইসরায়েলের গাজা, পশ্চিম তীর ও লেবাননে চলমান আগ্রাসন অবিলম্বে বন্ধে পদক্ষেপ নেওয়ার মাধ্যমে আঞ্চলিক উত্তেজনা প্রশমনের পথে প্রথম পদক্ষেপ নেওয়া হোক এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় তাদের দায়িত্ব পালন করুক।’

ওমান চলমান সংঘাতকে ইরানের বিরুদ্ধে সরাসরি আগ্রাসন ও আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন হিসেবে উল্লেখ করে। তারা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে অবিলম্বে হস্তক্ষেপের আহ্বান জানায়।

ইসরায়েলের হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে ইন্দোনেশিয়া। দেশটি শান্তিপূর্ণ উপায়ে আন্তর্জাতিক আইন অনুসারে বিরোধ নিষ্পত্তির ওপর জোর দিয়েছে। একই সঙ্গে এই হামলা আঞ্চলিক স্থিতিশীলতাকে বিপন্ন করতে পারে বলে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। 

কাতার হামলাকে স্পষ্টভাবে ইরানের সার্বভৌমত্বে হস্তক্ষেপ এবং আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন হিসেবে উল্লেখ করে। তারা রাজনৈতিক সংলাপ ও সংযমের আহ্বান জানায়।

কাতারের প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ বিন আব্দুল রহমান আল থানি বলেন, ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে যে কোনো আক্রমণের ফলে সমগ্র অঞ্চলের জন্য বিপর্যয়কর পরিণতি হবে।

সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই) ইরানের ওপর চালানো সামরিক আঘাতের কড়া নিন্দা জানায় এবং এটিকে গোটা অঞ্চলের নিরাপত্তার জন্য হুমকি হিসেবে চিহ্নিত করে।

তুরস্ক ইসরায়েলের হামলাকে ‘সন্ত্রাস’ হিসেবে অভিহিত করে এবং বলে এই হামলা গোটা অঞ্চলকে বড় যুদ্ধে ঠেলে দিতে পারে।

পাকিস্তানের প্রতিক্রিয়া জানিয়ে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলে, এই হামলা আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতিশীলতাকে বিঘ্নিত করে এবং জাতিসংঘের উচিত ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া।

মিশর জানায়, তারা এই ঘটনার জন্য গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছে এবং যেকোনো পদক্ষেপ যা আঞ্চলিক নিরাপত্তাকে হুমকির মুখে ফেলে তা তারা নিন্দা করে।

বাহরাইন এই সামরিক অভিযানে ‘গভীর উদ্বেগ’ প্রকাশ করে সকল পক্ষকে সংযমের অনুরোধ জানিয়েছে।

সিরিয়া সরাসরি ইরানের পাশে দাঁড়িয়ে ‘সম্পূর্ণ সংহতি’ প্রকাশ করে এবং বলে, ‘ইরানের নিজ ভূখণ্ড রক্ষা করার অধিকার রয়েছে।’

ইরাক এই অতর্কিত হামলাকে তীব্রভাবে নিন্দা জানিয়ে বলে, ইসরায়েল এই হামলার মাধ্যমে অঞ্চলজুড়ে সংঘাত আরও বাড়িয়ে তুলছে এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের নীরবতা এতে নেতিবাচক ভূমিকা রাখছে।

কুয়েত এই আগ্রাসনকে ‘অরাজক নীতি’ হিসেবে উল্লেখ করে এবং জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদকে দ্রুত হস্তক্ষেপের আহ্বান জানায়।

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!